ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক পন্থার প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি জানিয়েছেন, ফ্রান্সের মধ্যপ্রাচ্য নীতি “দ্বিমুখী নয়” এবং একটি ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে প্যারিস।
বুধবার ইন্দোনেশিয়ায় সফরকালে ম্যাক্রোঁ বলেন, “শুধুমাত্র রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমেই আমরা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি।” একইসঙ্গে তিনি ঘোষণা দেন, সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথভাবে নিউইয়র্কে গাজা ইস্যুতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য হবে—ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং ইসরায়েলের নিরাপদ ও স্বীকৃত অবস্থান নিশ্চিত করা।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফ্রান্সের এই অবস্থান ইসরায়েলের ক্ষোভের কারণ হতে পারে এবং পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে মতপার্থক্য আরও বাড়াতে পারে।
এর আগেও, গত ৯ এপ্রিল ফরাসি টিভি চ্যানেল France 5-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন, “আমরা এখন এমন একটি পথ বেছে নিচ্ছি যেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সামনে রয়েছে। আশা করছি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এটি বাস্তবায়িত হবে।”
তিনি আরও জানান, “আমাদের লক্ষ্য হলো, জুন মাসে সৌদি আরবের সঙ্গে জাতিসংঘের অধীনে আয়োজিত কনফারেন্সে নেতৃত্ব প্রদান করা, যেখানে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক ঐকমত্য গড়ে তোলা হবে।”
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৪৫টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং এশিয়ার বেশিরভাগ দেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ দেশ, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া এখনও এই স্বীকৃতি দেয়নি।
গত এপ্রিলেই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনকে পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাবে ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালের ১৫ নভেম্বর প্রথম ইন্তিফাদা চলাকালে ফিলিস্তিনের নেতা ইয়াসির আরাফাত জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
সূত্র: রয়টার্স
মন্তব্য করুন