দক্ষিণ ইউরোপজুড়ে তীব্র দাবদাহে গ্রিসসহ একাধিক দেশে ভয়াবহ দাবানল দেখা দিয়েছে। গ্রিসের তৃতীয় বৃহত্তম শহর পাত্রাসকে হুমকির মুখে ফেলেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় হাজার হাজার দমকলকর্মী মোতায়েন রয়েছে।
গ্রিসের দমকল বিভাগের মুখপাত্র ভ্যাসিলিস ভাথ্রাকোগিয়ানিস জানান, তীব্র তাপমাত্রা, প্রবল বাতাস ও কম আর্দ্রতার কারণে আগুন নেভানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে পাত্রাসের একটি হাসপাতাল থেকে ১২ শিশু ও একটি অবসর নিবাস থেকে ৮০ বৃদ্ধকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এজিয়ান দ্বীপ চিওস, আইওনিয়ান দ্বীপ জান্তে ও সেফালোনিয়াতেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।
স্পেনেও দাবানল পরিস্থিতি মারাত্মক আকার নিয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কাস্তিল ও লিওন অঞ্চলে প্রায় ৬ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী রোমান খনি আগুনের ঝুঁকিতে রয়েছে। দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে জলবোমা প্লেনসহ সহায়তা চেয়েছে। এ বছর স্পেনে ১৯৯টি দাবানলে প্রায় ৯৮ হাজার হেক্টরের বেশি এলাকা পুড়ে গেছে।
পর্তুগালে পাঁচটি বড় দাবানল নিয়ন্ত্রণে দুই হাজারের বেশি দমকলকর্মী ও ২০টি বিমান কাজ করছে। মধ্যাঞ্চলের ত্রানকোসো পৌরসভায় সবচেয়ে ভয়াবহ আগুনটি শনিবার থেকে জ্বলছে, যা প্রবল বাতাসে আবারও ছড়িয়ে পড়েছে।
বলকান অঞ্চলেও ডজনখানেক দাবানল নেভাতে লড়ছে জরুরি সেবা বিভাগ। আলবেনিয়ায় আগুনে ৮০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা গেছেন, আর মন্টিনিগ্রোতে পানি বহনকারী ট্রাক উল্টে এক সেনার মৃত্যু হয়েছে।
এমনকি ঐতিহাসিকভাবে শীতল দেশ যুক্তরাজ্যও এবার চতুর্থ দফা তাপপ্রবাহের মধ্যে পড়েছে। উত্তর ইংল্যান্ডের নর্থ ইয়র্ক মুরস জাতীয় উদ্যানে দাবানলে প্রায় পাঁচ বর্গকিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন ইউরোপের দাবদাহ ও দাবানল পরিস্থিতিকে আরও ঘন ও তীব্র করে তুলছে, যা ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ আকার নিতে পারে।
মন্তব্য করুন