প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞান গবেষণার উন্নয়নে বেশ কিছু ইতিবাচক প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তরুণদের উৎসাহিত করতে ১০০ কোটি টাকার তহবিল রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সফটওয়্যার আমদানিতে কমানো হয়েছে শুল্কের পরিমাণ।
সোমবার (০২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
প্রস্তাবিত বাজেটে দেশে নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উদ্ভাবনী কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে ১০০ কোটি টাকার একটি স্টার্টআপ তহবিল বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রযুক্তিনির্ভর নতুন ব্যবসা ও তরুণদের উদ্যোগকে মূলধন সহায়তা প্রদান করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়াও বিজ্ঞান গবেষণাকে গতিশীল করতে সরকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯২টি প্রকল্পে প্রায় ১৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকার বিশেষ গবেষণা অনুদান দিয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে। এর পাশাপাশি, ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখে সমুদ্রসম্পদ আহরণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, দেশজুড়ে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে পাঁচ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইসিটিডি ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। ৩০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইসিটিডি স্কুল অফ ফিউচার গড়ে তোলা হয়েছে। ৪৯১টি উপজেলায় ‘উপজেলা সেবা ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যেখানে তরুণ-তরুণীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
এবারের বাজেটে ডিজিটাল অবকাঠামো ও টেলিযোগাযোগ খাতের বিস্তার এবং সাধারণ মানুষের জন্য ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা আরও সাশ্রয়ী করতে কর কাঠামোয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের ওপর বিদ্যমান ১০ শতাংশ উৎসে কর কমিয়ে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরদের টার্নওভার ট্যাক্স ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
বাজেটে প্রযুক্তি খাতকে সহায়তায় ডাটাবেজ, অপারেটিং সিস্টেম, ডেভলপমেন্ট টুলস, ডেটা ও তথ্য সুরক্ষায় ব্যবহৃত নিরাপত্তা সফটওয়্যার, ওয়ার্ড প্রসেসিং, স্প্রেডশিট, ইন্টারনেট কোলাবরেশন ও প্রেজেন্টেশন টুলসের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। তবে দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা কমিয়ে আনা হয়েছে, পাশাপাশি পরিবর্তিত ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ ২০২৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। এছাড়া ২২ ইঞ্চির পরিবর্তে ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত কম্পিউটার মনিটরের উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন