গাজায় স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন হাসপাতালের আশপাশে বোমাবর্ষণ করলেও এবার হাসপাতালে ঢুকে পড়েছে তারা। বুধবার (১৫ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, গাজার আল-শিফা হাসপাতালে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলের সেনারা। হাসপাতালের ভেতে তারা তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে।
কাদের আল জানুন নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হাসপাতলে ঢুকে তারা স্মোক বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এতে করে সেখানকার রোগীদের শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে।
তিনি বলেন, সেনারা হাসপাতালের বিশেষায়িত অস্ত্রপচার বিভাগে ঢুকে পড়েছে। তিনি এ কথা বলার পরপর তার সঙ্গে বিবিসির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এর আগে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফা ঘিরে রাখে ইসরায়েলি সেনারা। হাসপাতালের প্রধান প্রধান গেটে ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান নেয় অবস্থান নিয়েছে নেতানিয়াহু বাহিনী। ইসরায়েলি সেনাদের এমন ‘অবরোধের’ মধ্যে হাসপাতালটির জ্বালানি ফুরিয়ে গেছে। জ্বালানির অভাবে হাসপাতালের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে হাসপাতালে ভর্তি নবজাতকসহ রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর প্রহর গুণছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীর অবরোধ ও বিদ্যুতের অভাবে গত তিন দিনে আল-শিফায় ৩২ জন রোগী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে তিনজন নবজাতকও রয়েছে। এ ছাড়া এখনো হাসপাতালের ভেতর সাড়ে ছয়শ রোগী আটকা আছেন। আশরাফ আল-কিদরা নিজেও এই হাসপাতালের ভেতরে আটকা আছেন।
আল-শিফা হাসপাতালের সার্জন ডা. আহমেদ এল মোখল্লালতি বলেন, হাসপাতালের সামনে ইসরায়েলি ট্যাংক অবস্থান নিয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ অবরোধের মধ্যে আছি। এটি সম্পূর্ণ বেসামরিক এলাকা। এখানে শুধু হাসপাতাল ভবন, রোগী, চিকিৎসক ও অন্যান্য বেসামরিক লোকজন রয়েছে। ইসরায়েলি এই অবরোধ বন্ধ করা উচিত।
তিনি বলেন, তারা (ইসরায়েলি সেনারা) পানির ট্যাংকে বোমা মারছে। তারা পানির কুয়ায় বোমা মারছে। অক্সিজেন পাম্পেও বোমা ফেলছে। তারা হাসপাতালের সবকিছুতে বোমা মারছে। এসবের মধ্যে আমরা খুব কষ্টে টিকে আছি। আমরা সবাইকে বলছি, হাসপাতাল আর চিকিৎসার জন্য নিরাপদ জায়গা নয়। আমরা রোগীদের এখানে রেখে তাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছি।
মন্তব্য করুন