দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো কাউকে গুম করেও ক্ষান্ত হতো না। দিনের পর দিন গোপন বন্দিশালায় আটকে রেখে চালানো হতো অবর্ণনীয় নির্যাতন। কাউকে গুম করার পর কী কী ধরনের নির্যাতন চালানো হতো, তার একটি চিত্র উঠে এসেছে গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির (গুম-সংক্রান্ত অনুসন্ধান কমিশন) প্রতিবেদনে। গত জুনের শুরুতে সরকারের কাছে দ্বিতীয় অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এই কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার কমিশন ওই প্রতিবেদনের একটি অংশ প্রকাশ করে। যাতে গুমের শিকার ব্যক্তিদের ওপর চালানো অন্তত ১৭ ধরনের নির্যাতনের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
কমিশন প্রতিবেদনে বলেছে, তারা ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত দেশে চালু থাকা গুম ও নির্যাতনের পদ্ধতিগত চর্চা উন্মোচনের চেষ্টা করেছেন, যা রাষ্ট্রযন্ত্রের কিছু অংশ দ্বারা, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হতো।
বিভিন্ন বাহিনীর দায়িত্বশীলরা ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে গুম ও নির্যাতন সম্পৃক্ত আলামত ধ্বংসের চেষ্টা করেছে। তা সত্ত্বেও কমিশন এমন সব তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে যেগুলো ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্যের সঙ্গে মিলে যায়। উদাহরণ হিসেবে কমিশন জানিয়েছে, একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বন্দিশালায় নির্যাতনের জন্য ব্যবহার করা হতো ঘূর্ণায়মান চেয়ার, টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই) মানুষ ঝুলিয়ে রাখার জন্য ব্যবহৃত হতো পুলি-সিস্টেম এবং একাধিক স্থানে ছিল সাউন্ডপ্রুফ ব্যবস্থা (শব্দ নিরোধক), যার ফলে নির্যাতনের সময় ভুক্তভোগীদের চিৎকার বাইরের কেউ শুনতে পারত না।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীদের ‘গুম’ করার কোনো রেকর্ড বা নথি থাকত না। যে কারণে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো দায়মুক্তভাবে নির্যাতন চালাতে পারত বলে জানিয়েছে কমিশন।
পরবর্তীতে জনসমক্ষে হাজির করার আগে নির্যাতনের চিহ্ন লুকাতে কিছু ক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের ওষুধ বা মলম দেওয়া হতো, যাতে ক্ষতচিহ্ন সহজে নজরে না আসে। অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতনের চিহ্ন মুছে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেই তাদের মুক্তি দেওয়া হতো। কমিশন জানিয়েছে, অনেক সময় ভুক্তভোগী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির হয়ে স্পষ্ট নির্যাতনের চিহ্নসহ গুমের কথা জানালেও তা উপেক্ষা করা হতো।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে নির্যাতনের কিছু চিত্র পুনর্নির্মাণ করেছে গুম-সংক্রান্ত অনুসন্ধান কমিশন। যেগুলো কমিশনের প্রতিবেদনে যুক্ত করা হয়েছে।
সর্বব্যাপী অস্বস্তি: শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের সম্মিলিত প্রভাবে ভুক্তভোগীরা দীর্ঘ সময় ধরে চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। তাদের প্রায়ই প্রহরীদের অর্ধেক পরিমাণ খাবার দেওয়া হতো। হাতকড়া পরিয়ে ও চোখ বেঁধে নির্জন সেলে একা রাখা হতো। নিজের ভাগ্যে কী ঘটবে, সেই অনিশ্চয়তার সঙ্গে এই নির্মম অবস্থা নিরবচ্ছিন্ন মানসিক চাপ তৈরি করত।
