রাশিয়ার বিরুদ্ধে যখন সবাই একজোট হচ্ছে, তখন মস্কোর দিকে বাড়িয়ে দেওয়া যে কোনো হাতকেই বন্ধু মনে করছেন ভ্লাদিমির পুতিন।
আর তাই প্রায় দুই যুগ পর উত্তর কোরিয়া সফরে গেলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। পুতিনের এই সফরের আগে থেকেই, পঞ্চন্দ্রিয় সজাগ করে রেখেছে পশ্চিমারা।
দুই দেশের নেতা মিলে কী ‘ঘট’ পাকাচ্ছে সেই শঙ্কায় আছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা।
রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া, উভয় দেশের হাতেই পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। আবার দেশ দুটির ওপর মার্কিন তথা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে ‘মিল’ রয়েছে দুই দেশের। আর তাই চিন্তায় পড়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। তাদের আশঙ্কা পুতিন ও কিম হাত মেলালে সামাল দেওয়া কঠিন হবে। কারণ এই দুই নেতাই পশ্চিমাদের কথা পাত্তা দেন না।
পুতিনকে বরণ করে নিতে গভীর রাতে বিমানবন্দরের টারমাকে একাই দাঁড়িয়েছিলেন কিম। এমন দৃশ্য ‘বিরলই’ বলা যেতে পারে। শুধু অভ্যর্থনাই নয়, আতিথেয়তায়ও কমতি রাখেননি কিম।
পিয়ংইয়ংয়ে কুমসুসান গেস্টহাউসে পুতিনের থাকার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এর আগে ২০১৯ সালে রাষ্ট্রীয় সফরে উত্তর কোরিয়ায় গিয়েছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তখন তিনিও এই গেস্টহাউসে উঠেছিলেন।
উত্তর কোরিয়ার এই রাষ্ট্রীয় গেস্টহাউস পিয়ংইয়ংয়ে কুমসুসান প্যালেস অব সানের কাছে অবস্থিত। ওই প্রাসাদে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের বাবা কিম জং-ইল এবং দাদা কিম ইল-সাংয়ের সমাধি রয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ২০১৯ সালে চীনের প্রেসিডেন্টের সফরের আগে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে এই গেস্টহাউস বানানো হয়েছে।
দুই দিনের এই রাষ্ট্রীয় পুতিনের সঙ্গী হয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী ডেনিস মান্তুরভ, আলেক্সান্ডার নোভাক, প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলুসভ, উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যালেক্সি ক্রিভোরুচকো, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো, পরিবহনমন্ত্রী রোমান স্টারোভোইত, রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমসের প্রধান ইউরি বরিসভ, রেলওয়েপ্রধান ওলেগ বেলোজেরভ ও রাশিয়ার দূরপ্রাচ্য অঞ্চলের গভর্নর ওলেগ কোঝেমিয়াকো।
সর্বশেষ ২০০০ সালে উত্তর কোরিয়া গিয়েছিলেন পুতিন। এর প্রায় ২৪ বছর পর উত্তর কোরিয়া সফরে গেলেন তিনি। দুই বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালাচ্ছে রাশিয়া। এই দুই বছরে বিশ্ব রাজনীতিতে অনেক উত্থান-পতন হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে পুতিনের। দেশটিতে পৌঁছানোর পর তার নমুনাও দেখা গেল।
মন্তব্য করুন