ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্মদিন ও যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর ২৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ওয়াশিংটনে একটি বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। এই কুচকাওয়াজে অংশ নিতে পারে ৬,৬০০ জনেরও বেশি সৈনিক, ১৫০টিরও বেশি সামরিক যান, ৫০টি হেলিকপ্টার, ৭টি ব্যান্ড দল এবং হাজারখানেক সাধারণ মানুষ—এমন তথ্য প্রকাশ পেয়েছে বার্তা সংস্থা এপির হাতে আসা নথি থেকে।
ফক্স নিউজ জানিয়েছে, কুচকাওয়াজটি ১৪ জুন অনুষ্ঠিত হবে, যেদিন ট্রাম্পের জন্মদিন এবং একই সঙ্গে মার্কিন সেনাবাহিনীরও জন্মদিন। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর তার প্রতিষ্ঠার ২৫০বছর পূর্ণ করতে যাচ্ছে। অন্যদিকে ট্রাম্প ৮০ বছরে পদার্পণ করবেন।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুধু সেনা সদস্য নয়, কুচকাওয়াজে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের বিভিন্ন যুদ্ধ—যেমন স্বাধীনতা যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ, দুই বিশ্বযুদ্ধ, ভিয়েতনাম, ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের প্রতীকী উপস্থাপনাও থাকবে। এছাড়াও প্রদর্শন করা হবে ঐতিহাসিক সব সামরিক সরঞ্জামও।
হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরীণ নীতির পরিচালক ভিন্স হ্যালি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট একটি ঐতিহাসিক উদ্যাপন পরিকল্পনা করছেন যা আমাদের স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকারী প্রজন্ম এবং দেশের জন্য আত্মত্যাগ করা সেনাদের সম্মান জানাবে।’
খবরে বলা হয়েছে, ২৯ ও ৩০ এপ্রিল তারিখে তৈরি এই পরিকল্পনা নথিগুলো এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি এবং চূড়ান্ত অনুমোদনও দেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, কুচকাওয়াজের পরিকল্পনা এখনো চলমান রয়েছে এবং এটি হোয়াইট হাউসের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশাল এ আয়োজন করতে গেলে দশ মিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ হতে পারে। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন যান ও সরঞ্জাম দেশজুড়ে বিভিন্ন ঘাঁটি থেকে ওয়াশিংটনে আনতে হবে। তাদের থাকার ও খাবারের ব্যবস্থাও করতে হবে। ট্যাঙ্ক ও ভারী সামরিক যান ব্যবহারের কারণে ওয়াশিংটন ডিসির সড়ক ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে, যা নিয়ে স্থানীয় কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন ৬,৩০০ সেনা, থাকবে ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান, হেলিকপ্টার, ও ঐতিহাসিক সামরিক যন্ত্রপাতি। অংশ নেবেন সেনাবাহিনীর পুরনো সদস্য, সামরিক কলেজের ছাত্ররা। এছাড়াও কুচকাওয়াজে সাতটি সেনা ব্যান্ড এবং প্যারাসুট দলের প্রদর্শনী থাকবে, থাকবে বিভিন্ন যুদ্ধের প্রতীকী উপস্থাপনাও।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প ২০১৭ সালে ফ্রান্সের বাস্তিল দিবসের কুচকাওয়াজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের প্রথম মেয়াদে ওয়াশিংটনে একটি বড় সামরিক কুচকাওয়াজ করতে চেয়েছিলেন। তবে ৯২ মিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য খরচ এবং লজিস্টিক জটিলতায় সেই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়।
সম্প্রতি ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা আবার আমাদের বিজয় উদযাপন শুরু করব!’ ট্রম্প আরও জানান, তিনি ৮ মে-কে ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিজয় দিবস’ এবং ১১ নভেম্বর-কে ‘প্রথম বিশ্বযুদ্ধ বিজয় দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করতে চান।
মন্তব্য করুন