সুদানে সেনাবাহিনীর হামলায় অন্তত ৩২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন অনেকে। গত এপ্রিল থেকে দেশটিতে চলমান সংঘাতের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ নিহতের রেকর্ড এটি। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভকারীদের আইনজীবীরা এমন দাবি করেছেন। খবর আলজাজিরার।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সুদানের প্রসিদ্ধ শহর ওমবাদার পার্শ্ববর্তী পশ্চিম অমদুরমান এলাকায় গোলাগুলি হয়েছে। এ ছাড়া আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি মারাত্মক হামলা হয়েছে।
মানবাধিকার কর্মী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দেশটির সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে সংঘর্ষ চলাকালে জনবহুল এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এতে রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন এলাকায় শত শত বেসামরিক লোক আহত হয়েছেন। এ সময়ে আরএসএফ খার্তুম ও ওমদুরমানের বিস্তৃত এলাকা দখলে নিয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকবিলায় গোলাবারুদ ও বিমান হামলা চালিয়েছে সেনাবাহিনী।
সার্বভৌম পরিষদের পরিচালনা পর্ষদ জানিয়েছে, বুধবার বিকেলে সুদানের সামরিক শাসক জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান আরএসএফকে নিঃশেষ করতে সাংবিধানিক আদেশ দিয়েছেন। তবে এ আদেশের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি আরএসএফ।
এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে সামরিক সূত্র জানায়, সেনাবাহিনী ওমদুরমান এলাকায় বিপুলসংখ্যক সেনা জড়ো করছে। রাজধানীর সঙ্গে দারফুর অঞ্চলে আরএসএফের সম্পর্ক শেষ করতে বৃহৎ অপারেশন পরিচালনার প্রস্তুতি হিসেবে এসব সেনা জড়ো করা হয়।
সুদানে বিগত কয়েক মাসে প্রায় এক হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এ সময়ে নির্যাতন সইতে না পেরে পশ্চিম দার্ফুরের এল-জেনেইনা এলাকায় ২ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ পার্শ্ববর্তী দেশ সাদ-এর সীমান্ত দিয়ে দিকে পালিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে সুদানে বেসামরিক সরকারের পতন ঘটানো হয়। এরপর দেশ শাসন করছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু সেনাপ্রধান আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক সহযোগী ও আরএসএফপ্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগলুর মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ নিয়ে আলোচনা ব্যর্থ হলে গত ১৫ এপ্রিল রাজধানী খারতুমে সেনাবাহিনীর ব্যারাকে হামলা করে বসে আরএসএফ।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, চলমান এ লড়াইয়ের কারণে সুদানে ২০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এ ছাড়া চার লাখ ৭৬ হাজার মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
মন্তব্য করুন