ভারতকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করে কাশ্মীরসহ সব বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে অর্থবহ সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান।
শনিবার (২৪ মে) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক উন্মুক্ত বিতর্ক সভায় ভারতের বক্তব্যের জবাবে এ আহ্বান জানান জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী মিশনের মানবাধিকার কাউন্সিলর সায়মা সেলিম। খবর জিও নিউজ।
তিনি বলেন, ভারত বিভ্রান্তিকর তথ্য, অস্বীকার ও সত্য বিকৃতির আশ্রয় নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করছে।
সায়মা সেলিম বলেন, কোনো বিভ্রান্তিই সত্যকে ঢেকে রাখতে পারবে না। ভারত সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসনে লিপ্ত হয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাস ও হত্যাকাণ্ডের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগাম অঞ্চলে পর্যটকদের ওপর হামলার পর মোদি সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একতরফা অভিযোগ তুলে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিতের পথে হাঁটে- এমন অভিযোগ তুলে সায়মা বলেন, ভারত এমনকি সেই নদীগুলোর প্রবাহ বন্ধ করতে চাইছে, যেগুলো পাকিস্তানের ২৪ কোটি মানুষের জীবনরেখা।
তিনি বলেন, জল কোনো রাষ্ট্রীয় অস্ত্র নয়। ভারত যদি এই ঘটনায় নির্দোষ হতো, তবে একটি বিশ্বাসযোগ্য, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক তদন্তে সম্মত হতো। কিন্তু তারা তা করেনি।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে একটি পর্যটন এলাকায় হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়। ভারত এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে, যদিও কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। ইসলামাবাদ এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে।
কাউন্সিলকে সায়মা জানান, ৬ থেকে ১০ মে পর্যন্ত ভারত বিনা উসকানিতে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বেসামরিক এলাকায় হামলা চালিয়েছে। এতে ৭ নারী ও ১৫ শিশুসহ অন্তত ৪০ জন প্রাণ হারান এবং আরও ১২১ জন আহত হন, যাদের মধ্যে ১০ নারী ও ২৭ শিশু রয়েছে।
সায়মা সেলিম বলেন, ভারত যদি সত্যিই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় বিশ্বাস করে, তবে তার উচিত রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করা, কাশ্মীরি জনগণের ওপর নিপীড়ন থেকে বিরত থাকা এবং জাতিসংঘের প্রস্তাব ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা।
তিনি আরও বলেন, কাশ্মীর ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার একমাত্র পথ হলো অর্থবহ সংলাপে ফিরে আসা।
পাকিস্তানের এই আহ্বান একদিকে ভারতের সাম্প্রতিক নীতিকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে, অন্যদিকে আবার আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমাধানের সম্ভাবনাও উত্থাপন করছে। তবে ভারত এই আহ্বানে কী প্রতিক্রিয়া জানাবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
মন্তব্য করুন