কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৫০ পিএম
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

উত্তাল নেপাল, পার্লামেন্টে ঢুকে পড়েছে ছাত্র-জনতা

পার্লামেন্টে ঢুকছে বিক্ষোভকারীরা। ছবি : সংগৃহীত
পার্লামেন্টে ঢুকছে বিক্ষোভকারীরা। ছবি : সংগৃহীত

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। বিক্ষোভ সামাল দিতে কাঠমান্ডুতে কারফিউ জারি করা হয়েছে, তবে বিক্ষোভকারীরা কারফিউ ভেঙে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন। এর আগে বেশকিছু বিক্ষোভকারী নিরাপত্তাবাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে রাজধানীতে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়েন।

এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি, টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তাতে দমে যাননি। ক্রমেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে বাধ্য হয় সরকার।

সকালে স্থানীয় সময় ৯টার দিকে আন্দোলনকারীরা কাঠমান্ডুর মৈতিঘর এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ধীরে ধীরে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই তরুণরা অনলাইনে ‘নেপো কিড’ ও ‘নেপো বেবিস’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। সেই আন্দোলনই এবার রাস্তায় নেমে এসেছে।

পার্লামেন্টে ঢুকছে বিক্ষোভকারীরা।

পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয় যখন সরকার নিবন্ধনহীন ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধের ঘোষণা দেয়। এই সিদ্ধান্তকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন আন্দোলনকারীরা। ক্ষুব্ধ তরুণ প্রজন্ম তখন অনলাইন আন্দোলনকে সড়কে নিয়ে আসার ডাক দেন।

কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ‘হামি নেপাল’ নামের একটি সংগঠন অনুমতি নিয়ে এদিনের সমাবেশ আয়োজন করে। সংগঠনের চেয়ারম্যান সুধান গুরুং জানান, সরকারের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। শুধু রাজধানী নয়, দেশজুড়েই একই সময়ে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

আয়োজকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগেভাগে বিক্ষোভের রুট ও নিরাপত্তা নির্দেশনা শেয়ার করেছিলেন। এমনকি শিক্ষার্থীদের স্কুল ইউনিফর্ম পরে বই হাতে বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল, যাতে এই আন্দোলন আরও প্রতীকী রূপ পায়।

বিক্ষোভ চলাকালীন সহিংসতা বাড়তে থাকলে কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন দ্রুত কয়েকটি এলাকায় কারফিউ জারি করে। প্রথমে বানেশ্বরের কিছু অঞ্চলকে ‘নিষিদ্ধ এলাকা’ ঘোষণা করা হয়। পরে রাষ্ট্রপতির বাসভবন শীতলনিবাস, উপ-রাষ্ট্রপতির বাসভবন লেইনচৌর, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বালুয়াটার ও আশপাশের এলাকাতেও কারফিউ জারি করা হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, জেন-জি প্রজন্মের নেতৃত্বে এই আন্দোলন নেপালের রাজনীতিতে বড় ধরনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। সরকারের কঠোর পদক্ষেপ হয়তো সাময়িকভাবে বিক্ষোভ থামাতে সক্ষম হবে, কিন্তু তরুণদের ক্ষোভ আরও গভীর হয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।

সূত্র : দ্য হিমালায়ান টাইমস

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শেখ পরিবার ও আওয়ামী নেতাদের নামে ৬ স্থাপনার নাম পরিবর্তন

নেপালে নিহত বেড়ে ১৯ : কোন দিকে যাচ্ছে পরিস্থিতি?

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানালেন মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ-নেপাল প্রীতি ম্যাচ বাতিল ঘোষণা

রাকসু নির্বাচনে বাম জোটের প্যানেল ঘোষণা

একটি কক্ষ, একটি ইতিহাস

ডাকসু নির্বাচন উপলক্ষে মেট্রো চলাচলে বিশেষ নির্দেশনা

বিশেষজ্ঞ মতামত পর্যালোচনায় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক

টিভি দেখতে দেখতে হঠাৎ ব্রেন স্ট্রোক করে হাসপাতালে অভিনেত্রী

গবেষণার ফলাফল জনহিতকর কাজে প্রয়োগ করা হবে : খাদ্য সচিব

১০

ভোটের আগের দিন ‘গুরুতর’ অভিযোগ আনলেন উমামা

১১

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা সাঈদকে পুলিশে সোপর্দ

১২

অসুস্থ যুবদল নেতার চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

১৩

বাসের দরজায় ‘নকআউট’ হলান্ড, মুখে লাগল তিন সেলাই

১৪

জনগণই বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস : তারেক রহমান

১৫

দুদকের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার শিবলী রুবাইয়াত

১৬

এক মাসে কতটা ওজন কমানো নিরাপদ, জানালেন চিকিৎসক

১৭

ভোক্তা অধিকারে নতুন মহাপরিচালক নিয়োগ

১৮

এআই দিয়ে তৈরি ছবি কি না, চিনবেন ৫ উপায়ে

১৯

‘আর কোনো মা-বোনকে যেন স্বামী-সন্তানের জন্য কাঁদতে না হয়’

২০
X