ইরান চাইলে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির মতো উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে বলে জানান জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ-এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি। শনিবার (২৮ জুন) তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলায় ইরানের পরমাণু কেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি, তাই কূটনীতিই একমাত্র সমাধান। খবর বিবিসির।
সম্প্রতি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ হামলায় ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করা হলেও, সেগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি বলে জানান গ্রোসি। তার এই বক্তব্য সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবির বিরোধিতা করে। ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’
গত ১৩ জুন ইসরায়েল প্রথম হামলা চালায় ইরানের কিছু পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায়। পরে যুক্তরাষ্ট্রও হামলায় যোগ দেয় এবং ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান নামক স্থাপনাগুলোতে লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করে। যদিও এই হামলাগুলো সম্পর্কে ইরান বিভ্রান্তিকর বার্তা দিয়েছে।
সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, ‘তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি’; অন্যদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, ‘বেশ গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
আইএইএ-এর মতে, এসব হামলার পরও ইরান চাইলে অল্প সময়ের মধ্যে সেন্ট্রিফিউজ পুনরায় চালু করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারবে।
পেন্টাগনের এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিতে পেরেছে। এরই প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প অভিযোগ করেন, মিডিয়া তার সফল সামরিক অভিযানকে খাটো করে দেখাচ্ছে।
তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ইরান আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, তাহলে নতুন করে হামলার কথা অবশ্যই বিবেচনা করা হবে।
হামলার ঘটনার পর ইরান তাদের পার্লামেন্টের মাধ্যমে ঘোষণা দেয়, তারা আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা আংশিকভাবে স্থগিত করছে। তাদের অভিযোগ, সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পক্ষ নিচ্ছে। এর আগে আইএইএ জানায়, ইরান ২০ বছরে এই প্রথমবার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
তবে ইরান এখনো দাবি করছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত।
মন্তব্য করুন