নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গুলিতে নিহত শ্রমিক সজল হত্যা মামলায় এ রায় দেন আদালত।
বুধবার (০৯ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ এ আদেশ দেন। জামিন শুনানির সময়ে আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আবুল কালাম আজাদ জাকির।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আওলাদ হোসেন বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে সজল হত্যা মামলায় মেয়র আইভীর পক্ষে আদালতে জামিন আবেদন করেছি এবং যুক্তি উপস্থাপন করেছি। এ মামলায় মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট একটি কথাও বলিনি। কার গুলিতে সজল নিহত হয়েছে তা মামলার এজাহারের বর্ণনায় নেই। কে বোমা বিস্ফোরণ করেছে তারও কোনো বর্ণনা উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু এরপরও আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন। আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আবুল কালাম আজাদ জাকির বলেন, সজল হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র আইভী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে ৬ নম্বর আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তার জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।
তিনি বলেন, আইভী তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি ওই সময় বড় ভূমিকা পালন করেছেন। নারায়ণগঞ্জে আইভী ও শামীম ওসমান তৎকালীন সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে ছাত্রদের আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য ভূমিকা পালন করেছে। সেই ভূমিকা নেওয়ার ফলে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেছেন। আমরা আশা করি, তিনি দীর্ঘদিন জেলহাজতে থাকবেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ২০ জুলাই বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকার ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন জুতা কারখানার শ্রমিক সজল। এ ঘটনায় চলতি বছরের ১৬ মে সজলের মা বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাত আরও এক থেকে দেড় শতাধিক ব্যাক্তিকে আসামি করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৯ মে ভোরে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জের পোশাকশ্রমিক মিনারুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার তুহিন হত্যা ও নাদিম হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সাবেক মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় হত্যাসহ ৬টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন