কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫, ০৯:১৭ পিএম
আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, ১১:১৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি, স্যাটেলাইট চিত্রে যা দেখা গেল

ভারত-পাকিস্তান পরষ্পরের ক্ষয়ক্ষতির দাবি করা জায়গাগুলো। ছবি : সংগৃহীত
ভারত-পাকিস্তান পরষ্পরের ক্ষয়ক্ষতির দাবি করা জায়গাগুলো। ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চারদিনের সামরিক সংঘর্ষ ছিল গত অর্ধ-শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে বড় ধরনের লড়াই। উভয় দেশই ড্রোন ও মিসাইল ব্যবহার করে একে অপরের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে এবং বড় ধরনের ধ্বংস সাধনের দাবি করেছে। তবে সত্যিকারার্থে এই ক্ষয়ক্ষতি কতটা তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

এ বিষয়ে উভয় দেশের দাবি ও উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস। সেখানে তুলে ধরা উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, দু-দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বিস্তৃত হলেও বাস্তব ক্ষয়ক্ষতি ছিল সীমিত। ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশ থেকে ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি ততটা হয়নি যা তারা দাবি করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের চেয়ে পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনাগুলোর ক্ষতির পরিমাণ বেশি। উপগ্রহ চিত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি ঘাঁটিতে ভারতের নিখুঁত হামলার প্রমাণ মিলেছে। করাচির কাছে ‘ভোলারি এয়ার বেসে’ একটি হ্যাঙ্গারে আঘাতের দাবি করে ভারত, এবং চিত্রে সেখানে স্পষ্ট ধ্বংসচিহ্ন দেখা গেছে।

সবচেয়ে সংবেদনশীল লক্ষ্য ছিল ইসলামাবাদের কাছে নূর খান বিমানঘাঁটি, যা পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের খুব কাছে এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিরাপত্তা ইউনিটের কাছাকাছি। সেখানে ভারত রানওয়ে ও অন্যান্য স্থাপনায় হামলা চালায় বলে জানায়। ১০ মে পাকিস্তান রাহিম ইয়ার খান বিমানঘাঁটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়—এটি ভারতের হামলার পরপরই ঘটে।

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সারগোধা বিমানঘাঁটিতেও ভারতীয় বাহিনী দুইটি রানওয়ে অংশে নির্ভুলভাবে ক্ষেপঅস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালায় বলে জানায় ভারত।

অন্যদিকে, পাকিস্তান দাবি করেছে তারা ভারতের অন্তত দুই ডজন সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু করেছে। যদিও ভারত বলছে, চারটি ঘাঁটিতে সীমিত ক্ষতি হয়েছে, তবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পাকিস্তানের দাবিকৃত হামলাগুলোর ক্ষেত্রে তেমন কোনো স্পষ্ট ধ্বংসের প্রমাণ মেলেনি। উদাহরণস্বরূপ, পাকিস্তান দাবি করেছে তারা ভারতের উত্তরাঞ্চলের উদমপুর বিমানঘাঁটি ধ্বংস করেছে। সেখানে এক ভারতীয় সেনার মৃত্যুর খবর পরিবারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হলেও, ১২ মে’র স্যাটেলাইট চিত্রে বড় ধরনের ক্ষতির চিহ্ন দেখা যায়নি।

এই সংঘর্ষে ভারত পাঁচজন সৈন্যের মৃত্যু স্বীকার করেছে, আর পাকিস্তান বলেছে তাদের ১১ জন সৈন্য নিহত হয়েছেন। ভারতের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে বিমান হারানোর ক্ষেত্রে—যদিও সরকারিভাবে সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। পাকিস্তান দাবি করেছে- তারা ভারতের ৫টি বিমান ভূপাতিত করেছে। তবে কূটনীতিক ও সামরিক সূত্রগুলো বলছে অন্তত দুটি বিমান ধ্বংস হয়েছে।

সব মিলিয়ে, এই সংঘর্ষে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলার প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। তবে উভয় পক্ষের বাড়িয়ে বলা বিবৃতি ও ‘বড় ধ্বংসের’ দাবি উপগ্রহ চিত্রের বাস্তবতার সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তেলবাহী ট্রাকের চাপায় ওয়ার্ড ছাত্রদল সভাপতিসহ নিহত ২

স্বাস্থ্য পরামর্শ / গ্লুকোমিটারে রক্তের গ্লুকোজ পরিমাপের প্রয়োজনীয়তা ও পদ্ধতি

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিতে পিছু হটল ভারত, রুশ তেল কেনা বন্ধ

খুলনায় ড্যাব এর প্যানেল পরিচিতি সভা

টানা জয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হার বাংলাদেশের

১৯ টি বিষয়ে ঐকমত্য এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে : অধ্যাপক আলী রীয়াজ

ঢাকায় আ.লীগের গোপন বৈঠক থেকে গ্রেপ্তার ২২, এক সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে

হাসপাতালে গিয়ে বদরুদ্দীন উমরের খোঁজ নিলেন নাহিদ

কুয়েতে ১৩০ বাংলাদেশি শ্রমিক বিপাকে

জামায়াত আমিরকে দেখতে হাসপাতালে নাহিদ ইসলাম

১০

দেশ গড়তে আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : তারেক রহমান

১১

‘এই এদের ধরেন তো’, সেই ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি

১২

চট্টগ্রামে ভূমিকম্প, আতঙ্কে ছোটেন অনেকে

১৩

শেষ সময়ে ঐকমত্য কমিশনের সভা বর্জন করল বাম দলগুলো

১৪

বিশ্রাম চান না মেসি

১৫

পল্লবী এলাকায় চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরির নির্দেশ আদালতের

১৬

‘আমি তোকে বিয়ে করিনি, এতদিন অভিনয় করেছি মাত্র’

১৭

ক্ষমতার লোভে জুলাইকে বিক্রি করা যাবে না : রাশেদ প্রধান

১৮

বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা সম্পর্ক আর দৃঢ় করার সুযোগ রয়েছে

১৯

তালিকাভুক্তিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আইসিবির সভা

২০
X