কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২১ জুন ২০২৩, ০৯:৩০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর প্রয়াণ দিবস

রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর প্রয়াণ দিবস

আজ ২১ জুন। প্রেম ও দ্রোহের কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৩৩তম প্রয়াণ দিবস আজ। ১৯৯১ সালের এই দিনে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মারা যান তিনি। বাংলাদেশের কবিতায় অবিস্মরণীয় শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম কবি-স্বীকৃতি।

অকালপ্রয়াত এ কবি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সঙ্গে। সাম্যবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্যচেতনা ও অসাম্প্রদায়িকবোধে উজ্জ্বল তার কবিতা। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’—এ নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন—‘দিন আসবেই-দিন সমতার’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাকে দিয়েছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এর খেতাব। একই সঙ্গে তার কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ মূলত কবি হলেও কাব্যচর্চার পাশাপাশি সংগীত, নাটক, ছোটগল্পের ক্ষেত্রেও ছিলেন সমান উৎসাহী। রুদ্র চেয়েছিলেন বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠুক। ফলে ব্যক্তি রুদ্র ও কবি রুদ্রের পুরো শিল্পসাধনা ছিল দেশ, মানুষ ও মনুষ্যত্বের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জন্ম ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশাল রেড ক্রস হাসপাতালে। রুদ্রের মায়ের নাম শিরিয়া বেগম, বাবার নাম শেখ ওয়ালীউল্লাহ। তাদের স্থায়ী নিবাস বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার অন্তর্গত সাহেবের মেঠ গ্রামে, তবে পিতার কর্মস্থল ছিল বরিশাল। তার বাবা পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। দশ ভাইবোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবার বড়। বাড়ির পাশেই ছিল নানাবাড়ি, তাই ছোটবেলার অধিকাংশ সময়ই কবি সেখানে কাটিয়েছেন। আর সেই নানাবাড়ির পাঠশালাতেই তার লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয়। এমনকি লেখালেখির আগ্রহও সৃষ্টি সেখান থেকে। নানাবাড়িতে সে সময় ‘বেগম’ আর কলকাতার ‘শিশুভারতী’ পত্রিকা আসত নিয়মিত। বলাই বাহুল্য, সেই শিশুমনে তৈরি হয়ে গিয়েছিল সাহিত্যপ্রেমী একটা সত্তার। ঢাকা ওয়েস্টএন্ড হাই স্কুল থেকে ১৯৭৩ সালে এসএসসি এবং ১৯৭৫ সালে এইচএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্সসহ এমএ পাস করেন। রুদ্রের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ সাতটি। এর মধ্যে রয়েছে উপদ্রুত উপকূল, ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম, মানুষের মানচিত্র, মৌলিক মুখোশ, ছোবল ইত্যাদি। রুদ্র কিছু গল্প আর গানও লিখেছেন। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ছিলেন জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সম্পাদক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রথম আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশ সংগীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রকাশনা সচিব। বিগত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রুদ্র সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ৩৫ বছরের স্বল্পায়ু জীবনে সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ অর্ধশতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। ১৯৮০ সালে তিনি পেয়েছিলেন মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিখ্যাত ও বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে বিয়ে করেন ১৯৮১ সালে। কিন্তু তাদের এই দাম্পত্য দীর্ঘস্থায়ী হয় না। ১৯৮৬ সালে ঘটে বিবাহবিচ্ছেদ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ট্রেন উদ্ধার শেষে ফেরার পথে প্রাণ হারালেন রেল প্রকৌশলী

সীমান্ত থেকে ২৭৯ ভারতীয় গরু ও মহিষ আটক 

৮০ পয়সার টিকা পেতে গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা!

জুলাই সনদ ঘোষণার আগে ‘নির্বাচন’ প্রশ্নবিদ্ধ হবে : জাগপা

আইইসিসি বাংলাদেশ আয়োজন করছে ‘মাল্টি-ডেস্টিনেশন এডুকেশন এক্সপো ২০২৫’ 

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পাঞ্জাবি গায়ক

পাবনায় ছাত্র হত্যা মামলায় ১৩৬ জনের নামে চার্জশিট 

এখন মন খারাপ হয় না পলকের, লড়তে চান ভোটে

আবর্জনা আপলোড করা কারও কাজ হতে পারে না : পিয়া জান্নাতুল

‘আমি মনে করি না এটা কোনো নির্বাচন ছিল’

১০

পদ্মার ভাঙনে বিলীন স্কুল ভবন, বন্ধ শিক্ষা কার্যক্রম

১১

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় : আমীর খসরু

১২

আমার কষ্টের কথা মা-বাবাকেও বলতে পারি না: দেব

১৩

তেলাপিয়া মাছ খেলে কি সত্যিই বিপদ

১৪

কলকাতার সিনেমা থেকে বাদ তানজিন তিশা

১৫

বুলবুলকে অবৈধ সভাপতি দাবি, ক্রিকেট বর্জনের ঘোষণা ৪৮ ক্লাবের

১৬

ছবি শেয়ার করে কটাক্ষের মুখে অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া

১৭

গাইবান্ধায় নতুন করে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত ৬ জন

১৮

মোবাইলে আফগানিস্তান-বাংলাদেশ ওয়ানডে ম্যাচ দেখবেন যেভাবে

১৯

টানা ৫ দিন বজ্রবৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

২০
X