ভারতের মাওবাদী বিদ্রোহীদের শীর্ষ নেতা নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসভারাজু নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সশস্ত্র আন্দোলনের ইতিহাসে ঘটনাটি এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বুধবার ছত্তিশগড় রাজ্যের নারায়ণপুর জেলার গভীর জঙ্গলে চালানো এক অভিযানে ২৭ জন মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হন। অমিত শাহ জানান, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া-মাওইস্ট (সিপিআই-মাওইস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও, যিনি সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতা ছিলেন।
এক বিবৃতিতে অমিত শাহ বলেন, আজ ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুরে আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী ২৭ জন ভয়ংকর মাওবাদীকে নির্মূল করেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সিপিআই-মাওইস্টের সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসভারাজু—যিনি ছিলেন সংগঠনের মেরুদণ্ড ও নকশাল আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি।
তিনি আরও বলেন, গত তিন দশকের নকশাল দমন অভিযানে এই প্রথম সাধারণ সম্পাদক পর্যায়ের কোনো শীর্ষ নেতাকে নির্মূল করা সম্ভব হলো। এটি আমাদের নিরাপত্তাবাহিনীর এক বিশাল সাফল্য।
উল্লেখ্য, ভারতের মাওবাদী বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল ১৯৬৭ সালে, জমিদারবিরোধী এক আন্দোলন থেকে। পরে সেটি পরিণত হয় বৃহৎ সশস্ত্র সংঘর্ষে। এ পর্যন্ত দেশটিতে এ সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ, যার মধ্যে রয়েছেন বিদ্রোহী, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ নাগরিক।
২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে মাওবাদীদের প্রভাব চরমে পৌঁছায়, যখন তারা ভারতের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। তখন তাদের যোদ্ধার সংখ্যা ছিল আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ হাজার।
অমিত শাহ আরও জানান, চলমান অভিযানে ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও মহারাষ্ট্র থেকে ৫৪ জন সন্দেহভাজন মাওবাদীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আরও ৮৪ জন আত্মসমর্পণ করেছে।
তিনি বলেন, মোদি সরকার ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে নকশালবাদ সম্পূর্ণ নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।
মন্তব্য করুন