সাহিত্যে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করেছে রয়েল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) তার নাম ঘোষণা করা হয়।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন হাঙ্গেরিয়ান লেখক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। আকর্ষণীয় ও দূরদর্শী রচনার জন্য এবং এ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখায় তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
সুইডিশ একাডেমি বলেছে, তার লেখনী বৈশ্বিক ভয়াবহতার মধ্যে শিল্পের শক্তিকে পুনরায় নিশ্চিত করেছে। তিনি মধ্য ইউরোপীয় সাহিত্যের একজন মহাকাব্যিক লেখক। তার সাহিত্যকর্ম বিশ্বখ্যাত সাহিত্যিক কাফকা থেকে শুরু করে থমাস বার্নহার্ডের মতো লেখকদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে। ফলে এ বছর পুরস্কারের জন্য তাকে বাছাই করা হয়।
লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের জন্ম ১৯৫৪ সালের ৫ জানুয়ারি হাঙ্গেরির গিউলায়। তিনি সারা জীবন সাহিত্য সাধনায় মগ্ন ছিলেন। তিনি হাঙ্গেরি, ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান, সুইডিশসহ বিভিন্ন ভাষায় সাহিত্য রচনা করেন।
গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার লেখিকা হান কাং সাহিত্য পুরস্কার জিতেছিলেন। ট্রমা মোকাবিলা এবং মানব জীবনের ভঙ্গুরতা কাব্যিক গদ্যে তুলে আনার জন্য তিনি পুরস্কৃত হন। হান ছিলেন প্রথম দক্ষিণ কোরিয়ার লেখিকা এবং ১৮তম নারী যিনি নোবেল সাহিত্য পুরস্কার জিতেছেন।
এদিকে রসায়ন বিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর নোবেল পেয়েছেন সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন ও ওমার এম ইয়াগি। ‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ ডেভেলপের কারণে তাদের নোবেল দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি।
বুধবার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
নোবেল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, নোবেল পাওয়া এ তিনজন বড় স্পেসসহ এমন কিছু আণবিক কাঠামো তৈরি করেছেন। যেগুলোর মধ্য দিয়ে বিভিন্ন গ্যাস এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ সহজে চলাচল করতে পারে। এই কাঠামো বা জিনিসগুলোর নাম হলো ‘মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কস’। এগুলো ব্যবহার করে মরুভূমির বাতাস থেকেও পানি সংগ্রহ, কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস ধরে রাখা, বিষাক্ত গ্যাস জমিয়ে রাখা এবং বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার কাজও করা যায়।
তাদের বানানো এ কাঠামোতে ধাতব আয়নগুলো কোনার খুঁটির মতো কাজ করে। আর সেগুলোকে যুক্ত করা হয় লম্বা লম্বা জৈব (কার্বনভিত্তিক) অণু বা মলিকিউল দিয়ে। এই ধাতব আয়ন ও অণুগুলো একসঙ্গে মিলে এমন এক ধরনের স্ফটিক তৈরি করে যার ভেতরে অনেক বড় বড় গহ্বর বা ছিদ্র থাকে। এই ছিদ্রযুক্ত পদার্থগুলোকেই মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কস বলা হয়।
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিজ্ঞানী— জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ. দেবোরে এবং জন এম. মার্টিনিস। কোয়ান্টাম মেকানিক্সে যুগান্তকারী গবেষণা ও উদ্ভাবনী কাজের জন্য এ বছরের সর্বোচ্চ বৈজ্ঞানিক সম্মাননা দেওয়া হয়েছে তাদেরকে।
সুইডিশ উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছানুযায়ী ১৯০১ সাল থেকে এই পুরস্কার প্রদান শুরু হয়। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারের মধ্যে অন্যতম হলো এই নোবেল পুরস্কার।
মন্তব্য করুন