অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার একটি হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। তারা এ হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে এবং ইসরায়েলকে প্রমাণ করতে বলছে যে তারা গাজার হাসপাতালে হামলা চালায়নি।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) গাজায় চলমান সংঘাত নিয়ে একটি বিবৃতিতে দিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে গাজার হাসপাতালে হামলা চালিয়ে কয়েকশ ফিলিস্তিনিকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। খবর রয়টার্সের।
এতে বলা হয়, ‘গাজার হাসপাতালে হামলা চালিয়ে কয়েকশ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে, এটি একটি মর্মান্তিক অপরাধ। ইসরায়েলের উচিত স্যাটেলাইট চিত্র সরবরাহ করা যাতে প্রমাণ করা যায় যে তারা হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল না।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা দেশটির সংবাদমাধ্যমক জানান, হাসপাতালে হামলা একটি মর্মান্তিক ‘অমানবিক’ অপরাধ।
অন্যদিকে গাজায় হাসপাতালে হামলাকে ‘জঘন্য সামরিক অপরাধ’ বলে বর্ণনা করেছেন রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ার দিমিত্রি মেদভেদেভ। এ হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেন তিনি।
মেদভেদেভ তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে লেখেন, ‘গাজা উপত্যকার একটি হাসপাতালে জঘন্য হামলা নিঃসন্দেহে একটি যুদ্ধাপরাধ। এর জন্য চূড়ান্ত দায়ভার তাদের কাঁধে বর্তায় যারা বিভিন্ন মহাদেশের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধের জন্য নিষ্ঠুরভাবে লাভবান হচ্ছে, যেমন— যুক্তরাষ্ট্র।’
গতকাল মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গত সপ্তাহে গাজায় ইসরায়েলের বোমা হামলা শুরুর পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাণঘাতী বোমা হামলা।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার গাজার আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রোগী, নারী ও শিশু রয়েছে।
এক বিবৃতি ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো শত শত মানুষ চাপা পড়ে আছে। হামলার ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এটি যুদ্ধাপরাধ।
হামলার পরপর ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটি ভয়াবহ অপরাধ, গণহত্যা। ইসরায়েলকে যে সব সমর্থন করছে এ হামলার দায় তাদেরও রয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা এই হামলা বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, তাদের কাছে এখনো সব তথ্য আসেনি। সম্ভব হলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
জাতিসংঘসহ মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলো হাসপাতালে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ইরান, তুরস্ক, জর্ডানসহ মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন দেশের সরকার-রাষ্ট্রপ্রধানরাও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন