উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনকে সবাই জানেন স্বৈরাচারী শাসক হিসেবে। দেশটিতে কার্যত একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী তিনি। তবে এবার তাকে দেখা গেছে ভিন্নরূপে। প্রকাশ্যে অঝোরে কেঁদেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (০১ জুলাই) সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের বরাতে ইয়াহু নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকাশ্যে অঝোরে কেঁদেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম। একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কান্না করেন তিনি। রাশিয়ায় যুদ্ধে নিহত উত্তর কোরিয়ার সেনাদের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।
দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত উত্তর কোরিয়ার সেনাদের সম্মান জানাতে আয়োজিত এক স্মরণানুষ্ঠানে অশ্রুসিক্ত হন কিম। মস্কোর সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির এক বছর পূর্তিতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে যুদ্ধক্ষেত্রের ফুটেজ দেখতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন কিম।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, কিম কফিনে হাত রেখে হাঁটু গেড়ে বসে রয়েছেন। ভিডিওতে কফিনগুলো উত্তর কোরিয়ার পতাকায় মোড়ানো দেখা গেছে। এ সময় তার চোখ অশ্রুসজল এবং দ্রুত নিঃশ্বাস নিচ্ছিলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে দেখানো পৃথক দৃশ্যে দেখা যায়, কিম রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার সামরিক অভিযান অনুমোদন করছেন। ওই অঞ্চলে গত বছরের শেষ দিকে উত্তর কোরিয়ার সেনা মোতায়েন করা হয়।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলে যুদ্ধে অংশ নিতে গিয়ে প্রায় ৬ হাজার উত্তর কোরীয় সেনা নিহত বা আহত হয়েছেন।
এর আগে গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (এনআইএস) জানিয়েছে, গত ৮ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত নৌবাহিনীর জাহাজে করে উত্তর কোরিয়ার স্পেশাল অপারেশনের অন্তত ১৫০০ সেনাকে রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তক শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, শিগগিরই উত্তর কোরিয়ার আরও সৈন্য রাশিয়ায় পাঠানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি করতে পারে এবং উত্তর কোরিয়া ও পশ্চিমের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
এনআইএস জানিয়েছে, রাশিয়ায় পাঠানো উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের রাশিয়ান সামরিক ইউনিফর্ম, অস্ত্র এবং জাল শনাক্তকরণ নথি সরবরাহ করা হয়েছে। বর্তমানে ভ্লাদিভোস্টকের সামরিক ঘাঁটি এবং উসুরিয়স্ক, খবরোভস্ক এবং ব্লাগোভেশচেনস্কতে তারা অবস্থান করছে। প্রশিক্ষণ শেষ হলে তাদের যুদ্ধ অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন