পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে শনিবার (৫ আগস্ট) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি করাগারে রয়েছেন।
শনিবার দুপুরে পাঞ্জাব থেকে গ্রেপ্তারের পর বর্তমানে তাকে পাঞ্জাবের কুখ্যাক অ্যাটক কারাগারে নেওয়া হয়েছে। খবর জিও নিউজের।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাটক কারাগারে জঙ্গিদের রাখা হয়। কারাগারটিতে অতি কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। কড়া নিরাপত্তার কারণে ইমরান খানকে এ কারাগারে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন : যে দুটি পথ খোলা ইমরান খানের
জঙ্গিদের সঙ্গে একই কারাগারে থাকলেও ইমরান খানকে দেওয়া হয়েছে বিশেষ মর্যাদা। তিনি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে উন্নত সেলে রয়েছেন।
কারা সূত্র জানিয়েছে, সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে যে সেলে রাখা হয়েছে সেখানে এসির ব্যবস্থা নেই। তবে ফ্যান, বিছানা, টয়লেট ও গোসলখানা রয়েছে। কুখ্যাত এ কারাগারে ইমরান খান ছাড়া পাকিস্তানের অন্য কোনো প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না।
কুখ্যাত এ কারাগারটিতে ইমরান খানের আগে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নেওয়াজ (পিএমএল-এন) নেতা নেওয়াজ শরিফ ও পাকিস্তান পিপলস পাটির (পিপিপি) কো-চেয়ারম্যান আসিফ জারদারি বন্দি ছিলেন।
এদিকে তোশাখানা মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খানকে গ্রেপ্তার দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইমরান খানের গ্রেপ্তার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে এক মেইল বার্তায় এ কথা জানায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
অন্যদিকে মামলার রায় প্রত্যাখ্যানে করেছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কোরেইশি বলেন, সরকার ‘প্রচণ্ড ভীত’ হয়ে আদালতের মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পূর্বপরিকল্পিত।
জিও টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কোরেইশি বলেন, আমি আদালতের এ রায়কে প্রত্যাখ্যান করছি। এ রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং পূর্ব পরিকল্পিত। এটি আগে থেকেই অনুমেয় ছিল।
ইমরান খানকে উদ্ধৃত করে দলের ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, তিনি (ইমরান খান) আগেই বলেছিলেন তাকে গ্রেপ্তার করতে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা আমাকে অযোগ্য প্রমাণিত করতে বদ্ধপরিকর। এটি সমাবেশকে কেন্দ্র করে নেওয়া পদক্ষেপেই প্রমাণিত হয়েছে।
ইমরান খানের আইনবিষয়ক মুখপাত্র নাঈম হায়দার পাঞ্জোথা জানান, অ্যাটক কারাগারটি (ইমরান) আইনজীবীদের পাশাপাশি আশপাশের স্থানীয়দেরও যাওয়ার অনুমতি নেই। ফলে তারা ইমরান খানকে খাবার দিতে বা আইনি নথিতে স্বাক্ষরের ব্যবস্থা করতে পারেননি।
গত শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে ইমরান খানকে তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এরপর তাকে লাহোরের জামান পার্কের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে পাঞ্জাব পুলিশ।
মামলার রায় ঘোষণার সময় বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার বলেন, ‘এ মামলায় ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তিনি ইচ্ছা করে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের কাছে জাল তথ্য দেন এবং দুর্নীতির জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এ জন্য তাকে নির্বাচন আইনের ১৭৪ ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’
মন্তব্য করুন