কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:২৯ পিএম
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ইরানে কোর্টের সামনে গুলিতে দুই বিচারক নিহত

নিহত দুজন বিচারক ইরানের সুপ্রিম কোর্টের উচ্চপর্যায়ের বিচারক ছিলেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলা পরিচালনা করছিলেন। ছবি : সংগৃহীত
নিহত দুজন বিচারক ইরানের সুপ্রিম কোর্টের উচ্চপর্যায়ের বিচারক ছিলেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলা পরিচালনা করছিলেন। ছবি : সংগৃহীত

ইরানে রাজধানী তেহরানে সুপ্রিম কোর্টের কাছে এক সশস্ত্র হামলায় দুই জ্যেষ্ঠ বিচারক নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এ ঘটনা ঘটে, যা দেশের বিচারকদের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠিয়েছে।

বিবিসি পার্সিয়ান জানিয়েছে, নিহত দুই বিচারক হলেন মোহাম্মদ মোগিসেহ এবং আলি রাজিনি। তারা দুজনই ইরানের সুপ্রিম কোর্টের উচ্চপর্যায়ের বিচারক ছিলেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলা পরিচালনা করছিলেন।

তাদের মধ্যে মোগিসেহ সন্ত্রাসবাদ ও গুপ্তচরবৃত্তিসংক্রান্ত মামলার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ছিলেন, আর রাজিনি জাতীয় নিরাপত্তা অপরাধের ক্ষেত্রে কাজ করতেন। এ হামলা তাদের পেশাদার জীবনের জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হামলায় মোট তিনজন বিচারককে টার্গেট করা হয়েছিল। এর মধ্যে দুজন নিহত হলেও, একজন বিচারক বেঁচে গেছেন। তবে হামলাকারী হামলার পরপরই আত্মহত্যা করে, ফলে তার পরিচয় ও হামলার কারণ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে বার্তাসংস্থা ইরনা জানিয়েছে, হামলার ঘটনা ঘটে তেহরানের আর্ক স্কয়ার এলাকায়, যেখানে সুপ্রিম কোর্টের ভবন অবস্থিত। হামলার পর থেকে সাধারণ মানুষ এবং বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলছেন, একজন সশস্ত্র হামলাকারী কীভাবে এত সহজে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হলো।

ইরানের বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে এক সশস্ত্র হামলাকারী, যে আদালতের বাইরে বিচারকদের গুলি করে হত্যা করার পর নিজেকে হত্যা করেছে।

তারা আরও জানায়, নিহত দুই বিচারক জাতীয় নিরাপত্তা অপরাধ, সন্ত্রাসবাদ এবং গুপ্তচরবৃত্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন। বিচার বিভাগ তাদের কর্মমুখী জীবনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তারা ছিলেন ‘অভিজ্ঞ ও সাহসী বিচারক।’

বিচার বিভাগ আরও জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হামলাকারীর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে কোনো মামলা ছিল না এবং সে আদালতে কোনো ভিজিটর হিসেবে উপস্থিত হয়নি। এ তথ্য থেকে নতুন প্রশ্ন উঠেছে—হামলাকারী কীভাবে কোর্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এড়াতে সক্ষম হলো এবং তার পেছনে কারা ছিল।

এই হত্যাকাণ্ডের পর ইরানে বিচারকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে সন্ত্রাসবাদ ও গুপ্তচরবৃত্তির বিরুদ্ধে কাজ করা বিচারকদের ওপর হামলা একটি বড় ধরনের সংকেত, যা বিচার ব্যবস্থার ওপর হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।

ইরানের এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, এটি শুধু দুই বিচারকের হত্যা নয়, বরং এটি ইরানের বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা ও সুরক্ষার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখনো পর্যন্ত হামলাকারীর উদ্দেশ্য এবং ঘটনার পেছনে থাকা শক্তির ব্যাপারে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে ইরানি কর্তৃপক্ষ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবি

আফগানিস্তান সফরে গেলেন মামুনুল হকসহ ৭ আলেম

১১ বছর পর ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে স্পেন

সৌদি-পাকিস্তানের চুক্তি নিয়ে আসিফ নজরুলের প্রতিক্রিয়া

একদিনে ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত হলো আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী কোচ স্কালোনির আত্মজীবনী

শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে চার বিভাগে বর্ষণের শঙ্কা, গরম কমবে না

বিজিবিতে চাকরি পেলেন সেই ফেলানীর ভাই

পিজ্জা’র একপাশে ভারত একপাশে পাকিস্তান, আছে বিশেষ বৈশিষ্ট্যও

৯ দিনের সরকারি সফরে পাকিস্তান গেলেন স্বরাষ্ট্র সচিব

১০

মুশফিকের সামনে ঐতিহাসিক মাইলফলক

১১

আসলেই কি পিসিবির কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন পাইক্রফট?

১২

কুমিল্লায় ফের বাড়ছে স্ক্যাবিসের সংক্রমণ

১৩

গার্দিওলার চোখে ইতিহাসের সেরা কোচ কে?

১৪

সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের শিল্প গ্রুপের দুই কর্মকর্তা গ্রেপ্তার 

১৫

আজ প্রথম প্রেম মনে করার দিন

১৬

এবার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পিটিশনে সই করল হাজারো ইসরায়েলি

১৭

কীভাবে বুঝবেন ডেঙ্গু নাকি চিকুনগুনিয়া হয়েছে

১৮

চাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণা

১৯

নিখোঁজের এক মাস পর শ্বশুরবাড়ির সেপটিক ট্যাংকে মিলল জামাইয়ের লাশ

২০
X