রাজকুমার নন্দী
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:০৮ এএম
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:১৩ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিশেষ সাক্ষাৎকার

বিরোধী দলগুলোকে গ্রাস করতে চায় সরকার

ড. আব্দুল মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান। সৌজন্য ছবি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান। সৌজন্য ছবি

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘সর্বগ্রাসী’ আখ্যা দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকেও তারা এখন গ্রাস করে ফেলতে চাচ্ছে। গত শুক্রবার কালবেলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, সরকার ৭ জানুয়ারির অনেক আগেই ঢাকায় বসে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ফল নির্ধারণ করেছিল। শুধু সরকার ও সরকারি দল নয়, বিএনপির কাউন্সিল, আন্দোলনসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন মঈন খান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাজকুমার নন্দী।

কালবেলা : বড় বাধা ছাড়াই আওয়ামী লীগ টানা তিন মেয়াদে নির্বাচন করে ফেলেছে। এ অবস্থায় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির ভবিষ্যৎ কী বলে মনে করেন।

ড. আব্দুল মঈন খান: আমরা রাজনীতি করি গণমানুষের কল্যাণে এবং সেটাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য।

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সেই রাজনীতিকে জনগণের দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই আমরা রাজপথে আছি। বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, আওয়ামী লীগ আজকে দেশ থেকে সেই গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা রাজপথে আন্দোলন করে যাচ্ছি এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব, ততক্ষণ রাজপথেই থাকব। এ আন্দোলন হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক। এখানে এই দৃষ্টিতে দেখলে হবে না যে, বিএনপি পনের বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। ক্ষমতার ধ্যান-ধারণা নিয়ে আমরা রাজনীতি করি না, ক্ষমতা দখলের জন্য আমরা রাজনীতি করি না।

এটা সত্যি যে, সরকার তিনটি নির্বাচন করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এর কোনোটিই সত্যিকারের নির্বাচন নয়, তিনটিই প্রহসনের নির্বাচন। বিশ্বের নামিদামি গণমাধ্যমগুলোও একই কথা বলেছে। সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারি সরকার যে নির্বাচনের নাটক মঞ্চস্থ করেছে, সেটি জনগণ বর্জন করেছে, মানুষ সেখানে ভোট দিতে যায়নি। বিএনপির ভোটাররা তো ভোট দেয়ইনি, বাস্তবতা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের ভোটাররাও ভোট দিতে আসেনি। কারণ, এ নির্বাচনের যে ফল সেটি ৭ জানুয়ারির অনেক আগেই সরকার রাজধানী ঢাকায় বসে নির্ধারণ করে নিয়েছিল। ফলে কোন আসন থেকে কে নির্বাচিত হবে, সেটি নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছিল না। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতার মানদণ্ডে উতরাতে হবে। যদি তা না হয়, নির্বাচন ব্যবস্থায় মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলে এবং সেটি কখনো কোনো সত্যিকার নির্বাচন হতে পারে না। বাংলাদেশে আসলে তাই হয়েছে। বিশ্বের গণতন্ত্রকামী দেশগুলোও স্পষ্ট ভাষায় বলেছে যে, এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি, শুধু আমরা নই।

আওয়ামী লীগ আজকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে, ক্ষমতার সঙ্গে অর্থ-বিত্তবৈভবকে সম্পৃক্ত করে তার পেছনে দৌড়াচ্ছে, তার মোহে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে বসে আছে ১৫ বছর ধরে। আওয়ামী লীগ তো নিজেদের স্বাধীনতার শক্তি বলে দাবি করে। তারা যদি সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতার শক্তি হতো, তারা দেশের মানুষের গণতন্ত্র হরণ করতে পারত না।

