কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৩ পিএম
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ইরানের শাহেদ-১৩৬ ড্রোন কতটা ভয়ংকর?

ইরানের আলোচিত সুইসাইড ড্রোন। ছবি : সংগৃহীত
ইরানের আলোচিত সুইসাইড ড্রোন। ছবি : সংগৃহীত

বিভিন্ন ফ্রন্টের যুদ্ধে রণাঙ্গন কাঁপাচ্ছে ইরানের তৈরি শাহেদ-১৩৬ ড্রোন। মিত্র রাশিয়াকেও ভয়ংকর এই ড্রোন দিয়েছে তেহরান। রাশিয়ায় এটিকে বলা হয় ‘গেরান-২’। এ ড্রোনটি মূলত সুইসাইড ড্রোন। অর্থাৎ লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করে দেয় নিজেকেই। এর বাইরেও ইরানি এই ড্রোনের রয়েছে আরও বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য। যে কারণে এই ড্রোন পেতে মুখিয়ে থাকে যে কোনো দেশ।

অপ্রতিরোধ্য বাজেট অস্ত্র

একটি রুশ ক্যালিবার ক্রুজ মিসাইলের দাম প্রায় ১০ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি টমাহক মিসাইলের দাম ২০ লাখ ডলার। সেখানে ইরানের তৈরি শাহেদ ১৩৬-এর দাম মাত্র ১০ থেকে ২০ হাজার ডলার! অর্থাৎ এটি একটি গড় আমেরিকান গাড়ির চেয়েও সস্তা।

সোয়ার্ম ড্রোন : একটি ধ্বংসাত্মক কৌশল

এককভাবে না চালিয়ে এই ড্রোনগুলো ‘সোয়ার্ম’ বা দলবদ্ধভাবে ছোড়া হয়। অর্থাৎ, একসঙ্গে ৫ থেকে ১০টি ড্রোন নিক্ষেপ করে। প্রতিপক্ষের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েন করা থাকলেও অন্তত ২-১টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনে সব ধ্বংস করে দেয়।

ইঞ্জিন ও শব্দেই ভয় পায় শত্রুপক্ষ

এটি সস্তা ‘মোপেড ইঞ্জিনে’ চলে। সাধারণত ইজিবাইকে এটি ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের ইঞ্জিন চীন থেকে আমদানি করে ইরান। মজার বিষয় হলো— এই ড্রোনের শব্দ অনেকটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত জার্মান ‘স্টুকা’ বিমানগুলোর মতো, যা শত্রুর মধ্যে ভয় তৈরি করত।

গাইডেন্স সিস্টেম

আমেরিকার জিপিএস সিস্টেম বাদ দিয়ে রাশিয়ার গ্লোনাস প্রযুক্তির সাহায্যে দিক নির্ণয় করে চলে এই ড্রোন। এতে রকেট অ্যাসিস্টেড টেক-অফ প্রযুক্তি রয়েছে, যা দ্রুতগতিতে ড্রোনটিকে লঞ্চ করতে সাহায্য করে।

ফাঁকি দিতে পারে শত্রুর রাডার

স্টেলথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে শাহেদ-১৩৬ ড্রোন। ফলে, রাডার, তাপমাত্রা সিগন্যাল, বা অন্যান্য সেন্সরের মাধ্যমে ড্রোনটি শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া একদম নিচ দিয়ে উড়তে সক্ষম হওয়ায় এটিকে ইন্টারসেপ্ট বা ধ্বংস করাটাও বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়।

রয়েছে সীমাবদ্ধতাও

• গাইডেন্স দুর্বলতা ড্রোনের গাইডেন্স সিস্টেম জ্যাম বা ধ্বংস করা সম্ভব হলে এটি লক্ষ্যচ্যুত হতে পারে। • ধীর গতি এর গতি কম হওয়ায় স্টিংগার বা জ্যাভেলিন মিসাইল দিয়ে এটি ধ্বংস করা সহজ। • অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট প্রতিরোধ জার্মানির জাপার্ড এন্টি-এয়ারক্রাফট গান বা সোভিয়েতের ইউ-২৩ এই ড্রোন প্রতিরোধে কার্যকর।

সীমাবদ্ধতা থাকার পরেও ভয়ঙ্কর

যদিও এককভাবে এই ড্রোনটি ধ্বংস করা সম্ভব, তবে একসঙ্গে পাঁচ বা দশটি ড্রোন লঞ্চ করা হলে একটি অন্তত লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাবেই। এই সস্তা কিন্তু কার্যকর ড্রোন শত্রুকে মনস্তাত্ত্বিক চাপে ফেলতে এবং তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে বাধ্য করছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আলোনসোর ভবিষ্যৎ নিয়ে জরুরি বৈঠকে রিয়াল

স্বামীকে ত্যাগ নয় ,কাছে টেনে নিলেন ভারতীয় অভিনেত্রী

বাঁধ ভেঙে পানির নিচে ৫০০ একর আমন ক্ষেত 

ঢাকা কলেজ ও আইডিয়ালের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

অ্যাশেজের শেষ তিন টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন অজি তারকা

আলুবীজ উৎপাদনে বিপ্লব, টিস্যু কালচারে বছরে ২৫ লাখ প্লান্টলেট

ভোট দিতে প্রবাসী নিবন্ধন ২ লাখ ৭৪ হাজার ছাড়াল

জাপান / এক সপ্তাহের ‘শক্তিশালী ভূমিকম্পের’ সতর্কতা জারি

হেনস্তার শিকার ভারতীয় সংগীতশিল্পী

গুম-নির্যাতনের মামলা / ৩ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে হাজির 

১০

যুবদলের স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতু, ২ ইউনিয়নের ভোগান্তি লাঘব 

১১

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে হাসনাত আব্দুল্লাহ

১২

জন্ম থেকেই হাত নেই, ছোট আরশাদুল পা দিয়েই লেখে

১৩

ডিমেনশিয়ার ৬ শারীরিক লক্ষণ

১৪

নির্বাচনে বিএনপি বেশি আসনে জিতবে বলে মনে করছে ৬৬ শতাংশ মানুষ

১৫

বিরতির পর ফিরলেন কিয়ারা

১৬

দুর্নীতিবাজদের নির্বাচিত করবেন না : দুদক চেয়ারম্যান 

১৭

ইসলামী আন্দোলন থেকে মুফতি হাবিবুরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার

১৮

জগন্নাথপুর মুক্ত দিবস আজ

১৯

ভিভোতে চলছে নিয়োগ

২০
X