ইসরায়েলের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ইরান শত শত মিসাইল ছুড়ে হামলা চালিয়েছে। হামলা শুরু হওয়ার পরপরই সাধারণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দৌড়ে পালাতে থাকেন। এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ইসরায়েলে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবিও পাঁচবার বাঙ্কারে আশ্রয় নেন বলে জানিয়েছেন।
শনিবার (১৪ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে হাকাবি বলেন, ‘রাতটা অনেক কঠিন ছিল। আমাকে পাঁচবার আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয়েছে।’
তিনি সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রের কাছে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আজ এখানে শাবাত। এমন দিনে সাধারণত সবকিছু শান্ত থাকে। কিন্তু মনে হচ্ছে আজ তেমন হবে না।’
এর আগে সকালে তেলআবিব ও জেরুজালেমেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জনগণকে সতর্ক করে জানিয়েছে, সবাই যেন নিরাপদ আশ্রয়ে থাকে এবং নতুন নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত বাইরে না বের হয়।
শুক্রবার ইরান ‘ট্রু প্রমিস থ্রি’ নামের সামরিক অভিযানে দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে, এমনকি রাজধানী তেলআবিবেও হামলা চালায়। এই হামলা ছিল ইসরায়েলের একতরফা আগ্রাসনের জবাব।
মাইক হাকাবি, যিনি ইসরায়েলের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত, আগেই বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি বা সমন্বয় ছাড়া ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে কোনো বড় হামলা চালাবে বলে তিনি মনে করেন না। তার ভাষায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে বিশ্বাসের সম্পর্ক আছে। এই সম্পর্ক শুধু মিত্রতার নয়, অংশীদারিত্বের।’
হাকাবি আরও বলেন, ‘আমরা অনেক দেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখি, কিন্তু ইসরায়েল একমাত্র দেশ যার সঙ্গে আমাদের এমন ঘনিষ্ঠতা আছে। গোয়েন্দা তথ্য, সামরিক কৌশল, অস্ত্র এবং অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করি। এর পেছনে আমাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মিল রয়েছে।’
এই নতুন রাষ্ট্রদূত একজন ধর্মীয় রক্ষণশীল খ্রিস্টান। ২০১৭ সালে ইসরায়েল সফরে তিনি বলেছিলেন, ‘পশ্চিম তীর বলে কিছু নেই, এটা জুদিয়া ও সামারিয়া।’ তিনি ফিলিস্তিনি বসতিগুলোকেও ‘শহর’ ও ‘পাড়া-মহল্লা’ বলে উল্লেখ করেন।
২০০৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় হাকাবি বলেছিলেন, আসলে ফিলিস্তিনি বলে কিছু নেই। ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনের কথা উঠলে তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন, আশপাশের আরব দেশগুলো থেকে জমি নিয়ে তা করা যেতে পারে।
সূত্র : প্রেস টিভি
মন্তব্য করুন