শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ পিএম
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কৃষক থেকে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন জিমি কার্টার

কৃষক থেকে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন জিমি কার্টার
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। ছবি : সংগৃহীত

জর্জিয়ার প্লেইন্সের একটি ছোট্ট গ্রামে ১৯২৪ সালের ১ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন জিমি কার্টার। একজন কৃষক ও দোকানির চার সন্তানের একজন ছিলেন তিনি। প্রারম্ভিক জীবনে তিনি নিজেও কৃষিকাজ করতেন। পরবর্তী জীবনে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট হন।

জিমি কার্টার ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে মানবিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সুনাম অর্জন করেন। কার্টার সেন্টার নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন তিনি। মানবিক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০২ সালে তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া প্রথম মার্কিন নেতা ছিলেন জিমি কার্টার। আমেরিকার জনগণের কাছে কখনও মিথ্যা না বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি।

জিমি কার্টার যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল একাডেমি থেকে ১৯৪৬ সালে স্নাতক পাস করেন। এরপর পারমাণবিক সাবমেরিন কর্মসূচিতে কাজ করেন। পরবর্তী সময় এই চাকরি ছেড়ে পরিবারের বাদাম চাষাবাদের ব্যবসা দেখভালের দায়িত্ব নেন।

কিশোর বয়স থেকেই সাউদার্ন ব্যাপ্টিস্ট সানডে স্কুলের শিক্ষক ছিলেন জিমি কার্টার। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনেও শক্তিশালী নৈতিকতার চেতনা নিয়ে আসেন তিনি। কোনো রাখঢাক ছাড়াই নিজের ধর্মীয় বিশ্বাসের বিষয়টি প্রকাশ করতেন জিমি কার্টার।

জিমি কার্টার একপর্যায়ে কোটিপতি হন। জর্জিয়া থেকে কংগ্রেস সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জর্জিয়ার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান। ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

জিমি কার্টার মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তির মধ্যস্ততায় সহায়তা করেছিলেন। তবে তার সময়ে ইরানে মার্কিন দূতাবাসে ৫২ জন মার্কিন কূটনীতিক ও নাগরিককে জিম্মি করা হয়। এ ছাড়া আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের মোকাবিলা করতেও তাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল।

প্রথম মেয়াদের পর তিনি দ্বিতীয় বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় বার তিনি মাত্র ছয়টি অঙ্গরাজ্যে জয়লাভ করেন। সে সময় রোনাল্ড রিগ্যান তাকে বড় ব্যবধানে পরাজিত করে।

হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর তিনি নিজের হারানো জনপ্রিয়তা ফিরে পেতে কাজ শুরু করেন। তিনি কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। মানবাধিকার রক্ষা, দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে বিভিন্ন দেশে কর্মসূচি, আন্তর্জাতিক সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রচেষ্টা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতিসাধন এবং পরিবেশ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন তিনি। এসব কাজের স্বীকৃতি হিসেবেই নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

বিশ্ববরেন্য এই ব্যক্তিত্ব চলতি বছরের অক্টোবরে তার শততম জন্মদিন পালন করেছেন। গত ১৯ মাস ধরে তিনি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেছেন। তবে বার্ধক্য এবং অসুস্থতার কাছে অবশেষে হার মানলেন তিনি। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের প্লেইনসে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

জিমি কার্টার ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট। সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ‘অসাধারণ নেতা’ আখ্যায়িত করে শোক প্রকাশ করেছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জাবি শিক্ষার্থীদের তথ্য ফাঁস; নেপথ্যে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক

‘ফটোগ্রাফার রাফিদের স্মরণে ফটোগ্রাফি কনটেস্ট আয়োজন করা হবে’

তেলের ডিপোর ট্যাংকে আটকে শ্রমিকের মৃত্যু

অনির্বাচিত সরকার সব কিছুর সমাধান করতে পারে না : যুবদল সভাপতি

ব্যবসায়ীদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে সচেষ্ট সরকার : আইসিটি সচিব

রাজউকের সার্ভারে ঢুকে ভবনের অনুমোদন করিয়ে নিয়েছিল হ্যাকার নিজেই

সরাসরি গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউট ও তদন্তকারী কর্মকর্তারা

জুলাই ঐক্যের বিক্ষোভে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

অধ্যাপক ইউনূস ‘পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন’ : নাহিদ ইসলাম

এবার আসিফ ও মাহফুজের পদত্যাগ দাবি গণঅধিকার পরিষদের

১০

শীতের শুরুতে স্থানীয় নির্বাচন চায় ইসলামী আন্দোলন

১১

ডাকসুর রোডম্যাপ দাবিতে ৩২ ঘণ্টা ধরে অনশনে বিন ইয়ামিন

১২

বই চুরির মামলায় অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার গ্রেপ্তার

১৩

বন্যা না আসতেই ধসে গেল নদী রক্ষা বাঁধ

১৪

বর্তমান পরিস্থিতিতে মির্জা গালিবের ৫ পরামর্শ

১৫

পাকিস্তানকে বিশাল বাঁধ নির্মাণ করে দিচ্ছে চীন

১৬

অর্ধশতাধিক বাড়িঘর বিলীন, আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

১৭

‘কুমির ডেকে আনছেন তা আপনাদেরই খাবে’

১৮

ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় গ্রহণকারী ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর অবস্থান

১৯

চট্টগ্রাম রোটারেক্ট ক্লাবের সভাপতি রাহাত, সম্পাদক ফারহানুল

২০
X