ইসরায়েলের বিমানবন্দর ও সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা হয়েছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথিরা এ হামলা চালিয়েছে। টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হুথিদের দাবি, হামলার কারণে ইসরায়েলের সেনাঘাঁটি ও বিমানবন্দরের কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত ছিল। তবে হামলার কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি বিদ্রোহীরা।
ইসরায়েল জানিয়েছে, হামলার সময় তাদের আকাশে কোনো সাইরেন বা সতর্কবার্তা বাজেনি। এ ছাড়া বিমানবন্দর ও সেনাঘাঁটি তাদের নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সোমবারের হামলা নিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
হুথির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহইয়া সারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, ইয়েমেনের সামরিক বাহিনী গত কয়েক ঘণ্টায় ইসরায়েলের বিভিন্ন সংবেদনশীল স্থাপনায় বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে। হামলার কারণে ইসরায়েলের সেনাঘাঁটি ও বিমানবন্দর কয়েক ঘণ্টার জন্য হামলা বন্দ ছিল।
বেনামি সূত্রের বরাতে চ্যানেল ১২ টিভি জানিয়েছে, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ছোড়া এসব ড্রোন জর্ডান ভূপাতিত করেছে। এ ছাড়া গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল হুথিদের বেশ কয়েকটি হামলা রুখে দিয়েছে।
এদিকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে হিসাব-নিকাশ কষতে বসেছে বিভিন্ন দেশ। এসব দেশের তালিকায় যেমন বিভিন্ন আরব দেশ রয়েছে, তেমনি রয়েছে অনারব দেশও। গাজায় নির্বিচারে ইসরায়েলি বোমা হামলার প্রতিবাদে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৯টি দেশ তেলআবিব থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এমনকি একটি দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক পর্যন্ত ছেদ করেছে।
গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। হামাসের হামলার জবাবে গাজায় টানা বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। অব্যাহত বোমাবর্ষণের মধ্যেই এবার সেখানে বড় ধরনের স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
গাজা টানা ৩১ দিনের অব্যাহত বোমাবর্ষণে নিহত মানুষের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের প্রায় অর্ধেশই শিশু।
সোমবার (৬ নভেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত গাজায় ১০ হাজার ২২ জন মানুষ নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ হাজার ১০৪ জন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ২৫ হাজারের বেশি মানুষ। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ১৮টি হামলা করেছে ইসরায়েল। এসব হামলায় ২৫২ জন মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া এখনো অনেকের মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। এই সংখ্যা দুই হাজারের মতো হতে পারে। ভারী যন্ত্রপাতি না থাকায় তাদের লাশ উদ্ধার করা যাচ্ছে না।
এ ছাড়া যুদ্ধ শুরুর পর গাজায় পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েলি সেনারা। ফলে সেখানে চরম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি চড়াও হলেও তাতে কর্ণপাত করছে না নেয়ানিয়াহু সরকার। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে ৯টি দেশ।
এই ৯ দেশ হলো—বাহরাইন, বলিভিয়া, চাদ, চিলি, কলম্বিয়া, হন্ডুরাস, জর্ডান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তুরস্ক। এদের মধ্যে বলিভিয়া ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
মন্তব্য করুন