ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই শঙ্কা বহু আগ থেকেই করা হচ্ছে। এবার সেই শঙ্কা আরও জেকে বসেছে। ইসরায়েলের সাথে সংঘাতে জড়াচ্ছে প্রতিবেশী আরেক মুসলিম দেশ লেবানন। বিশেষ করে দেশটির সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর সাথে নেতানিয়াহু সেনাদের চলছে তুমুল লড়াই। গেল ৭ অক্টোবর হামাসের সাথে সংঘাতের দিন থেকে ইসরায়েল সীমান্তে একের পর হামলা চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ। তাদের এমন আচরণকে দুঃসাহস বলছে তেলআবিব। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী রীতিমতো লেবাননকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হিজবুল্লাহ তাদের তৎপরতা না থামালে গাজার মতো পরিণতি হবে লেবাননের রাজধানী বৈরুতও। তবে ছেড়ে কথা বলছে না ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি। তারা বলছে, যে কোনো সময় ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের মাত্রা বাড়াতে হিজবুল্লাহও প্রস্তুত আছে। কিন্তু সংগঠনটি এ ধরনের পদক্ষেপ থেকে রাজনৈতিকভাবে কত দিন এবং কতটা পিছিয়ে থাকবে তা সম্ভবত নির্ভর করবে ইরান ও নাসরাল্লাহর ওপর। হিজবুল্লাহর দাবি, তাদের মাধ্যমে নয়, ইসরায়েলের তরফ থেকেই সত্যিকারের উত্তেজনা বৃদ্ধি ঘটেছে। শনিবার ইসরায়েলি ড্রোন লেবাননের প্রায় ৪৫ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে হামলা করেছে। অবশ্য এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হিজবুল্লাহ প্রধান। তবে নেতানিয়াহুর দেশের সাথে বড় কোনো যুদ্ধে জড়াতে চায় না বলেও মন্তব্য করেন। এদিকে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর শনিবার দ্বিতীয়বারের মতো বক্তব্য দিয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান সাইয়েদ হাসান নাসরাল্লাহ। ভক্ত-সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া এই বক্তব্যে নতুন একটি অস্ত্র বের করার তথ্য সামনে আনেন তিনি। নাসরাল্লাহ বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের অভিযান ও হামলার পরিধি বেড়েছে কয়েক গুণ। ইসরায়েলি বিমান হামলার জবাবে প্রথমবারের মতো উত্তর ইসরায়েলের শহর কিরিয়াত শমোনায় আঘাত হেনেছে হিজবুল্লাহ। এ হামলায় চার ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। তিনি জানান, এসব হামলায় সশস্ত্র ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো বুরকান ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলা চালাতে। হঠাৎ হামাসের রকেট হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই লেবাবন সীমান্তে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত সংঘাতে জড়াচ্ছে হিজবুল্লাহও। এমনকি ওয়াগনার বাহিনীও হামাসের হয়ে যুদ্ধ করতে চায় তেলআবিবের বিরুদ্ধে। এর ফলে এই যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন