স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৫৮ এএম
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৩৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ

শেষ বাঁশির পর বার্নাব্যুতে বিশৃঙ্খলা, বার্সা-রিয়ালের সংঘর্ষে পুলিশের হস্তক্ষেপ

ম্যাচ শেষে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখা যায় বার্নাব্যুতে। ছবি : সংগৃহীত
ম্যাচ শেষে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখা যায় বার্নাব্যুতে। ছবি : সংগৃহীত

রোববার (২৬ অক্টোবর) বার্নাব্যুর আলো নিভে যাওয়ার আগেই ক্ল্যাসিকোর উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছিল গ্যালারি থেকে মাঠে। শেষ বাঁশির পর ম্যাচ নয়, শুরু হয় এক ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা—যে দৃশ্য ফুটবলপ্রেমীদের মনে করিয়ে দিল ২০১০ সালের সেই কুখ্যাত এল ক্ল্যাসিকোকে। মাঠে নামতে হলো পুলিশকে, আলাদা করতে হলো দুই দলকে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় রিয়াল মাদ্রিদের দানি কারভাহাল লামিন ইয়ামালকে তিরস্কার করায়। হাত মেলানোর মুহূর্তেই তিনি ‘তুমি অনেক কথা বলো’ ইঙ্গিত করলে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটে যায় মাঠে।

দুই দলের খেলোয়াড়েরা ধাক্কাধাক্কি, চিৎকার-চেঁচামেচি, এমনকি মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই এক ঐতিহাসিক, অথচ লজ্জাজনক দৃশ্যের জন্ম হয়—পুলিশ দৌড়ে এসে খেলোয়াড়দের আলাদা করছে, কোচিং স্টাফরা তাদের টেনে সরাচ্ছেন। কোর্তোয়া এগিয়ে গিয়ে ইয়ামালকে কঠিন ভাষায় সতর্ক করেন তার আগের মন্তব্য নিয়ে, আর সেখানেই আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

ইয়ামাল পাল্টা জবাবে বলে ওঠেন, ‘চলুন, টানেলে দেখা হবে।’ ঠিক তখনই, যেন আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়লেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।

পুরো ঘটনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন তিনিই। ম্যাচের মাঝখানে বদলি হয়ে সরাসরি ড্রেসিংরুমে চলে গিয়েছিলেন, কোচ জাবি আলোনসোর সঙ্গে হাত মেলাননি, মুখভঙ্গিতে ছিল ক্ষোভের ছাপ। পরে আবার বেঞ্চে ফিরে এলেও তার আচরণে ছিল ঝড়ের আভাস। শেষ বাঁশির পর বার্সার বেঞ্চ থেকে কিছু মন্তব্য কানে আসতেই নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। চতুর্থ রেফারি তাকে বারবার বলেছিলেন, ‘ভিনি, ঢোকার দরকার নেই।’ কিন্তু সে সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে টানেলের দিকে ছুটে যান তিনি।

সেখানেই শুরু হয় দ্বিতীয় দফার বিশৃঙ্খলা। ইয়ামাল ও রাফিনিয়া (যিনি তখন সাধারণ পোশাকে) তাকে আহ্বান জানালে পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। গোলরক্ষক কোচ লোপিস, তরুণ গুলের, এমনকি কামাভিঙ্গাও ভিনিকে থামানোর চেষ্টা করেন। মাঝখানে দাঁড়িয়ে হতভম্ব ডি ইয়ং—সবকিছু যেন ধীরে ধীরে উন্মত্ততার রূপ নিচ্ছে।

বেলিংহ্যাম পর্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন, তাকেও সতীর্থরা ঠেকিয়ে রাখেন। অবশেষে পুলিশ ও কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে কিছুটা শান্ত হয় পরিবেশ। তবুও রেফারি সোটো গ্রাদোর ম্যাচ রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়, ‘শেষ বাঁশির পর রিয়ালের গোলরক্ষক লুনিন প্রতিপক্ষের বেঞ্চের দিকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে এগিয়ে যান, সতীর্থরা ঠেকিয়ে না রাখলে সংঘর্ষ আরও বাড়ত।’

এই বিশৃঙ্খলায় লাল কার্ড দেখেন লুনিন, আর হলুদ কার্ড দেওয়া হয় মাদ্রিদের মিলিতাও, ভিনিসিয়ুস ও রদ্রিগোকে; অন্যদিকে বার্সার ফারমিন, বালদে ও ফেরান তোরেসও সতর্কবার্তা পান।

সবকিছু থিতিয়ে যাওয়ার পর বার্সেলোনার খেলোয়াড়েরা সোজা টানেলের দিকে চলে যান, মুখ নিচু করে। অন্যদিকে মাদ্রিদের খেলোয়াড়েরা গ্যালারির সামনে উল্লাসে মেতে ওঠেন—গান, স্লোগান, আর ট্রিবিউনের দিকে হাত নাড়ানো।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জামায়াতে যোগদানের কারণ জানালেন সাবেক এমপি আক্তারুজ্জামান

বাংলাদেশ এলডিপির নতুন কমিটি গঠন

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ চালু করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা 

এনসিপি নেতাকে বাঁচাতে গিয়ে ৩ পুলিশ কর্মকর্তা আহত

হাসপাতালে ওসমান হাদি কেমন আছেন, জানাল ইনকিলাব মঞ্চ

আশীর্বাদের নামে অভিনেত্রীর ব্লাউজের ভেতরে হাত! পলাতক পুরোহিত

ইমিগ্রেশনের সময় যে ৭ কথা বললেই মহাবিপদ

মেসির কাছে ক্ষমা চাইলেন মমতা

হাদিকে গুলি করে আ.লীগ পুনর্বাসন হবে না : রাশেদ প্রধান

রেললাইনে পড়ে ছিল অজ্ঞাত যুবকের ছিন্নভিন্ন মরদেহ

১০

চলন্ত রিকশা থেকে ছিনতাই, ইডেনের শিক্ষার্থী আহত

১১

শোবিজ ছেড়ে প্রবাসে কি করছেন মোনালিসা

১২

রাশিয়া থেকে ফেরা সেনাদের বীর আখ্যা কিমের

১৩

নেতাকর্মীদের চোখ-কান খোলা রাখার আহ্বান আমীর খসরুর

১৪

সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান তারেক রহমানের

১৫

হাদিকে গুলি : ফয়সালের বাড়িতে থাকেন না পরিবারের কেউ

১৬

টানা ৩০ দিন উপুড় হয়ে ঘুমালে শরীরে কী ঘটে, জানালেন বিশেষজ্ঞ

১৭

ইরানগামী কার্গো জাহাজে মার্কিন সেনাদের অভিযান

১৮

আব্রামের স্বপ্ন পূরণে মেসির সঙ্গে শাহরুখের সেলফি

১৯

গোপনে সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্নার জামিন

২০
X