থাকার জায়গার ভয়াবহ ও অমানবিক অবস্থা: অত্যন্ত ছোট ও সংকীর্ণ কক্ষগুলো বন্দিদের জন্য সর্বোচ্চ অস্বস্তি তৈরি করত। ভুক্তভোগীদের শরীর অস্বাভাবিকভাবে দীর্ঘ সময় রাখা হতো। ৪৬ বছর বয়সী একজন পুরুষ ২০১৫ সালে গুম হওয়ার পর ৩৯১ দিন নিখোঁজ ছিলেন। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যাওয়ার পরে বালিশ সরাই ফেলত। একদম শীতের মধ্যে কম্বল-বালিশ সব সরাই ফেলছে। ... আর এমনি শাস্তি দিত। চেয়ার ছাড়া (খালি পায়ের ওপর ভর দিয়ে) বসায় রাখত।’
ব্যক্তিগত গোপনীয়তাহীন অপমানজনক সেল জীবন: সংকীর্ণ কক্ষ। স্যানিটেশনের জন্য শুধু একটি বিল্ট-ইন প্যান ব্যবহার করতে হতো। এমনকি প্রসাব করা বা মলত্যাগের সময়ও সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারির মধ্যে থাকতে হতো। পুরুষ ভুক্তভোগীদের জন্য সেলের ভেতরে গোপনীয়তার খুবই অভাব ছিল। সেলে টয়লেট ব্যবহারের জন্য নিচু বিল্ট-ইন প্যান বসানো ছিল। তবে, মাঝে কোনো দেয়াল না থাকায়, ভুক্তভোগীরা যখন শুয়ে থাকতেন, তখন তাদের শরীর প্রায়ই ওই প্যানের ওপরেই পড়ে থাকত। যার ফলে তারা ময়লা, প্রস্রাব ও মলের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে থাকতে বাধ্য হতেন।
নারীদের জন্য বিশেষ শাস্তি : ২০১৮ সালে তুলে নেওয়ার পর ২৫ বছর বয়সী এক নারী ২৪ দিন নিখোঁজ ছিলেন। তিনি বলেন, ‘অনেকটা ক্রুসিফাইড হওয়ার মতো করে হাত দুই দিকে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখছে। … আমার পিরিয়ড হওয়ার ডেট ছিল অনেক লেটে। কিন্তু যেই টর্চার করে তাতে আমি এত পরিমাণ অসুস্থ হয়ে যাই যে, সঙ্গে সঙ্গে আমার পিরিয়ড আরম্ভ হয়ে যায়। তারপর উনাদের বলি যে, আমার তো প্যাড লাগবে—এটা নিয়ে অনেক হাসাহাসি করে ওরা।’
নিষ্ঠুর আঘাত: নিষ্ঠুরভাবে আঘাত করা ছিল নির্যাতনের সবচেয়ে সাধারণ ও সর্বব্যাপী রূপ। শরীরের প্রায় প্রতিটি স্থানে এবং প্রায় প্রত্যেক ভুক্তভোগীর ক্ষেত্রেই এটি ঘটেছে। ২০২৩ সালে ৪৭ বছর বয়সী একজন পুরুষকে ধরে নিয়ে ১৬ দিন গুম করে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বিশেষ ইউনিট। তিনি বলেন, ‘…চোখে কখনো গামছা দিয়া, কখনো ওই যে জম টুপি, এগুলা দিয়ে বাঁধা থাকত। হাত কখনো সামনে, কখনো পেছনে। আর যখন বেশি মারবে, তখন এই হাত পেছনে দিয়ে রাখত আর আমার এই কনুইগুলো, দুই হাঁটু এগুলোতে খুব জোরে জোরে মারত মোটা লাঠি দিয়ে। ... তো আমি মনে করতাম যে, আমার হাড়গুলো বুঝি ভেঙে যাবে, কিন্তু পরবর্তীতে দেখলাম যে ফুলে অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছে, কিন্তু হাড় ভাঙছে এরকম বুঝি নাই।
আঘাতের স্থায়ী চিহ্ন: একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষায়িত ইউনিটের সদস্যরা ২৩ বছর বয়সী এক ভুক্তভোগীকে ২০১৭ সালে অপহরণের পর ৭২ দিন গুম করে রাখে। জেআইসিতে আটকে রেখে টানা নির্যাতনের কারণে তার নাভির দুই পাশের আঘাতের চিহ্ন এখনো রয়েছে। তিনি বলেন, ‘…আমার পা বেঁধে উপর দিকে করে ঝুলাইছে। মাথা নিচের দিক, পা উপর দিক দিয়ে। আমার শরীরে কোনো পোশাক রাখে নাই তখন, একেবারে উইদাউট ড্রেস। তারপর এলোপাতাড়ি আমাকে দুজনে একসঙ্গে পেটাতে থাকে।’
