কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নৌকাডুবিই কি রোহিঙ্গাদের নিয়তির শেষ ঠিকানা?

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে মাতৃভূমি ছেড়ে পালানো, শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া, নতুন জীবনের খোঁজে সমুদ্রে পাড়ি- এ যেন রোহিঙ্গা জীবনের চক্রাকারে ঘূর্ণায়মান এক করুণ ট্র্যাজেডি। বারবার পালানোর চেষ্টা, কিন্তু শেষ ঠিকানা বারবারই যেন সমুদ্রের অতল গহ্বর।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য সেই ভয়ংকর প্রশ্ন আবারও সামনে এসেছে : নৌকাডুবিই কি তাদের নিয়তির শেষ ঠিকানা হয়ে দাঁড়াচ্ছে?

গত ৯ ও ১০ মে মিয়ানমারের উপকূলে ঘটে যাওয়া দুটি নৌকাডুবিতে অন্তত ৪২৭ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।

সংস্থাটির মতে, যদি এই আশঙ্কা সত্যি হয়, তবে ২০২৫ সালে এটি হবে রোহিঙ্গাদের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী সাগর দুর্ঘটনা।

প্রথম দুর্ঘটনায় ২৬৭ জন যাত্রীসহ একটি নৌকা ডুবে যায়, যাদের মধ্যে মাত্র ৬৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পরদিন আরও একটি নৌকা ডুবে যায়, যাতে ছিলেন ২৪৭ জন। এখানেও মাত্র ২১ জনের প্রাণ রক্ষা হয়েছে। খবর আল জাজিরা।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ওই দুই নৌকায় থাকা ব্যক্তিরা হয় বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে, অথবা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। যাদের উদ্দেশ্য ছিল একটি নিরাপদ ও মানবিক আশ্রয় খুঁজে পাওয়া। কিন্তু সাগরের পথে সেই যাত্রা তাদের জন্য হয়ে ওঠে মরণফাঁদ।

জাতিসংঘের হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এক বিবৃতিতে বলেন, এই মর্মান্তিক ঘটনা রোহিঙ্গাদের চরম দুর্দশার প্রতীক। এটি বাংলাদেশে অবস্থানরত শরণার্থীদের জীবনসংগ্রাম ও আন্তর্জাতিক সহায়তার ক্রমাগত ঘাটতির চিত্র তুলে ধরে।

তিনি আরও বলেন, মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় অনেকেই বাধ্য হয়ে বিপদসঙ্কুল পথে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন।

এ ঘটনাগুলোর আগে ভারতের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে- জাতিসংঘ নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আটক করে তাদের মিয়ানমারের সমুদ্রসীমায় ফেলে দেওয়ার। বিষয়টি এখন জাতিসংঘ তদন্ত করছে।

একদিকে রাষ্ট্রীয় বর্বরতা, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সমাজের নির্লিপ্ততা- এই দুইয়ের মাঝে রোহিঙ্গারা যেন বিশ্বের সবচেয়ে অনাথ জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।

বারবার মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে, বারবার নতুন আশ্রয়ের সন্ধানে পথে বের হয়ে, অবশেষে যদি সমুদ্রই হয় তাদের কবরস্থান- তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে : এই বিশাল পৃথিবীতে রোহিঙ্গাদের জন্য কি কোথাও একটু মানবিক আশ্রয় নেই?

তাদের না আছে নাগরিকত্ব, না আছে ভূমি, না আছে অধিকার। তাই তো মানবিক বিবেক আজ প্রশ্ন তোলে- নৌকাডুবিই কি রোহিঙ্গাদের নিয়তির শেষ ঠিকানা?

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চব্বিশের পাতানো নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে ঐক্য নয় : জমিয়ত

ইসরায়েলে র‌্যাগিংয়ের নামে নবীন সেনাদের যৌন নির্যাতন, ৭ সিনিয়র আটক

মুরাদনগরের সেই নারীর ভিডিও ছড়ানোর ‘মূলহোতা’ ৫ দিনের রিমান্ডে

পরিবেশবান্ধব ভাস্কর্যের দাবিতে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিল কক্সবাজার কমিউনিটি অ্যালায়েন্স

এসএসসির ফল প্রকাশে কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না : শিক্ষা মন্ত্রণালয়

ভারি বর্ষণে যমুনায় বাড়ছে পানি

ভারতীয় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত, দুই পাইলট নিহত

সেমির আগে রিয়াল মাদ্রিদের বিমান দুর্ভোগ, প্রস্তুতি নিয়ে চরম বিশৃঙ্খলা

এরদোয়ানকে অপমান করায় তুরস্কে ইলন মাস্কের চ্যাটবট ব্লক

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

১০

জবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগ অ্যালামনাইয়ের সভাপতি খলিল, সম্পাদক মামুন

১১

বিএমইউতে এআই রোবট দেবে ফিজিওথেরাপি, চালু হচ্ছে কাল

১২

বিয়ে করতে চান সালমান খান

১৩

চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলজট, পাহাড়ধসের শঙ্কা

১৪

খায়রুল বাশারের স্বপ্নে সমু চৌধুরী

১৫

বাংলাদেশে না আসলেও আগস্টে শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে পারে ভারত

১৬

লেবাননে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলা, ঘাঁটি ধ্বংস

১৭

ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা ফখরুলের

১৮

নারায়ণগঞ্জে হত্যা মামলায় আইভীর জামিন নামঞ্জুর

১৯

দিনে ৪৪২ জনের মৃত্যু রোধে সমাবেশ ও কফিন র‍্যালি

২০
X