পেশাগত কাজের জন্য গত বছরের এগারো মাসে ৩২০ জন সাংবাদিককে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। গত তিন দশকের বেশি সময়ের মধ্যে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এই তালিকায় ইসরায়েল প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের অন্যতম কারাগার হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
সিপিজে তাদের প্রতিবেদনে জানায়, বার্ষিক ‘জেল শুমারি’ অনুসারে ১৯৯২ সালে সাংবাদিক গ্রেপ্তারের তথ্য নথিভুক্ত শুরু করার পর থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল। গার্ডিয়ানের তথ্য অনুসারে বর্তমানে ইসরায়েলের কারাগারে ১৯ ফিলস্তিনি সাংবাদিক বন্দি আছেন। এ হিসেবে প্রথমবারের মতো দেশটি তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে। ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইল-গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৮০ জনেরও বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তবে গাজা কর্তৃপক্ষের হিসেবে, এ সংখ্যা শতাধিক।
সিপিজের রেকর্ড অনুসারে, ২০২৩ সালে চীন ৪৪, মিয়ানমার ৪৩ এবং বেলারুশ ২৮ জন সাংবাদিককে জেলে পাঠিয়ে তালিকায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দেশ। এর পরেই ২২ জনকে জেলে পাঠিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে রাশিয়া, ১৯ জনকে কারাবন্দি করে পঞ্চম স্থানে ভিয়েতনাম এবং ১৭ জনকে বন্দি করে সপ্তম স্থানে আছে ইরান।
সিপিজে বলছে, এটি এমন একটি বিশ্ব যেখানে সাংবাদিকরা নিয়মিতভাবে রাজনৈতিক নেতাদের নিন্দার মুখোমুখি হন। তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ সাংবাদিককে তাদের সমালোচনামূলক কভারেজের কারণে প্রতিশোধ হিসেবে ‘মিথ্যা সংবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের মতো রাষ্ট্রবিরোধী’ অভিযোগের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। বিশ্বের ৬০ জনেরও বেশি সাংবাদিককে কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক করা হয়েছে।
সিপিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জোডি গিন্সবার্গ বলেছেন, বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্ববাদ কতটা বিস্তৃত তা আমাদের এই গবেষণার মাধ্যমে জানা যায়। সমালোচনামূলক প্রতিবেদন বন্ধ করতে এবং জনসাধারণের জবাবদিহিতা রোধ করতে সরকারগুলো বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে আমরা এখন একটি সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি। সাংবাদিকরা যাতে স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করতে পারে সেটি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। না হলে আইনের বেড়াজালে সাংবাদিকদের এভাবেই কণ্ঠরোধ করা হবে।
মন্তব্য করুন