

শীত এলেই ভোরের কুয়াশায় চারপাশ ঢেকে যায়। দেখতে সুন্দর হলেও এই কুয়াশা নীরবে প্রভাব ফেলছে আমাদের স্বাস্থ্যে। বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট, বুক ভার লাগা, কাশি বা হাঁপানির সমস্যা শীতকালে অনেকেরই বেড়ে যায়।
বাংলাদেশে শীতের সময় বাতাসে দূষণ, ধুলাবালি ও কুয়াশা একসঙ্গে মিশে ফুসফুসের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। সকালে শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া এখন খুবই পরিচিত অভিযোগ। তাই এই সময়ে ফুসফুসের যত্ন নেওয়া আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি।
তাহলে শীতের কুয়াশায় শ্বাসকষ্ট হলে কী করবেন? জেনে নিন সহজ ও কার্যকর কিছু উপায়।
নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন : ফুসফুস ভালো রাখতে শ্বাসের ব্যায়াম খুবই উপকারী। গভীর শ্বাস নেওয়া, প্রণায়াম বা ডায়াফ্রামেটিক ব্রিদিং ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট ব্যায়াম করলে শ্বাস নিতে অনেকটাই আরাম পাওয়া যায়।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন : শীতে অনেকেই কম পানি পান করেন, যা শ্বাসযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। পর্যাপ্ত পানি শ্বাসনালির ভেতরের শ্লেষ্মা পাতলা রাখে, ফলে ধুলা ও জীবাণু সহজে জমতে পারে না। গরম পানি, আদা-চা বা স্যুপ শীতে বেশি উপকারী।
ধূমপান এড়িয়ে চলুন : ধূমপান ফুসফুসের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর অভ্যাস। শীতের কুয়াশার সঙ্গে সিগারেটের ধোঁয়া মিললে শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতি আরও বেড়ে যায়। শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও ব্রঙ্কাইটিসের ঝুঁকি কমাতে ধূমপান পুরোপুরি বাদ দেওয়া জরুরি।
পর্যাপ্ত ও ভালো ঘুম নিশ্চিত করুন : প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম শরীরকে বিশ্রাম ও পুনরুদ্ধারের সুযোগ দেয়। এতে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং ফুসফুসও সুস্থ থাকে।
হলুদ ও আদা চা পান করুন : হলুদ ও আদা প্রাকৃতিকভাবে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এই দুটি দিয়ে তৈরি চা ফুসফুসের জ্বালা কমায়, কাশি প্রশমিত করে এবং শ্বাস নিতে আরাম দেয়।
পুষ্টিকর খাবার খান : শীতকালে ফুসফুস ভালো রাখতে সুষম খাদ্য খুব জরুরি। সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম, বীজ এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও শ্বাসযন্ত্রকে শক্তিশালী করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে অপ্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া এড়িয়ে চলা ভালো। হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের রোগীদের ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করা জরুরি। পরিষ্কার বাতাসে থাকার চেষ্টা করুন এবং দূষিত পরিবেশ থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
মনে রাখতে হবে, ফুসফুসের সুস্থতা একদিনে আসে না। নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম ও ভালো অভ্যাস—এই চারটি মিলেই সুস্থ শ্বাসপ্রশ্বাসের মূল চাবিকাঠি।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
মন্তব্য করুন