পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সতর্ক করে বলেছেন, ভারতের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এই অঞ্চলকে পারমাণবিক সংঘাতের দিকে বিপজ্জনকভাবে ঠেলে দিতে পারে। কারণ, ইসলামাবাদ সীমান্ত হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচলিত। ভারতের এ ধরনের হামলাকে ‘যুদ্ধের কাজ’ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান।
বুধবার (৭ মে) জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিফ সতর্ক করে বলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তান এবং আজাদ কাশ্মীরে ভারতের বিমান হামলার পর উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি খুবই বাস্তব।
পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্স (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সমন্বিত হামলায় কমপক্ষে ছয়টি স্থান আক্রান্ত হয়েছে। যার মধ্যে মসজিদ এবং অবকাঠামো প্রকল্পও রয়েছে। এ হামলায় ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং কমপক্ষে ৭১ জন আহত হয়েছেন।
যদিও ভারত দাবি করছে, ৯টি স্থানে হামলা করেছে তারা। এতে নিহত ৭০ জনই সন্ত্রাসী। বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, এই অঞ্চল পূর্বে পারমাণবিক হুমকির মুখোমুখি হয়েছে — এবং আমরা আরেকটি কৌশলগত সংঘাতের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। ভারত বর্তমানে একটি বড় অভ্যন্তরীণ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাদের আগ্রাসন পুরো অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তাকে বিপন্ন করছে।
এদিকে
ভারতের বিমান হামলায় নিহত ব্যক্তিদের ‘প্রতিটি রক্তের ফোঁটার’ প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলে অঙ্গীকার করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। এ ছাড়া তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ করার কারণে শত্রুকে কাপুরুষ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
বুধবার (৭ মে) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই অঙ্গীকার করেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ডন।
শেহবাজ বলেন, ‘এটি সেই কাপুরুষ শত্রু, যারা নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ করে এবং নিজেকে আরও শক্তিশালী মনে করে। কিন্তু আমরা গত রাতে প্রমাণ করেছি যে পাকিস্তান জানে কীভাবে তার প্রতিরক্ষায় উপযুক্ত জবাব দিতে হয়। জাতি সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতা ও শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান বিমানবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর এত ক্ষতি করেছে যে তারা এই ক্ষত “সহজে সারতে পারবে না”।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর শত্রুকে নতজানু করতে “মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছে”। আল্লাহর কৃপায়, আমাদের বিমানগুলো আকাশে এমন ঝড় তুলেছিল যে শত্রুরা চিৎকার করে উঠল। ভারতের গর্ব ছিল, এমন পাঁচটি যুদ্ধবিমান এখন কেবল ছাই ও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।’
‘ভারতের কাপুরুষোচিত আক্রমণে ২৬ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছে। আমরা মাত্র সাত বছর বয়সী এক শিশু ইরতাজা আব্বাসের জানাজা আদায় করেছি।’
ভারতকে তাদের বিমান হামলার ‘পরিণাম ভোগ করতে হবে’ হুঁশিয়ার করে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ‘হয়তো তারা ভাবছিল আমরা পিছু হটব, কিন্তু তারা ভুলে গেছে যে এটা এমন একটা জাতি, যারা তাদের দেশের জন্য লড়াই করতে জানে।’
মন্তব্য করুন