এবার নোবেলজয়ী সাংবাদিককে বিদেশি গুপ্তচর হিসেবে আখ্যা দিয়েছে রাশিয়া। শান্তিতে নোবেলজয়ী সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভকে বিদেশি গুপ্তচর হিসেবে উল্লেখ করে দেশটি। রাশিয়ার ইউক্রেনে আগ্রাসনের সমালোচনা এবং ক্রেমলিনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করায় তাকে এমন আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তিনি স্বাধীন সংবাদপত্র নোভায়া গেজেটার সম্পাদক।
রাশিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়ের বরাতে দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিমিত্রি মুরাতভ ২০২১ সালে ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসারের সঙ্গে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। তার বিরুদ্ধে বিদেশি প্লাটফর্ম ব্যবহার করে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক প্রচারণা চালানোর অভিযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কন্টেন্টের মাধ্যমে গোপনে তিনি রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিদেশ করছেন।
এএফপি জানিয়েছে, রাশিয়ায় মুরাতভসহ ৬৭৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ‘বিদেশি গুপ্তচর’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। দেশটিদে বিদেশি গুপ্তচরদের ‘জনগণের শত্রু’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। যা ৩২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও চলমান রয়েছে।
রাশিয়ার আইন অনুসারে, কোনো ব্যক্তিকে ‘বিদেশি এজেন্ট’ আখ্যা দেওয়া হলে তার বিরুদ্ধে যে কোনো সময় পুলিশ তল্লাশি চালাতে পারে। এ ছাড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারে। এই তালিকায় পড়া ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে ব্যাপক প্রশাসনিক বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হয় এবং অর্থ আয়-ব্যয় সম্পর্কিত তথ্য সবসময় উন্মুক্ত রাখতে হয়।
২০২২ সালে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে মস্কোর বিরুদ্ধে সমালোচক ও সরকারবিরোধীদের নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ সময়ে যারা প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার সরকারের সমালোচনা করেছেন তাদের একটি বড় অংশই হয় কারাগারে— নয়তো পালিয়ে রাশিয়ার বাইরে চলে গেছেন। এর বাইরে যারা রাশিয়ায় অবস্থান করছেন তারাও নীরব রয়েছেন।
দেশটিতে পুতিন সরকারপন্থি নন— এমন সাংবাদিকদের অধিকাংশই বর্তমানে রাশিয়ার বাইরে আছেন। মুষ্টিমেয় যে কয়েকজন ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক ও সম্পাদক এখনও দেশে রয়েছেন, মুরাতভ তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত শিশুদের সহায়তার জন্য নিজের নোবেল পুরস্কারের মেডেল বিক্রি করে দেন।
মন্তব্য করুন