দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের পর দুদেশের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে এক সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে সীমান্তে সামরিক অভিযান শুরু করে, যার জবাবে পাল্টা আঘাত হানে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম সামা টিভির এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বড় ধরনের সামরিক ক্ষয়ক্ষতির পরও ভারতীয় সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে মুখ খুলছে না। বরং রাষ্ট্রীয় স্তরে পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা চলছে।
সংবাদমাধ্যমটির দাবি, ৭ মে শুরু হওয়া এই অভিযানে লাইন অব কন্ট্রোল বা এলওসি বরাবর ২৫০ জনেরও বেশি ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। যদিও ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, তবে তার আগেই ঘটে এই বিপুল প্রাণহানি।
একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে সামা টিভি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন রাফাল যুদ্ধবিমানের তিনজন পাইলটসহ চারজন পাইলট, ভারতীয় বিমানবাহিনীর সাত সদস্য এবং ১০ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডের জি-টপ পোস্টে অবস্থানরত পাঁচজন সেনা। এছাড়া ৯৩ পদাতিক ব্রিগেডের সদর দপ্তরে কর্মরত আরও ৯ জন নিহত সেনার নামও মিলেছে, যাদের সবাইকে মরণোত্তর সামরিক সম্মানে ভূষিত করা হবে বলে জানা গেছে।
তালিকায় রয়েছে আদমপুর বিমানঘাঁটিতে নিযুক্ত অত্যাধুনিক এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পাঁচ অপারেটরও, যারা ওই হামলায় প্রাণ হারান। তাদের সবাইকে মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
সামা টিভির ভাষ্য, এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রকাশ্যে না আনলেও, ভারত সরকার একদিকে নিহতদের পুরস্কৃত করছে, অপরদিকে ঘটনাগুলো আড়াল রাখতে নানা কৌশল নিচ্ছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, নিহত সেনাদের পরিবারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে যেন তারা সামাজিক মাধ্যমে কোনো ছবি বা স্মৃতিচারণা প্রকাশ না করেন। এমনকি পরিবারগুলোকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হচ্ছে যেন এ নিয়ে গণমাধ্যমেও কথা না বলেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাফাল বিমানের ধ্বংস, পাঠানকোট ও উদমপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিতে হামলা এবং এস-৪০০ ব্যবস্থার ক্ষতি- এগুলো শুরুতে অস্বীকার করলেও পরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কয়েকজন উচ্চপদস্থ জেনারেল ও কূটনীতিক চাপে পড়ে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ভারত সরকার যে ‘নীরব পুরস্কারনীতি’ অনুসরণ করছে, তা মূলত দ্বিমুখী উদ্দেশ্যে পরিচালিত- একদিকে শহীদ সেনাদের পরিবারকে শান্ত রাখা, অপরদিকে জনসাধারণ এবং আন্তর্জাতিক মহলের কাছে সামরিক ব্যর্থতা লুকানো।
যদিও আন্তর্জাতিক ও ভারতীয় কয়েকটি স্বাধীন সংবাদমাধ্যম আগেই নিশ্চিত করেছে যে সীমান্তবর্তী বিভিন্ন কৌশলগত ঘাঁটিতে ভারতীয় বাহিনীর উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে, তবুও মোদি প্রশাসন এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো স্বীকারোক্তি দেয়নি।
মন্তব্য করুন