লোহিত সাগরে জাহাজ আটকসহ যেকোনো ধরনের অসদাচরণের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ডস কর্পস (আইআরজিসি)।
ইরানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে লোহিত সাগরে দুটি যুদ্ধজাহাজের পাশাপাশি তিন হাজারের বেশি মার্কিন সেনা মোতায়েনের পরের দিন এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করল আইআরজিসি।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ইরানের সংবাদমাধ্যম পার্সটুডে।
আইআরজিসির মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রমজান শরিফ বলেন, সামরিক শক্তির দিক থেকে ইরান এত উচ্চতা ও সক্ষমতায় পৌঁছেছে যে তারা এই অঞ্চলে জাহাজ আটকসহ যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো পদক্ষেপ ও অসদাচরণের জবাব দিতে পারে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে কোনো সরাসরি যুদ্ধে এই অঞ্চলের দেশগুলো আমেরিকার দুর্বলতা ও ইরানের শক্তি দেখেছে। তারা বুঝতে পেরেছে পারস্য উপসাগরের সুরক্ষা নিজেদেরই নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন : হঠাৎ লোহিত সাগরে কেন ৩ হাজার সেনা মোতায়েন করল যুক্তরাষ্ট্র?
গত রোববার লোহিত সাগরে তিন হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক জাহাজ আটকের অভিযোগ তুলে দুটি যুদ্ধজাহাজের পাশাপাশি এসব সেনা মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার এক বিবৃতিতে মার্কিন পঞ্চম নৌবহর জানিয়েছে, পূর্বঘোষিত সেনা মোতায়েনের অংশ হিসেবে রোববার মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যরা লোহিত সাগরে প্রবেশ করেছেন। তারা সুয়েজ খালে ট্রানজিট ব্যবহার করে লোহিত সাগরে ঢোকেন।
লোহিত সাগরে বিপুল সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে উপসাগরীয় নৌপথে সামরিক শক্তি জোরদার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পথটি মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিশ্বব্যাপী তেল ব্যবসার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর দাবি, গত দুই বছরে এই অঞ্চলে প্রায় ২০টি আন্তর্জাতিক পতাকাবাহী জাহাজ আটক বা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে ইরান।
বাহরাইনভিত্তিক মার্কিন সেনা কমান্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, লোহিত সাগরে ইউএসএস বাটান ও ইউএসএস কার্টার হল যুদ্ধজাহাজ এসে পৌঁছেছে। এটি পঞ্চম নৌবহরের সামুদ্রিক সক্ষমতা বাড়াবে।
পঞ্চম নৌবহরের মুখপাত্র কমান্ডার টিম হকিন্স বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, এই নৌপথে বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজকে হয়রানি ও আটক করে আসছে ইরান। এর ফলে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড রোধ ও আঞ্চলিক উত্তেজনা কমানোর অংশ হিসেবে মার্কিন সেনাদের মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেন, ওয়াশিংটনের স্বার্থেই এসব সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এই অঞ্চলে মার্কিন সরকারের সামরিক উপস্থিতি কখনো নিরাপত্তা তৈরি করেনি। এই অঞ্চলে স্বার্থ হাসিলে তারা সবসময় অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতায় মদদ দিয়েছে।
মন্তব্য করুন