মাদ্রিদ ডার্বি মানেই উত্তেজনা, গ্যালারিভর্তি আবেগ আর মাঠে দমবন্ধ করা লড়াই। তবে শনিবারের ডার্বি যেন ফিরিয়ে নিয়ে গেল ৫০-এর দশকের অ্যাথলেটিকোকে—যেখানে প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতেই দেওয়া হলো না। কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আরদা গুলারের জোড়া আঘাত সামলেই অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ঘুরে দাঁড়ায় দুর্দান্তভাবে। আলভারেজের ডাবল, সোরলথের হেড আর গ্রিজম্যানের শেষ মুহূর্তের গোল মেট্রোপলিটানোকে পরিণত করে উন্মাদের মিছিলে। ফলাফল—অ্যাথলেটিকো ৫, রিয়াল মাদ্রিদ ২।
ডিয়েগো সিমিওনে চমক রেখে সোরলথকে একাদশে নামান। মাঠে নেমেই নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার অ্যাথলেটিকোর আক্রমণে ধার বাড়ান। ম্যাচে প্রথম আঘাত হানে স্বাগতিকরাই। ডিফেন্ডার লি নরমাদের গোলে লিড নেয় তারা তবে ২৫ মিনিটে এমবাপ্পের গোল রিয়াল সমতায় ফেরে। অ্যাথলেটিকোর তীব্র চাপ অবশ্য গোল হজমের পরও কমেনি। বরং বারবার উড়ে আসতে থাকে ক্রস, যার মোকাবিলায় রিয়ালের রক্ষণ দাঁড়াতে পারেনি।
প্রথমে এমবাপ্পে আর পরে গুলারের গোলে ১-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় রিয়াল। মনে হচ্ছিল খেলার মোড় ঘুরতে শুরু করেছে। কিন্তু বিরতির আগেই সোরলথের হেডে আবার সমতায় ফেরে অ্যাথলেটিকো। বিরতির পর শুরু হয় অ্যাথলেটিকোর ‘পূর্ণ আধিপত্যের’ গল্প।
দ্বিতীয়ার্ধে নিকো গনসালেসকে ফাউল করে গুলারের ভুলে পেনাল্টি পায় অ্যাথলেটিকো। সেখান থেকে নিশ্চিত গোল করেন জুলিয়ান আলভারেজ। এর পরেই ফ্রি-কিক থেকে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড অসাধারণ শটে করেন নিজের দ্বিতীয় গোল, অ্যাথলেটিকোর চতুর্থ।
শেষ মুহূর্তে ভ্যালভার্দের মারাত্মক ভুলে বল কেড়ে নিয়ে সুযোগ তৈরি হয় অ্যাথলেটিকোর। বদলি খেলোয়াড় বাইয়েনা বাড়িয়ে দেন বল, আর গ্রিজম্যান নিশ্চিত করেন এক ঐতিহাসিক ৫-২ জয়।
জাবি আলোনসোর রিয়াল যেন এই ম্যাচে ছিল ছায়াময় এক দল। না ছিল আগ্রাসন, না ছিল শৃঙ্খলা। ক্রস আটকাতে ব্যর্থতা, রক্ষণে অস্থিরতা আর আক্রমণে ধারহীনতা—সব মিলিয়ে সাদা শিবিরকে দিল অপমানজনক এক সন্ধ্যা।
এই জয়ে চতুর্থ স্থানে উঠে এল অ্যাথলেটিকো। সোরলথ, আলভারেজ ও গ্রিজম্যানের ত্রিমুখী আক্রমণে তারা শুধু ম্যাচ জেতেনি, বরং বার্তা দিয়ে রেখেছে—লা লিগার শিরোপা দৌড়ে তারাও থাকছে।
মেট্রোপলিটানোর গ্যালারি বলছে, এ এক রাত যা লাল-সাদা সমর্থকরা বহু বছর মনে রাখবে। আর রিয়ালের জন্য, প্রথম বড় পরীক্ষায় ভয়াবহ ব্যর্থতা।
মন্তব্য করুন