আমাদের বুঝতে হবে, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণাটি কেন এসেছে? নির্বাচনকালে রাষ্ট্রের এমন একটি ব্যবস্থাপনা থাকবে, যাতে করে সেই ব্যবস্থাপনা যারা পরিচালনা করবেন, নির্বাচনের ফলে তাদের কোনো রকমের স্বার্থ থাকতে পারবে না। এটিই হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল কথা। আওয়ামী লীগ সরকার একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। কাগজে-কলমে ইসি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন সরকারের ইচ্ছার বাইরে এক পাও কোথাও ফেলতে পারবে না। এটি বারবার প্রমাণিত হয়েছে। মজার কথা হলো, আওয়ামী লীগ বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নাকি তারাই করেছে। আবার অনেকে বলে, এটি নাকি আসলে জামায়াতে ইসলামীর দাবি ছিল। কিন্তু জনগণের কাছে জনপ্রিয় হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ নাকি সেটি জামায়াতে ইসলামী থেকে হাইজ্যাক করে নিয়ে এসে নিজের বলে প্রচার করেছিল। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আওয়ামী সরকার সংবিধান সংশোধন করে কেন বাতিল করে দিল? কারণ, সত্যিটা হচ্ছে—এ ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচন হলে তারা কখনো জয়লাভ করতে পারবে না।

বিএনপি একটা উদারনৈতিক রাজনৈতিক দল। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। গণতন্ত্র এমন একটি প্রক্রিয়া ও শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা যেটি শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে। আমরা একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য আন্দোলন করছি। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। কাজেই সেই পদ্ধতি যদি গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ না হয়, এখানে একটা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দেখা দেবে। আমরা তো আমাদের সেই নৈতিক অবস্থানের বিপক্ষে যেতে পারি না। আমরা যদি বলি যে, আমরা বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, কিন্তু আমাদের পন্থা হবে অগণতান্ত্রিক-সংঘাতময়, তাহলে তো সেটি যুক্তিযুক্ত হবে না। কাজেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলনে রয়েছি। যার প্রথম পর্যায় ছিল ২০২২ সালের ২২ আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত, তারপর ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত এবং এখনো আমরা সেই আন্দোলনেই রয়েছি। আন্দোলনের ভেতর দিয়েই আমরা এ দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করব।

কালবেলা : বিএনপির পক্ষ থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে শুরুতে ভোট প্রতিহতের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু শেষমুহূর্তে ভোট বর্জনের আহ্বানে সীমাবদ্ধ থেকেছে দলটি। এটাকে অনেকে বলছেন, বিএনপি রাজনৈতিকভাবে পিছু হটেছে। এ ক্ষেত্রে আপনার বক্তব্য কী?

মঈন খান : বিএনপি কখনো ভোট প্রতিহতের কথা বলেনি। বিএনপি কখনো সংঘাতের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বরং আওয়ামী লীগই সংঘাতের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ লগি-বৈঠার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে এবং ২০০৬ সালে তারা সেটা প্রমাণও করেছে। তারা কীভাবে রাস্তায় সাপের মতো পিটিয়ে মানুষকে মেরেছে, সেটা মিডিয়ার কল্যাণে দেশবাসী ও বিশ্ববাসী দেখেছে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। সে কারণে আমরা শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় এ নির্বাচন বর্জন করার জন্য দেশের ১৮ কোটি মানুষ এবং ১২ কোটি ভোটারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। তারা স্বেচ্ছায় আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ৭ জানুয়ারির ভোটকে সম্পূর্ণভাবে বর্জন করেছে।

কালবেলা : প্রতিবারই নির্বাচনের পর সংসদ বাতিল ও সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিএনপি আন্দোলনে নামে। কিন্তু প্রতিবারই সরকারের মেয়াদ পূর্ণ করেই নির্বাচনে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এবারও একই ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে কি না?

মঈন খান : আজকে ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সাল নয়, এখন ২০২৪ সাল। অনেকের হয়তো মনে আছে, আশির দশকে এ দেশে আরেকটি স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল। এরশাদ সরকারের পতনের এক বা দুদিন আগেও কি তারা বুঝতে পেরেছিল যে, তাদের এভাবে পতন হবে? আওয়ামী লীগ গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ করেছে। এখানে কোনো নির্বাচন হয়নি। ইলেকশনের নামে সিলেকশন হয়েছে। সেই নির্বাচনী নাটকের পর তারা তড়িঘড়ি করে শপথ গ্রহণ ও সরকার গঠন করেছে এবং সংসদও বসিয়েছে। কিন্তু যে জিনিসটা তারা বুঝতে পারেনি সেটা হলো, এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের আসলে একটা মারাত্মক নৈতিক পরাজয় হয়েছে। এ সরকার আজকে মুখে যতই হম্বিতম্বি করুক না কেন, তারা নিজেরাও জানে—জনগণের মধ্যে তাদের কোনো অবস্থান তথা জনভিত্তি নেই। নেই বলেই ৭ জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত তারা যেসব কর্মকাণ্ড করেছে, তাতে তারা নিজেরাই প্রমাণ করে দিয়েছে যে, অন্তরে তারা ভীত, নিজেরাই শঙ্কিত। এর একটি উদাহরণ দিচ্ছি। ৭ জানুয়ারির পর আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজপথে দাঁড়িয়ে অত্যন্ত নিরীহ, নীরব কর্মসূচি কালো পতাকা মিছিল করেছি। কিন্তু সেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিও আমাদের নির্বিঘ্নে করতে দেওয়া হয়নি। কাজেই এ সরকারের স্থায়িত্ব কতদিন, সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে এটা স্পষ্ট যে, এ সরকার যে মাটির ওপর দাঁড়িয়ে আছে, তার ভিত্তি এরই মধ্যে ধসে পড়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, এই সরকারের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে।

