শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৫, ১০:২৮ এএম
আপডেট : ২১ জুন ২০২৫, ১২:৪৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ট্রাম্পের হম্বিতম্বির নেপথ্যে কী

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত

সময় যত গড়াচ্ছে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত তীব্র হচ্ছে। ইসরায়েলি বিমান হামলায় আক্রান্ত হচ্ছে ইরানের নতুন নতুন শহর। তেমনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়াচ্ছে ইরান। জ্বলছে ইসরায়েলের তেলক্ষেত্র, গবেষণাগার, সামরিক স্থাপনাসহ আবাসিক এলাকা। দুপক্ষের সংঘাতে বিশ্বও দ্বিধাবিভক্ত। তবে সবাই একমত, সংঘাত বাড়লে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সর্বাত্মক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এমন পরিস্থিতিতেও খেলো করে কথা বলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার ভাষ্য, তিনি চাইলেই সব সমস্যা সমাধান করে দিতে পারেন। ইরানকে দমানো বা কোণঠাসা করার মাধ্যমেই সংঘাত বন্ধের হুঁশিয়ারি তার। অথচ ইসরায়েলের আগ্রাসনবাদের প্রশ্ন ট্রাম্প উড়িয়ে দিচ্ছেন।

বিশ্ব পরিস্থিতি বলছে, ইরান কৌশলগত হরমুজ প্রণালির নিয়ন্ত্রক। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তার প্রক্সি বাহিনী মার্কিনিদের দিশেহারা করে তুলতে সক্ষম। এ ছাড়া ইরানের সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের নিবিড় সম্পর্ক থাকায় ট্রাম্পের দমন-নীতি বাস্তবায়ন ততটা সহজ নয়। তবু ট্রাম্পের হম্বিতম্বির নেপথ্যে কী?

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসলে ট্রাম্প কৃতিত্ব নিতে চান। তিনি এ নিয়ে কথা বলতেও উপভোগ করেন। তার মনোভাব হলো, ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তির আলোচনায় ইউরোপের কোনো ভূমিকা নেই। যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশেষ করে ট্রাম্প নিজেই এ সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম।

ট্রাম্পের বিবৃতিই এ বিষয়ে তার আরও শক্তিশালী অবস্থানের প্রতিফলন। ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে বিমান হামলায় যোগ দেবেন কি না, এ সিদ্ধান্ত তিনি এখনো নেননি। তবে যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন; তিনি বলেছেন, ‘একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ করি না।’ তার মনে, ইরানের বিষয়ে খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সক্ষমতার ধারেকাছে ইরান, তার প্রক্সি বাহিনী বা মুসলিম বিশ্বের সম্মিলিত চেষ্টা টিকবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ মনোতুষ্টি নিছক হেলাফেলা নয়। তিনি ভালো করেই জানেন, আমেরিকা এই অঞ্চলের কমপক্ষে ১৯টি স্থানে স্থায়ী এবং অস্থায়ী উভয় ধরনের সামরিক ঘাঁটির একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে। এর মধ্যে আটটি স্থায়ী ঘাঁটি বাহরাইন, মিশর, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থিত।

এই অঞ্চলে তাদের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি রয়েছে কাতারে। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে বিপুলসংখ্যক মার্কিন সেনা রয়েছে। এখানে অন্তত ১০০ যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি ড্রোন, বোম্বারসহ উন্নত যুদ্ধযান সক্রিয়। ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় এ ঘাঁটি কেন্দ্রীয় কমান্ড সেন্টারের কাজ করে।

এ ছাড়া ইরাক, সিরিয়া, বাহরাইন, ওমান, তুরস্কে মার্কিন ঘাঁটি আছে। এসব ঘাঁটিতে সাধারণ সময়ে প্রায় ৪০-৫০ হাজার মার্কিন সেনা থাকে। তবে বড় কোনো অভিযানের সময়ে তা কয়েকগুণ বাড়ানো হয়। যেমন, ২০০৩ সালে ইরাকে হামলার পর ২০০৭ সালের মধ্যে এসব ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাসংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি।

এসব ঘাঁটি থেকে সহজেই ইরানে হামলা করা সম্ভব। এ ছাড়া কোনো মুসলিম দেশ ট্রাম্পের বিরোধিতা করলে তাদের আক্রমণ করাও সহজ। আর সেজন্যই ঘাঁটি সক্রিয় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি মার্কিন নৌবাহিনীর নতুন ও বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ড ভূমধ্যসাগরে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। শিগগির তা ইরানের দিকে যাত্রা করবে। এ ছাড়া বাইরে থেকে আরও রণতরী আনা হচ্ছে। ইরানের সঙ্গে চূড়ান্ত সংঘাত শুরু হলে সেসব রণতরী থেকে ঘাঁটিগুলোকে প্রয়োজনীয় সাহায্যের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

পেশিশক্তিতে বিশ্বাসী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, চলমান যুদ্ধে ইসরায়েল ইরানের চেয়ে ভালো করছে। ইসরায়েল যখন জয়ের পথে থাকে, তখন তাদের থামানো কঠিন হয়ে পড়ে। ইসরায়েল খুব ভালো করছে যুদ্ধে, আর ইরান তুলনামূলকভাবে কম সফল।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্যে স্পষ্ট হয়, তেল আবিবের সামরিক অভিযানের প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থন অব্যাহত রয়েছে। যাই হোক না কেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে একা ছেড়ে যাবে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: ইরানে ইসরায়েলের হামলা
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাবেক এডিসি শচীন মৌলিক কারাগারে

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা আসছেন শনিবার, যেসব বিষয়ে আলোচনা

সিদ্ধিরগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের শানে রিসালাত সম্মেলন

শেষ দিনেও ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে মতামত দেয়নি ৭ রাজনৈতিক দল

ইউরোপের লিগগুলোতে দল কমানোর প্রস্তাব ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তির

নেপালে মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের প্রচার, তাসনিম জারার ব্যাখ্যা

মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে মৃত্যুর মিছিল, তিন বছরে প্রাণ হারান ১৮৩ জন

স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি 

সুদ দিতে না পারায় বসতঘরে তালা, বারান্দায় রিকশাচালকের পরিবার

দেশ বাঁচাতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে : চরমোনাই পীর

১০

এএসপির বাসায় চাঁদাবাজি-ভাঙচুর, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

১১

জেলের জালে বড় ইলিশ, ৯ হাজারে বিক্রি 

১২

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন নিয়ে নতুন নির্দেশনা

১৩

আগামী সংসদ প্রথম তিন মাস ‘সংবিধান সংস্কার সভা’ হিসেবে কাজ করার প্রস্তাব

১৪

ধরলার তীব্র ভাঙন, টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি

১৫

নেতা ও ভোটারের জবাবদিহিই হবে শ্রেষ্ঠ সংস্কার : মঈন খান

১৬

পাপের ফল ওদের ভোগ করতেই হবে : রাশেদ খান

১৭

ক্ষমা চাইলেন স্বাধীন খসরু 

১৮

স্বাধীনতাবিরোধীরা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : আমিনুল হক

১৯

ঢাকায় উদযাপিত হলো রাশিয়ান পতাকা দিবস

২০
X