সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে যাচ্ছে কোল্ড ওয়ারের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভিয়েতনাম-যুক্তরাষ্ট্র। দেশ দুটি নিজেদের মধ্যে অস্ত্রচুক্তি করতে যাচ্ছে। এ চুক্তির ফলে দেশটির সাথে চীন-রাশিয়ার সম্পর্কে প্রভাব পড়তে পারে। চুক্তির সাথে সম্পর্কিত দুটি সূত্রের কবরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
চীন, রাশিয়া, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার আগে থেকে ভিয়েতনামের কৌশলগত অংশীদারত্বমূলক সম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্ক পরবর্তী ধাপে উন্নীত করার ইঙ্গিত দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র-ভিয়েতনামের সম্পর্ক ‘নতুন স্তরে’ প্রবেশ করেতে যাচ্ছে।
চুক্তিসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এ অস্ত্র চুক্তি আগামী বছর চূড়ান্ত হতে পারে। এর আওতায় পরস্পারিক অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্কের অধীনে হ্যানয় তাদের সামরিক বহর আধুনিকায়ন করবে। এমনকি দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এক-১৬ যুদ্ধবিমানও পেতে পারে। এটি পেলে দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে ভিয়েতনামের সাথে চীনের বিরোধ রয়েছে। ফলে বিরক্ত হতে পারে চীন।
চুক্তিটি একদম প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এটির প্রাথমিক শর্তাবলি নিয়ে কাজ চলছে। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও হ্যানয়ের কর্মকর্তাদের মাঝে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে গত মাসে কয়েকটি বৈঠক হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানিয়েছে, এ চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামকে পুনর্গঠনে বিশেষ অর্থনৈতিক সুবিধা দিবে। এর ফলে রাশিয়ার চেয়ে কম মূল্যে অস্ত্র সহায়তা পাবে দেশটি। এতে করে দেশটির সাথে রাশিয়ার সম্পর্কও সঙ্কুচিত হতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে হোয়াইট হাউস ও ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র মান্ত্রণালয়ের বক্তব্য চাওয়া হলেও তারা কোনো সাড়া দেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানান, আমাদের সাথে ভিয়েতনামের নিরাপত্তা নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তির বিষয়ে বেশ আগ্রহ দেখিয়েছে। আমরা তাদের সমুদ্রপথ তদারকিকরণে আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে সহযোগিতা করতে পারি। এ ছাড়া তারা বিমান ও অন্যান্য ব্যবস্থা তদারকির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তাও নিতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে কাজ চলছে। আমরা তাদের এ জন্য বিভিন্ন অর্থনৈতিক সুবিধাও দিব যা তাদের জন্য এই মুহূর্তে আসলেই বেশ দরকারি।
উল্লেখ্য, চলতি মাসে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় তিনি সম্মেলন শেষ করেই ভিয়েতনাম সফর করেছেন। সেখানে বেশ কয়েকটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সমাপ্তির পর এ পর্যন্ত দেশটিতে গত ৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের চারজন প্রেসিডেন্ট ভিয়েতনাম সফর করলেন। তাদের মধ্যে সর্বশেষ ব্যক্তি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
দেশটিতে ২০ বছরের যুদ্ধচলাকালে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন দেশটি সফর করে দেশটির সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছিলেন। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনস্থাপিত হয়। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্টর সফরের মধ্যে দিয়ে নতুন গতি পাচ্ছে এ সম্পর্ক।
মন্তব্য করুন