সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর কাছে অবস্থান নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ। দস্যুতাবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবেই যুদ্ধজাহাজটি বাংলাদেশি জাহাজের কাছে মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার (২২ মার্চ) মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে একটি পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে ইইউর নৌবাহিনী ইউনেভফোর।
আফ্রিকা উপকূল দিয়ে চলাচলকারী অপেক্ষাকৃত দুর্বল জাহাজগুলোকে রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে ইউনেভফোর। তারা জানিয়েছে, গত ১২ মার্চ বাংলাদেশি জাহাজটি ছিনতাই হওয়ার পর থেকেই এটিকে অনুসরণ করছে তাদের যুদ্ধজাহাজ।
ইউনেভফোর শেয়ার করা ভিডিওটিতে দেখা গেছে, এমভি আব্দুল্লাহর কাছে অবস্থান নিয়েছে তাদের যুদ্ধজাহাজ। ওই সময় একটি হেলিকপ্টারও বাংলাদেশি জাহাজটির ওপরে ঘুরপাক খেতে দেখা যায়।
Since November 2023, multiple incidents related to piracy have taken place in the Area of Operations. 3️ merchant vessels have been assaulted, one still under pirate control: MV ABDULLAH. Latest ️ on cases: https://t.co/KLv0PDO4fD ATALANTA warships engaged in the Area. pic.twitter.com/uV8da3yRDi — EUNAVFOR ATALANTA (@EUNAVFOR) March 21, 2024
মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগর থেকে এমভি আব্দুল্লাহকে ছিনতাই করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজটিতে ২৩ জন ক্রু রয়েছেন। যাদের সবাই বাংলাদেশি। জাহাজটি ছিনতাইয়ের পর ২৩ ক্রুয়ের সবাইকে জিম্মি করেছে জলদস্যুরা।
জাহাজ ছিনতাই হওয়ার পর থেকে জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু প্রথমদিকে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত ২০ মার্চ দস্যুরা মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
এমভি আবদুল্লাহর মতো ২০১০ সালেও আরেকটি বাংলাদেশি জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। ওই জাহাজের নাম ছিল জাহান মণি। একই গ্রুপের মালিকানাধীন এ জাহাজটি ৫ ডিসেম্বর অপহরণের শিকার হয়েছিল।
জাহান মণি ২০১০ সালের ২১ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়া থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। এরপর সিঙ্গাপুরে এসে যাত্রাবিরতি করে। সিঙ্গাপুর থেকে ২৭ নভেম্বর গ্রিসের দিকে রওনা দেয়। জাহাজটিতে প্রায় ৪১ হাজার টন নিকেলের আকরিক ছিল। আরব সাগর দিয়ে যাত্রার সময় ভারতের লক্ষ্মা দ্বীপ থেকে ১৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে তারা সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়েন।
জলদস্যুরা ছোট ছোট জলযান নিয়ে জাহাজটিকে ঘিরে ফেলেছিল। এরপর হুক ও মই ব্যবহার করে জাহাজে উঠে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে নাবিক ও কর্মকর্তাদের জিম্মি করে ফেলে তারা। দস্যুরা জাহান মণি জাহাজটিকে অপহরণ করে ১১ ডিসেম্বর সোমালিয়ার উপকূলের একটি স্থানে নিয়ে যায়। এরপর তারা মুক্তিপণ হিসেবে ৯ মিলিয়ন ডলার, যা বর্তমান বাজারমূল্যে ৯৯ কোটি টাকা দাবি করে।
এবার নতুন করে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়েছে এমভি আবদুল্লাহ। এটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। যা দাম প্রায় ৮০ কোটি টাকা বা ৬৬ হাজার ডলার। এই জাহাজ এবং এর নাবিকদের মুক্তি দিতে জলদস্যুরা মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও এখনো তারা মুক্তিপণ দাবি করেনি।
মন্তব্য করুন