ছাদের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন: বন্দিদের ওপর যে নিষ্ঠুর শারীরিক নির্যাতন চালানো হতো, তার মধ্যে একটি ছিল ছাদের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন। ২০২৩ সালে ৪৭ বছর বয়সী একজনকে ১৬ দিন গুম করে রাখা হয়। তিনি বলেন, ‘… বলতেছে, এভাবে হবে না। এরে লটকা। টানাইতে হবে। তো একজন এএসআই লোক হবে, ও আমাকে দুই হাতে রশি লাগায়া ওই যে ফ্যানের হুক থাকে ছাদের মধ্যে, এটার মধ্যে ওর রশি দিয়ে এরকম ঝুলাইল। শুধু পায়ের বুড়ো আঙুলটা লাগানো থাকে মেঝেতে আর পুরা শরীরটা ঝোলানো।’ ভুক্তভোগীর হাত ও পা বেঁধে শরীর উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখেও নির্যাতন করা হতো।
নখ উপড়ে ফেলা: নির্যাতনের একটি পদ্ধতি হিসেবে প্রায়ই নখ উপড়ে ফেলা হতো। ২০১৭ সালে একজনকে অপহরণ করে ৫৬ দিন গুম করে রাখে একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষায়িত ইউনিটের সদস্যরা। নির্যাতনের নির্মম চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘… তো আলেপ উদ্দিন—পরে নাম জানতে পারছি, তখন জানতাম না। সে লাঠি নিয়ে খুব টর্চার করল। ... একদিন আমাকে বেশি টর্চার করল। টর্চার করে বলল যে, তাকে টাঙ্গায় রাখো, ঝুলায় রাখো। তো সেলে গ্রিল আছে না? রডগুলা যে আছে ... [ওগুলার সঙ্গে] আমাকে এমনে ঝুলায় রাখলো।... হাতকড়ার সঙ্গে বাইন্ধা রাখল। ... তো এইভাবে অনেক ঘণ্টা রাখার পরে আমি আর পারছি না। ওইদিন পরে যখন টর্চার করল, আঙুলের নখটা উঠে গেছিল পুরা...।’
নখের নিচে সুচ ঢুকিয়ে নির্যাতন : নখের নিচে সুচ ঢোকানো ছিল একটি সাধারণ ও নিয়মিত নির্যাতনের কৌশল। একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষায়িত ইউনিটের হাতে গুম হওয়ার পর ১১৩ দিন নিখোঁজ ছিলেন একজন। তিনি বলেন, ‘…এর মধ্যে একদিন আঙুলটাকে এভাবে প্লাস দিয়ে ধরছে। ধরার পরে টেবিলের ওপরে হাত রেখে, প্লাস ধরে, আরেকজন সুচ ঢুকাইছে। এই যে সুঁইয়ের দাগ।’
নির্যাতনের আরেক পদ্ধতি ‘বাঁশ ডলা’: ২০১৭ সালে ১৯ দিন গুম থাকা একজন নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘… শোয়ানোর পরে আমার এই দুহাতের উপরে দিয়া আর ঘাড়ের নিচে দিয়া একটা বাঁশ দিছে। তার পরবর্তীতে পায়ের নিচে, রানের নিচে দিয়ে একটা দিল, আবার রানের উপরে দিয়েও একটা দিছে। দেওয়ার পরে এরা ওইভাবে আমাকে কিছুক্ষণ রাখলো যে, ‘বড় স্যার আসতেছে না।’ কিছুক্ষণ পরে সে আসছে। আসার পরে হঠাৎ করেই বললো, ‘এই উঠো।’ বলার সঙ্গে সঙ্গে আমি মনে করলাম যে, আমি আর দুনিয়ার মধ্যে নাই। মানে এরকমের যন্ত্রণা আমার এই দুই হাতের বাহুতে শুরু হইছে, আর দুই পায়ের মধ্যে শুরু হইছে। আমার মনে হইতেছে কেউ আমার এই দুই হাতের আর পায়ের গোস্তগুলো ছিঁড়া ফেলতেছে।...।’
