

বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়াইফাই রাউটারের কিছু সাধারণ সেটিংস ঠিক করলেই হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। বর্তমানে ঘরের ইন্টারনেট শুধু ব্রাউজিংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।
অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস, অফিসের কাজ থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভি, সিসিটিভি ও অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইস– সবই নির্ভর করছে হোম ওয়াইফাইয়ের ওপর। তাই এই নেটওয়ার্ক সুরক্ষিত রাখা এখন খুবই জরুরি।
একই সঙ্গে বাইরে পাবলিক বা ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করার সময়ও বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। সামান্য অসাবধানতা বড় বিপদের কারণ হতে পারে। জেনে নিন কী করলে আপনার ওয়াইফাই থাকবে নিরাপদ।
ডিফল্ট নেটওয়ার্ক নাম (SSID) পরিবর্তন করুন
বেশির ভাগ রাউটারেই প্রস্তুতকারকের দেওয়া একটি ডিফল্ট নেটওয়ার্ক নাম থাকে। এতে রাউটারের ব্র্যান্ড বা মডেলের নাম উল্লেখ থাকে, যা হ্যাকারদের জন্য সহজ লক্ষ্য তৈরি করে। তাই রাউটার সেটআপ করার সময়ই নেটওয়ার্কের নাম বদলে ফেলুন। নামের মধ্যে নিজের নাম, ঠিকানা বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার না করাই ভালো।
শক্তিশালী ও আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন
ডিফল্ট পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা সবচেয়ে বড় ভুল। পাসওয়ার্ড যতটা সম্ভব শক্তিশালী হওয়া দরকার। অন্তত ১৫ থেকে ২০ অক্ষরের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন, যেখানে বড় ও ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা এবং বিশেষ চিহ্ন থাকবে। সহজ পাসওয়ার্ড হ্যাকারদের কাজ সহজ করে দেয়।
এনক্রিপশন চালু রাখুন
রাউটারের নিরাপত্তার জন্য এনক্রিপশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে এটি ডিফল্টভাবে বন্ধ থাকে। রাউটার সেটআপ করার সময়ই এনক্রিপশন অন করুন। বর্তমানে WPA2 বা WPA3 এনক্রিপশন সবচেয়ে নিরাপদ হিসেবে ধরা হয়। এতে আপনার ইন্টারনেট ডেটা সুরক্ষিত থাকে।
ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের নাম ব্রডকাস্ট বন্ধ রাখুন
নেটওয়ার্ক নাম ব্রডকাস্ট বন্ধ করলে আপনার ওয়াইফাই আশপাশের ডিভাইসে সহজে দেখা যাবে না। এতে অচেনা কেউ নেটওয়ার্ক খুঁজে পাবে না। বাসার ক্ষেত্রে এই অপশন বন্ধ রাখলে নিরাপত্তা আরও বাড়ে।
রাউটারের সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট করুন
রাউটারের ফার্মওয়্যারে অনেক সময় নিরাপত্তার ত্রুটি থাকতে পারে। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এসব সমস্যা ঠিক করতে নিয়মিত আপডেট দেয়। তাই রাউটারের সফটওয়্যার আপডেট আছে কি না তা সময় সময় পরীক্ষা করুন এবং নতুন আপডেট থাকলে ইনস্টল করুন।
ফায়ারওয়াল চালু আছে কি না দেখুন
বেশির ভাগ রাউটারেই বিল্ট-ইন ফায়ারওয়াল থাকে, তবে অনেক সময় তা বন্ধ থাকে। সেটিংসে গিয়ে ফায়ারওয়াল চালু আছে কি না নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনে কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইসেও আলাদা ফায়ারওয়াল ব্যবহার করা যেতে পারে।
ভিপিএন ব্যবহার করুন
ভিপিএন বা ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক আপনার ইন্টারনেট ডেটাকে এনক্রিপ্ট করে নিরাপদ পথে পাঠায়। বিশেষ করে পাবলিক বা ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করার সময় ভিপিএন ব্যবহার করলে তথ্য চুরি বা নজরদারির ঝুঁকি অনেক কমে যায়। মোবাইল, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ— সব ডিভাইসেই ভিপিএন বাড়তি সুরক্ষা দেয়।
এই ছোট ছোট সতর্কতাগুলো মেনে চললেই আপনার হোম ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক অনেক বেশি নিরাপদ থাকবে।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন