ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলার পর লেবানন সীমান্তে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। ফলে লেবাননের সীমান্তে থাকা ইসরায়েলিরা এখন আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, লেবাননের সাথে উত্তেজনার মধ্যে সীমান্তের ২০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল। পুরো সীমান্ত এলাকা এখন ফাঁকা করে ফেলা হচ্ছে।
সীমান্ত থেকে নিরাপদে সরে আসা কিরআত সীমনা বলেন, কর্তৃপক্ষ তাদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার পর তিনি তার স্বজনদের সাথে অন্য একটি শহরের ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে সাক্ষাৎ করেন। তবে লেবাননের সাথে হামলা-পাল্টা হামলার কারণে এখানে তিনি নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন । এ ছাড়া কতটা সময় এ আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে হবে তা নিয়েও তিনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
জিহাভিত নামের আরেকজন জানান, যুদ্ধের কারণে এখানকার সব মেডিকেল অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করা হয়েছে। তিনি নিজেও ক্যান্সারের রোগী। তিনি বলেন, আমি এখন এসবের কোনো উত্তর খুঁজে পাচ্ছি না। এখানে কথা বলার কেউ নেই। আমি প্রথমে দুর্বলদের সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। আমি জানি যে, বাকিদেরও সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে আমি কারও সাড়া পাচ্ছি না।
ইফরাত নামের আরেকজন বলেন, সরিয়ে আনা নতুন আশ্রয়কেন্দ্রে কেউ নিরাপদ বোধ করছেন না। তিনিও জায়গাটিকে নিজের তিন বছরের জমজ সন্তানদের জন্য নিরাপদ মনে করছেন না। এখানের নিয়ম অনুসারে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দরজা বন্ধ করাও নিষিদ্ধ।
ওই নারী বলেন, তারা সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাদের আশঙ্কা যে, এখানেও তাদের পরিণতি দক্ষিণের মতো ভয়াবহ হতে পারে।
এদিকে লেবানন সীমান্তে অ্যান্টি ট্যাংক মিসাইলের আঘাতে এক ইসরায়েলি রিজার্ভ সেনা নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
নিহত সেনা কর্মকর্তার পদবি ছিল স্টাফ সার্জেন্ট (রিজার্ভ)। তার নাম ওমর বালভা, বয়স ২২। তিনি হার্জলিয়ার আলেকজান্দ্রোনি ব্রিগেডের ৯২০৩তম ব্যাটালিয়নের একজন কমান্ডার ছিলেন।
বালভা আমেরিকা-ইসরায়েলের দ্বৈত নাগরিক ছিলেন। তারা বাবা-মা ইসরায়েলি। তিনি ম্যারিল্যান্ডের রকভিলে বেড়ে ওঠেন। তিনি ইসরায়েলে আইডিএফে যোগদান করেন।
আইডিএফ জানায়, দক্ষিণ লেবানন থেকে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর হামলা রুখে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এদিকে লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত থেকে অনবরত রকেট ও মিসাইল নিক্ষেপ করা হচ্ছে। ইসরায়েলের দিকে তাক করে রাখা হয়েছে অ্যান্টি ট্যাংক মিসাইল।
শনিবার এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানায়, আইডিএফ যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এক্ষেত্রে তারা ইসরায়েলি নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষায় যেটা করা দরকার সেটাই করবে।
মন্তব্য করুন