ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফায় প্রবেশ করেছেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির একজন সাংবাদিক। ইসরায়েলি হামলার মধ্যেই হাসপাতালের ভেতরে ঢোকার সুযোগ পান তিনি।
এর আগে গত বুধবার আল-শিফা হাসপাতালে হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। তেলআবিব দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছিল, আল-শিফার ভেতর হামাসের কমান্ড সেন্টার, অস্ত্র, বাংকার ও অন্যান্য অবকাঠামো রয়েছে। এই দাবির প্রেক্ষিতে বুধবার সারা দিন হাসপাতালের ভেতর অভিযান চালায় দেশটির সেনারা।
হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে কী উদ্ধার করা হয়েছে, তা দেখাতেই বিবিসির সাংবাদিককে আমন্ত্রণ জানায় ইসরায়েল। সরেজমিনে আল-শিফা পরিদর্শন করে আসার পর এই ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের কাছে বিস্তারিত জানিয়েছেন লুসি উইলিয়ামসন নামে ওই সাংবাদিক।
হাসপাতালে যাওয়ার বর্ণনা দিতে গিয়ে লুসি বলেন, ইসরায়েলি সেনাদের প্রহরায় রাতের অন্ধকারে একটি দেয়াল টপকে হাসপাতালে ঢুকি আমরা। যখন আমি হাসপাতাল কম্পাউন্ডের মধ্য দিয়ে হাঁটছিলাম তখনও ভারী অস্ত্র নিয়ে ইসরায়েলি সেনারা পাহারা দিচ্ছিল। পুরো কম্পাউন্ডজুড়ে শুধু অস্থায়ী তাঁবু, ধ্বংসাবশেষ এবং ঘুমন্ত আহত মানুষ। এক সময় আমরা এমআরআই ইউনিটের একটি করিডোরে পৌঁছাই। সেখানে ইসরায়েলি আর্মির লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন কনরিকাস আমাকে তিনটি ছোট ছোট কালাশনিকভ, গোলাবারুদ এবং বুলেট-প্রুফ ভেস্ট দেখান।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন জানান, তারা কিছু গ্রেনেড এবং প্রায় ১৫টি বন্দুক খুঁজে পেয়েছেন। এ ছাড়া কিছু সামরিক বই ও একটি মানচিত্র দেখান। সেটিতে হাসপাতালে প্রবেশ এবং প্রস্থানের সম্ভাব্য পথগুলো চিহ্নিত করা ছিল। জোনাথন বলেন, হামাস যে সামরিক উদ্দেশ্যে হাসপাতাল ব্যবহার করে এসব তার প্রমাণ। তিনি কিছু কম্পিউটার এবং অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধারের কথাও জানান, যেগুলোর মাধ্যমে জিম্মিদের বিষয়ে আশানুরূপ অগ্রগতি হবে বলে বিশ্বাস তার।
তবে লুসি জানান, হাসপাতালের ভেতরে উদ্ধার হওয়া শক্তিশালী অস্ত্র বা কোনো ধরনের অস্ত্র ভাণ্ডার দেখাতে পারেনি ইসরায়েলি সেনারা। এর অর্থ হচ্ছে—হাসপাতালের ভেতর হামাসের কমান্ড সেন্টার থাকার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এদিকে হাসপাতালের ভেতর ইসরায়েল অস্ত্র পাওয়ার যে দাবি করেছে সেটি ‘মিথ্যা এবং নিম্নমানের প্রোপাগান্ডা’ বলে বিবৃতি দিয়েছে হামাস।
মন্তব্য করুন