

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডি বিচে ভয়াবহ হামলার আগে নিজেদের পরিবারকে বিভ্রান্ত করেছিলেন অভিযুক্ত বাবা ও ছেলে। পুলিশ ও গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ২৪ বছর বয়সী নাভিদ আকরাম এবং তার বাবা সাজিদ আকরাম পরিবারকে জানিয়েছিলেন, তারা সপ্তাহান্তে জার্ভিস বে-তে মাছ ধরতে যাচ্ছেন।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা সিডনির ক্যাম্পসি এলাকার একটি ছোট ধূসর ইটের বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। এ বাড়িটি স্বল্পমেয়াদি ভাড়াভিত্তিক আবাসন হিসেবে ব্যবহৃত হতো। রোববার বিকেলে নাভিদের মায়ের সঙ্গে শেষবার ফোনে কথা হয়। তিনি জানান, ছেলে তাকে বলেছিল তারা সাঁতার ও স্কুবা ডাইভিং করেছে এবং গরমের কারণে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে সাজিদ এবং পরে নাভিদ ক্যাম্পসির ব্রাইটন অ্যাভিনিউয়ের একটি বাড়ি থেকে বের হন। কালো পোশাক পরা নাভিদ গাড়ির পেছনে কিছু সামঞ্জস্য করে রুপালি রঙের একটি হ্যাচব্যাক গাড়িতে উঠে পড়েন। এরপর গাড়িটি প্রায় ৪০ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়ে পূর্ব দিকে রওনা দেয়। এর ৯০ মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে বন্ডি বিচে গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা।
পুলিশের অভিযোগ, বেকার ইটশ্রমিক নাভিদ আকরাম এবং ফল বিক্রেতা সাজিদ আকরাম হানুক্কাহ উদযাপনরত মানুষের ভিড়ের ওপর নির্বিচারে গুলি চালান। এই হামলায় ১৬ জন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন। এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশের গুলিতে সাজিদ নিহত হন। নাভিদও গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ গাড়ির ভেতর একটি পাইপ বোমা সদৃশ বিস্ফোরক উদ্ধার করে, যা পরে নিষ্ক্রিয় করা হয়। গাড়িতে একটি আইএস পতাকা থাকার তথ্যও পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয় এবং পরদিন ক্যাম্পসির ভাড়া বাড়ি থেকে আরও দুটি অস্ত্র জব্দ করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক জানান, সাজিদ আকরাম ১৯৯৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। পরে পার্টনার ভিসা এবং একাধিকবার রেসিডেন্ট রিটার্ন ভিসা পান। নাভিদ আকরাম অস্ট্রেলিয়াতেই জন্মগ্রহণ করেন।
নাভিদের মা বলেন, তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে তার ছেলে এমন সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে পারে। তার কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নেই। সে বাইরে ঘোরে না, মাদক বা মদ্যপান করে না। কাজ, বাড়ি আর ব্যায়াম—এই ছিল তার জীবন। এমন ছেলে সবাই চাইবে।
মন্তব্য করুন