

স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনার এই মৌসুম অস্থিরতার মধ্য দিয়েই কাটছে—চোট, ফর্মহীনতা, সমালোচনা। ঠিক সেই সময়টাতেই যেন আলো হয়ে ফিরলেন রাফিনিয়া। দীর্ঘদিন পর একাদশে ফিরে শুধু নিজের অবস্থানই পুনরুদ্ধার করেননি, বদলে দিয়েছেন পুরো দলকে। আর তার এই রূপান্তরের সবচেয়ে বড় সাক্ষী হানসি ফ্লিক। ব্রাজিলিয়ানের উপস্থিতিতে যে বার্সা নতুন রূপে দেখা দিচ্ছে, তা এখন স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে কাতালানদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে।
ফ্লিক গত সপ্তাহেই বলেছিলেন—“ওই কয়েক সপ্তাহে ওকে খুব মিস করেছি। দলের অন্যতম মনোযোগী খেলোয়াড়। আমাদের খেলার দর্শনের সঙ্গে দারুণ মানিয়ে যায়… ফিরে আসতেই আবার দলকে বদলে দিয়েছে।”
কথাগুলো মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই সত্য করে দেখালেন রাফিনিয়া। অ্যাথলেটিক বিলবাও ও চেলসির বিপক্ষে স্বল্প সময় খেললেও আলাভেস আর আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে একাদশে ফিরেই বদলে দিয়েছেন ম্যাচের চিত্র।
মাঠে তার উপস্থিতি শুধু খেলার মান বাড়ায় না, সতীর্থদের মনোবলও অন্য স্তরে নিয়ে যায়। বড় ম্যাচের চাপ, দল যখন পিছিয়ে—সেই মুহূর্তগুলোতে রাফিনিয়ার দৃষ্টি, দৌড় আর তাড়না দলটির মেরুদণ্ডকে আরও শক্ত করে। মাঠে যেমন নেতৃত্ব দেন, তেমনি লকার রুমেও তিনি এখন বার্সার অন্যতম কণ্ঠস্বর।
আতলেতিকোর বিপক্ষে ম্যাচের আগেই সিমেওনে তার প্রশংসা করেছিলেন। পরে তো আরও এগিয়ে গিয়ে বললেন—রাফিনিয়া ব্যালন ডি’অর পাওয়ার যোগ্য। বার্সার বর্তমান দলে ‘অবিসংবাদিত নেতা’ বলতে এখন একটাই নাম—রাফিনিয়া।
অবদান ও পরিসংখ্যান বলছে, রাফিনিয়া অপরিহার্য
আলাভেসের বিপক্ষে করেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসিস্ট। আতলেতিকোর বিপক্ষে করলেন গোল, বন্ধুবৎসল উদযাপনে হাত রাখলেন ক্লাবের প্রতীকে—বার্সার প্রতি নিজের দায়বদ্ধতারই প্রতীক যেন। স্টেডিয়ামের দর্শকদেরও বারবার তোলেন উত্তেজনায়, হাত উঁচিয়ে উড়ান উৎসাহের স্রোত।
৭৩ মিনিট খেলেছেন, আর সেই সময়েই:
৪টি ক্রস, একটি লেভানদোভস্কির ঠিক মাথায় যাওয়া থেকে অল্পের জন্য বঞ্চিত চোট থেকে ফিরেই এমন ছন্দ—এটাই রাফিনিয়ার প্রকৃত মূল্য।
ফ্লিক–রাফিনিয়া: বার্সার পুনর্জাগরণের নতুন প্রতীক
আলাভেস ম্যাচের পর হতাশ ফ্লিকের সঙ্গে ব্রাজিলিয়ানের যে কথোপকথন ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল—তা আসলে দলের নতুন মানসিকতার প্রতিচ্ছবি। রাফিনিয়া শুধু গোল-অ্যাসিস্টে নয়, আচরণ, চরিত্র এবং নেতৃত্বে বার্সাকে বদলে দিচ্ছেন।
বার্সেলোনার এখন যে লড়াই, তাতে রাফিনিয়া শুধু একজন উইঙ্গার নন—তিনি দলকে ছন্দে তোলার ইঞ্জিন, একটা নতুন প্রত্যয়ের নাম। তাঁর পায়ে ভর করেই আবারও এগিয়ে যাচ্ছে ব্লাউগ্রানা।
মন্তব্য করুন