ইরানের বিরুদ্ধে একজোট হতে চায় যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল। দেশটি ইরান ইস্যুতে ইসরায়েলকে তাদের পাশে আনতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বার্তা দিয়েছেন। তাকে এ বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম।
মঙ্গলবার (২৭ মে) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অবস্থান এক করার লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কাছে পৌঁছে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম।
সোমবার ইসরায়েল সফর শেষে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নোম বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে ব্যক্তিগতভাবে পাঠিয়েছেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলার জন্য। এ সফরের উদ্দেশ্য ছিল ইরানের সাথে চলমান আলোচনার বিষয়গুলো নিয়ে আমরা যাতে একমত হতে পারি এবং ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে পারি।
গত রোববার ট্রাম্প বলেন, ইরানের সাথে আলোচনা ভালোভাবেই এগোচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা ইরানের সঙ্গে খুব ভালো আলোচনা করেছি। আগামী এক-দুদিনের মধ্যে ভালো কিছু জানাতে পারব কি না এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত না। তবে আমার মনে হচ্ছে ভালো কিছুই বলব।
এর আগে সিএনএনের এক প্রতিবেদন বলা হয়, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল, যদিও যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন আলোচনাগুলো এখনও চলছে।
ইরান স্পষ্ট জানিয়েছে, ইসরায়েলের যেকোনো হামলার জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, নেতানিয়াহু মরিয়া হয়ে উঠেছেন যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে। যুক্তরাষ্ট্র কী করতে পারবে, আর কী পারবে না তা তিনি ঠিক করতে চান।
ইসরায়েল বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে রয়েছে। তেহরানের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়, তারা শুধু শান্তিপূর্ণ বেসামরিক উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। যা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির (এনপিটি) পরিপন্থি নয়।
নোম আরও বলেন, আমাদের প্রেসিডেন্ট শান্তি চান। তবে তিনি এমন একটি ইরানও চান না, যাদের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা থাকবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটা কখনোই মেনে নেবেন না। তবে তিনি চান নেতানিয়াহুও যেন এই একই দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যকার মূল আলোচনার একটি প্রধান অন্তরায় হচ্ছে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার। যুক্তরাষ্ট্র চায়, ইরান পুরোপুরি তা বন্ধ করুক। কিন্তু ইরান বলছে, এটি তাদের সার্বভৌম অধিকার।
২০১৮ সালে ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ইরান পারমাণবিক চুক্তি (JCPOA) থেকে বের হয়ে যান। এরপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার প্রতিক্রিয়ায় ইরানও তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি জোরদার করে।
সম্প্রতি ইরান জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনো ধরনের অন্তর্বর্তী চুক্তির বিনিময়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থগিত করবে না। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ী বলেন, আমরা আলোচনায় সময় নষ্ট করছি না। আমরা ন্যায্য চুক্তির জন্য আন্তরিকভাবে আলোচনা করছি।
মন্তব্য করুন