ইরানের দূতাবাসে গিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অপরাধের নিন্দা জানিয়েছেন ইহুদিরা। এ সময় তারা ইরানিদের স্মরণে খাতায় স্বাক্ষর করেন।
শুক্রবার (০৪ জুলাই) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেটের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইহুদিদের একটি প্রতিনিধিদল সম্প্রতি লন্ডনে অবস্থিত ইরানি দূতাবাসে সফর করেছে। এ সময় তারা ইসরায়েলি হামলায় নিহত ইরানিদের স্মরণে খাতায় স্বাক্ষর করেন এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘অপরাধের’ কঠোর সমালোচনা করেন।
ইরানি দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানায়, ওই প্রতিনিধিদল ইরানি জনগণের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে এবং নেতানিয়াহু ও ‘জায়নিস্ট শাসনের’ কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায়।
তারা বলেন, জায়নিস্ট শাসনের অপরাধ কোনো ধর্মীয় ইহুদি সমর্থন করে না। নেতানিয়াহুর আসল উদ্দেশ্য সম্পর্কে জনসাধারণের অজ্ঞতা আমাদের হতবাক করে। তার অপরাধ এবং অমানবিক কাজকর্ম কোনো ধর্মীয় নৈতিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
দূতাবাস ত্যাগের সময় এক ব্যক্তি তাদের ভিডিও ধারণ করে চিৎকার করে বলেন, আপনারা কেন সন্ত্রাসী ইরানি শাসনের পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন? ইরানি ও ইহুদিদের উভয়েরই উচিত এই শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে সরাসরি ও উসকানিমূলক হামলা চালায়। এতে ইরানের উচ্চপর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক নিহত হন। এর প্রায় এক সপ্তাহ পর, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে যুদ্ধে প্রবেশ করে। ইরান এ আচরণকে জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) গুরুতর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে আসছে।
এসব হামলার জবাবে ইরানি সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চলের বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনায় এবং কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল-উদেইদ সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায়।
এরপর দুই দেশের মধ্যে ২৪ জুন ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ শেয়ার করা এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান ও ইসরায়েল একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে চূড়ান্তভাবে সম্মত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই যুদ্ধবিরতি ১২ ঘণ্টা ধরে চলবে, এরপরই যুদ্ধকে সমাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করা হবে।’
ট্রাম্প আরও জানান, প্রথমে ইরান যুদ্ধবিরতি শুরু করবে, এরপর ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েলও আনুষ্ঠানিকভাবে এতে যোগ দেবে। মোট ২৪ ঘণ্টা পর এই ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বিশ্বব্যাপী সমাপ্ত হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।
তিনি লেখেন, যুদ্ধবিরতির সময় দুপক্ষই শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ বজায় রাখবে। আমরা ধরে নিচ্ছি, সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চলবে, যা অবশ্যই হবে। এ জন্য আমি ইসরায়েল ও ইরান উভয় দেশকে সাহস, ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার জন্য অভিনন্দন জানাই।
মন্তব্য করুন