বৈদ্যুতিক শক: নির্যাতনের দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রচলিত পদ্ধতি ছিল বৈদ্যুতিক শক দেওয়া। এমনকি অপহরণের পর যানবাহনেও বৈদ্যুতিক শক দিত। গুম হওয়ার পর ৪৬ দিন নিখোঁজ থাকা একজন বলেন, ‘…মনে হচ্ছে হয়তো কিছুতে সুইচ টিপছে, অটোমেটিক আমার শরীরটা উপরে উঠে যাচ্ছে। ... এই মুহূর্তে আমার কাপড় খুলে, আবার ওই একই ক্লিপ লাগায় দেয় আমার গোপন দুইটা অঙ্গে। এবং ওই জিজ্ঞাসাবাদ সেম চলতে থাকে। যখনই সুইচ দেয়, আমার মনে হয়েছে যে, আমার সে অঙ্গগুলো পুড়ে যাচ্ছে ... এবং মাঝে মাঝে আমি গোস্ত পুড়লে যেরকম একটা গন্ধ লাগে, সেই গন্ধটা পাইতাম আর কী। ...।’
ওয়াটার বোর্ডিং: নির্যাতনের আরেকটি পদ্ধতি হলো ওয়াটার বোর্ডিং। এতে ভুক্তভোগীকে শুইয়ে দিয়ে তার মুখ ঢেকে ওপর থেকে বারবার পানি ঢালা হয়। এতে তিনি ডুবে যাচ্ছেন—এমন অনুভূতি হয়, যেন শ্বাস নিতে পারছেন না। অনেক সময় ভুক্তভোগীরা এতে অচেতন হয়ে যেতেন। বিভিন্ন স্থানে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে।
নির্যাতনে ব্যবহৃত ঘূর্ণায়মান যন্ত্র ও চেয়ার: নির্যাতনে ব্যবহৃত ঘূর্ণায়মান যন্ত্রপাতি সম্পর্কে একাধিক বিবরণ পাওয়া গেছে এবং সাক্ষ্য বিশ্লেষণ করে দুটি ভিন্ন ধরনের যন্ত্রের অস্তিত্ব স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। প্রথমটি ছিল একটি ঘূর্ণায়মান চেয়ার। টিএফআই সেলে এই চেয়ারটি ব্যবহার করা হতো, যেখানে ভুক্তভোগীদের অত্যন্ত উচ্চগতিতে ঘোরানো হতো। এর ফলে অনেকেই বমি করতেন, প্রস্রাব ও পায়খানা করে ফেলতেন, এমনকি কেউ কেউ অচেতন হয়ে যেতেন।
দ্বিতীয়টি, জেআইসিতে আটক ভুক্তভোগীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে, সেটি চেয়ার নয়, বরং পুরো শরীর ঘোরানোর জন্য ব্যবহৃত একটি যন্ত্র।
চলত যৌন নির্যাতনও: যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলো ভুক্তভোগীদের অনেকে শেয়ার করতে চাইতেন না। কমিশন বলেছে, ‘আমরা একাধিক বিশ্বাসযোগ্য ঘটনার সাক্ষ্য পেয়েছি, যেখানে নির্যাতনের নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল ভুক্তভোগীদের যৌনাঙ্গ।’
প্রস্রাবের সময় বৈদ্যুতিক শক : লাঞ্ছনা ও যন্ত্রণার একটি পদ্ধতি হিসেবে ভুক্তভোগীদের যৌনাঙ্গকে নির্যাতনের লক্ষ্যবস্তু করা হতো। ৪৫ দিন গুম থাকা একজন বলেন, ‘…জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে কইতেছে, এখানে প্রস্রাব কর। এখন এখানে প্রস্রাব কর। প্রস্রাব করার সঙ্গে সঙ্গে আমি অনুমান করছি যে, আমি মনে হয় পাঁচ ফুট উপরে উঠছি, একটা ফাল দিয়া, ইলেকট্রিক শক সবচেয়ে বড় কোনো স্থানে। ...।’
যৌনাঙ্গে বৈদ্যুতিক শক : যৌনাঙ্গকে নির্যাতনের লক্ষ্যবস্তু করার বর্ণনা তুলে ধরে ৩৯ দিন গুম থাকা একজন বলেন, ক্লিপ দিয়ে কারেন্ট শক দেওয়া শুরু হয়ে গেছে। গাড়ির মধ্যে খুব চেঁচাচ্ছি ... দুই পা সামনের সিটে লাফানোর কারণে আমার প্রায় এক ফুট করে দুই পা ছিলে যায়। কিন্তু ওইটার ব্যথা কিছু মনে হয়নি। কারেন্ট শকের ব্যথা এতটা ভয়ংকর।’
ভুক্তভোগীদের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব : দীর্ঘদিন গুম থাকার পর মুক্তি পেলেও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা দীর্ঘমেয়াদি মানসিক ট্রমার মধ্যে থেকেছেন। কমিশন বলছে, অনেকের পারিবারিক জীবন, যেমন বিয়ে ও সন্তান-সম্পর্কিত বিষয় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারগুলো এই চাপ সহ্য করতে পারে না, ফলে ভুক্তভোগীরা এক অনিশ্চয়তা ও প্রান্তিকতার জীবনে আটকে পড়েন।
মন্তব্য করুন