তুরস্কের একটি আদালত ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি এক্সএআইর তৈরি গ্রকের কিছু কনটেন্টে প্রবেশাধিকার বন্ধ করার আদেশ দিয়েছেন। বুধবার (৯ জুলাই) দেশটিতে চ্যাটবটটি ব্লকের আদেশ আসে। কর্তৃপক্ষের বরাতে রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
চ্যাটবটটি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি অপমানজনক উত্তর দিয়েছে বলে অভিযোগ।
২০২২ সালে ওপেনএআইর চ্যাটজিপিটি চালু হওয়ার পর থেকে এআই চ্যাটবটগুলোতে রাজনৈতিক পক্ষপাত, ঘৃণাত্মক বক্তব্য এবং তথ্যগত ভুল নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। গ্রকের বিরুদ্ধে ইহুদিবিরোধী কুসংস্কার এবং অ্যাডলফ হিটলারের প্রশংসার অভিযোগ উঠেছে।
আঙ্কারার প্রধান প্রসিকিউটরের কার্যালয় জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং এটি তুরস্কের প্রথম কোনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরঞ্জামের কনটেন্টের উপর নিষেধাজ্ঞা। কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেছে, এই ধরনের অপমান দেশের আইন লঙ্ঘন করে, যা চার বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধ।
এক্স বা এর মালিক ইলন মাস্কের সাথে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। তারা প্ল্যাটফর্মে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো উল্লেখ করেনি।
গত মাসে মাস্ক গ্রকের আপগ্রেডের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি স্বীকার করেন, অসংশোধিত ডেটার উপর প্রশিক্ষিত চ্যাটবটটির ফাউন্ডেশন মডেলে অনেক বাজে জিনিস রয়েছে।
এক্স-এর সাথে সংযুক্ত গ্রক তুর্কি ভাষায় নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তরে এরদোয়ান ও আতাতুর্ক সম্পর্কে আপত্তিকর কনটেন্ট তৈরি করেছে বলে স্থানীয় মিডিয়া জানায়।
ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজিস অথরিটি (বিটিকে) আদালতের আদেশের পর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর শুরু করেছে।
ইস্তানবুল বিলগি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ ইয়ামান আকদেনিজ জানান, কর্তৃপক্ষ গ্রকের প্রায় ৫০টি পোস্টকে তদন্তের ভিত্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। জনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা এবং নির্দিষ্ট কনটেন্ট অপসারণের রায় দিয়েছে। তুরস্ক গ্রকের উপর সেন্সরশিপ আরোপকারী প্রথম দেশ।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্ক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং অনলাইন স্ট্রিমিং পরিসেবাগুলোর উপর তদারকি বাড়িয়েছে। কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন পাস করেছে। পোস্টের জন্য ব্যক্তিদের আটক বা গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত এবং নির্দিষ্ট সাইটে প্রবেশ সীমিত বা বন্ধ করার আরও কয়েকটি ঘটনা ঘটে।
সমালোচকরা বলেন, এই আইনটি প্রায়ই ভিন্নমত দমনের জন্য ব্যবহৃত হয়। যদিও সরকার দাবি করে আসছে, মর্যাদা রক্ষার জন্য আইনটি প্রয়োজনীয়।
মন্তব্য করুন