দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান যার, সেই জাকের আলী ম্যাচ শেষে জানালেন, রান নয়—তিনি কেবল ‘জয় এনে দেওয়া রান’-ই গণনা করেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে চাপের মধ্যে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে ‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ হয়েছেন জাকের। তবে তার কাছে এই ইনিংস শুধু রান নয়, এক অর্থপূর্ণ ভূমিকার প্রতিফলন।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে জাকের বলেন, ‘আমি কেবল ম্যাচ জেতানো রানকেই গুরুত্ব দিই। বাকি রান আমার মনে থাকে না।’
বাংলাদেশ যখন ২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল, তখন জাকের ও মেহেদী হাসানের জুটি দলকে এনে দেয় স্বস্তি। দুজন মিলে ৫৩ রানের জুটি গড়েন। মেহেদী ২৫ বলে ৩৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে আক্রমণাত্মক ভূমিকা নেন, জাকের খেলেন ঠান্ডা মাথায়। মাঠে নামার আগে অধিনায়ক লিটন দাস তাকে নতুন পরিকল্পনার কথা জানান।
জাকের বলেন, ‘খেলার আগে আমি ভেবেছিলাম উইকেট ১৫৫-১৬০ রানের। কিন্তু লিটন ভাই বললেন, ১৪০-এ লক্ষ্য রাখো। ওটাই মাথায় রেখে ব্যাটিং করেছি। শেষ বলে ছক্কা মারলে ঠিক ১৪০ হতো।’
যদিও তিনি এই ম্যাচে পাঁচ নম্বরে ব্যাট করেছেন, জাকের জানান, টেল এন্ডারদের সঙ্গে ব্যাটিং তার চেনা পরিবেশ। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটেও এমন পরিস্থিতিতে খেলে অভ্যস্ত তিনি।
‘আমি সবসময় সাত নম্বরে ব্যাট করেছি বয়সভিত্তিক পর্যায়ে। তাই লোয়ার অর্ডারের সঙ্গে ব্যাটিং আমার চেনা। আমি কেবল অপর প্রান্তের ব্যাটারকে বাঁচিয়ে নিজের কাজটা করে যাওয়ার চেষ্টা করি।’
তার ভাষ্যমতে, ‘আমি আগে থেকেই জানতাম, পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে হবে। মানসিক প্রস্তুতি ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও এখানে ব্যাট করেছি। ব্যাটিং কোচ সালাহউদ্দিন স্যারের সঙ্গে গত দুই বছর ধরে এটা নিয়েই কাজ করছি।’
পাকিস্তান ইনিংসেও একটি দুঃসাহসী লড়াইয়ের গল্প ছিল। ৪৭ রানে ৭ উইকেট হারানো পাকিস্তান হঠাৎই ঘুরে দাঁড়ায় ফাহিম আশরাফের ব্যাটে। মাত্র ৩২ বলে করেন ৫১ রান। এরপর আফ্রিদি ও দানিয়ালও ম্যাচে রোমাঞ্চ যোগ করেন। তবে বাংলাদেশের বোলাররা শেষ মুহূর্তে ঘাবড়ে না গিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছান।
জাকেরের শেষ কথায় ফুটে ওঠে ক্রিকেটের আসল সৌন্দর্য, ‘এই তো টি-টোয়েন্টির সৌন্দর্য। প্রতিপক্ষ লড়াই করবেই। আমরা কিছু ভুল করেছি ফিল্ডিংয়ে, তবে শামীমের সেই শেষ ক্যাচটা দেখুন! এভাবেই টাইট ম্যাচ জিততে হয়। শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ের পরও আমরা লড়াই করেছি। শেষ পর্যন্ত জয়টাই মুখ্য।’
মন্তব্য করুন