কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে সাহায্য করেছে চীন ও তুরস্ক

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, চীনের প্রেসিডেন্ট শি-জিনপিং, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি : সংগৃহীত
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, চীনের প্রেসিডেন্ট শি-জিনপিং, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের সীমান্তে সাম্প্রতিক সংঘাতে একসাথে একাধিক প্রতিপক্ষের মোকাবিলা করতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির উপ-সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিং। তার ভাষায়, সামনে দৃশ্যমান শত্রু ছিল পাকিস্তান, কিন্তু বাস্তবে এই লড়াইয়ে পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিল চীন ও তুরস্কও।

ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (FICCI) একটি সামরিক প্রযুক্তি বিষয়ক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, `সীমান্ত একটাই, কিন্তু শত্রু ছিল তিনটি। লড়াইয়ে পাকিস্তানকে পেছন থেকে চীন ও তুরস্ক সক্রিয়ভাবে সহায়তা করেছে।’

জেনারেল রাহুলের বক্তব্যে উঠে আসে, পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে শুধু প্রচুর পরিমাণে সামরিক সরঞ্জামই পায়নি, বরং এই যুদ্ধে চীনা অস্ত্র ও প্রযুক্তির কার্যকারিতা যাচাইয়ের ‘পরীক্ষাগার’ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে। তার ভাষায়, ‘গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, পাকিস্তান যে সব অস্ত্র পেয়েছে, তার ৮১ শতাংশ এসেছে চীন থেকে। চীন এখানে সেই পুরনো প্রবাদ অনুসরণ করেছে— ধার করা ছুরি দিয়ে হত্যা করা।’

তিনি বলেন, চীন নিজের সীমান্তে সরাসরি জড়িয়ে পড়ার চেয়ে পাকিস্তানকে ব্যবহার করে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টির পথ বেছে নিয়েছে। লাদাখের উত্তরের সীমান্তে সরাসরি কাদা ছোড়াছুড়ির বদলে তারা পাকিস্তানকে ‘যন্ত্রণা দেওয়ার অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল জানান, পাকিস্তানকে কৌশলগতভাবে সহায়তা করেছে তুরস্কও। সংঘাতের সময় বিভিন্ন ধরনের ড্রোন এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি পাকিস্তানিদের সঙ্গে ছিল বলে জানান তিনি। তার দাবি, তুরস্কের সরবরাহকৃত ড্রোন যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি, চীন নিয়মিতভাবে উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) ব্যবহার করে পাকিস্তানকে সামরিক তথ্য সরবরাহ করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

‘অপারেশন সিঁদুর’ থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা ও শিক্ষার আলোকে ভবিষ্যতের যুদ্ধের প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত তা নিয়েও বক্তব্য দেন জেনারেল রাহুল। এ সময় তিনি কিছু সমালোচনাও করেন খোলামেলাভাবে।

তার মন্তব্য ঘিরে ভারতের রাজনীতিতে বিতর্কের ঢেউ উঠেছে। বিরোধী কংগ্রেস পার্টি চীনের প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছে। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, পাকিস্তানকে সাহায্যের ক্ষেত্রে চীনের ভূমিকা নিয়ে এতদিন যেসব তথ্য কেবল সংবাদপত্রে এসেছে, তা এবার প্রকাশ্যে তুলে ধরেছেন উপ-সেনাপ্রধান।

তিনি আরও বলেন, এই সেই চীন, যারা ২০২০ সালের ১৯ জুন লাদাখে ভারতের স্থিতাবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দিয়েছিল, অথচ সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাদের কার্যত ক্লিনচিট দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনাপূর্ণ। তবে এবার চীন ও তুরস্কের সরাসরি জড়িত থাকার দাবি ভারতীয় সামরিক মহলে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যার কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া আরও গভীর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র : বিবিসি

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কর্মী নিয়োগে বাংলাদেশ-সৌদি আরব প্রথমবারের মতো চুক্তি স্বাক্ষর

সরকারি অনুষ্ঠানে মুজিব শতবর্ষের লোগো সংবলিত লিফলেট বিতরণ

ইসলামী ব্যাংকে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী নিয়োগের দাবি

ফুটবলের সঙ্গে আবেগ-ভালোবাসা মিশে আছে : বাসস চেয়ারম্যান

আন্দোলনের মুখে শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া নিয়ে নতুন প্রস্তাব

পবিত্র কোরআন অবমাননার বিচারের দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ব্লাড সুগার বাড়ানো থেকে রক্ষা পেতে বাদ দিন সকালের ৪ খাবার

আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, চার ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে

শেখ হাসিনার বিষয়ে দুই দেশকে কী করতে হবে, জানালেন বিক্রম মিশ্রি

দাফনের ১৯ দিন পর স্কুলছাত্রীর লাশ উত্তোলন

১০

ভালোবাসার শিখরে থেকেই বিদায় নিতে চান তাহসান

১১

ছাত্রদলে যোগ দিলেন বৈষম্যবিরোধীর পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী

১২

বিচ্ছেদের পথে থাকে যেসব ছোট ছোট কারণ

১৩

দেশের জন্য উৎসর্গ প্রাণ, বাবার দেখা হলো না সন্তানের মুখ

১৪

সব দল একমত হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়া সম্ভব : গোলাম পরওয়ার

১৫

ডা. আজিজুর রহমান মারা গেছেন

১৬

নির্বাচনী জোটে যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

১৭

তারেক রহমানের বক্তব্যের প্রশংসায় শিশির মনির

১৮

বিসিবি নির্বাচন / ভোট গণনার সময় যে বার্তা দিলেন তামিম

১৯

ব্রহ্মপুত্র নদে ভেসে আসছে হাজার হাজার গাছের গুঁড়ি

২০
X