কালবেলা : ভোটের আগে আন্তর্জাতিক বিশ্ব বিশেষ করে পশ্চিমারা নির্বাচন ইস্যুতে সরকারকে চাপে রেখেছিল বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু ভোটের পর তারা অনেকটাই নমনীয় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। অন্যদিকে চীন, রাশিয়া, ভারতসহ অনেক দেশ এমনকি জাতিসংঘ সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলের এ অবস্থানকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

মঈন খান : আমরা দেখেছি বাংলাদেশে নির্বাচন ইস্যুতে বিশ্বে পরাশক্তিগুলোর মেরূকরণ হয়েছে। একদিকে রয়েছে চীন, রাশিয়া। অন্যদিকে পশ্চিমা গণতান্ত্রিক উদারনৈতিক বিশ্ব সেখানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা রয়েছে। এমনকি জাতিসংঘ পর্যন্ত বাংলাদেশে যে গণতন্ত্রহীনতা, মানবাধিকার হরণ, সুশাসনের অভাব, চরম দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ-সম্পদ পাচার—এসব বিষয়ে তারা স্পষ্ট ভাষায় বক্তব্য দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আজকে পরাশক্তির মেরূকরণের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের একটি জিনিস বুঝতে হবে। সেটি হচ্ছে, আয়তনের দিক থেকে বাংলাদেশ ছোট হলেও জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বে অষ্টম বৃহত্তম দেশ। ব্যবসা, বাণিজ্য, অর্থনীতি বিবেচনায় আজকের দুনিয়ায় বাংলাদেশকে একেবারে অগ্রাহ্য করা যাবে না। তৈরি পোশাক শিল্পে বাংলাদেশ আজকে একটি শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ। এগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, গার্মেন্টস শিল্প থেকে সরকার এই যে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করছে বলে দাবি করে, তার মূল চালিকাশক্তি আমাদের কোটি কোটি নারী শ্রমিক। তাদের মাধ্যমে সরকার যে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে সেগুলো কি লুটপাট ও বিদেশি ব্যাংকে পাচার করার জন্য, সেগুলো কি বিদেশে বেগমপাড়া, সেকেন্ড হোম, গুলশান থ্রি তৈরি করার জন্য? এ প্রশ্নগুলো আজকে আসছে এবং আসবে।

বাংলাদেশের এই যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিক্রমা তার সঙ্গে আজকে পশ্চিমা বিশ্বও জড়িয়ে গিয়েছে। আজকে যদি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়, এতে করে শুধু বাংলাদেশের অর্থনীতিই মুখ থুবড়ে পড়বে তাই নয়, ইউরোপ-আমেরিকার যারা বাংলাদেশ থেকে এসব পরিধেয় বস্ত্র কিনছে—বাংলাদেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থায় তারাও কি চিন্তিত হতে পারে না? তা ছাড়া এরকম পরিস্থিতিতে উন্নত দেশের ক্রেতাদেরও কি ২০ ডলারের শার্ট ২০০ ডলারে কিনতে হলে সে দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে দুর্ভোগ হবে না এবং সে দেশের সরকারগুলো অর্থনৈতিকভাবে বিপাকে পড়বে না? নিশ্চয়ই পড়বে। রাজনীতি ও অর্থনীতিকে আজকে আলাদা করে দেখা যাবে না। একটি দেশের সার্বিক বিষয়ে একসঙ্গে মিলেমিশে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে, সেটাই রাজনীতি। সেই কারণে আজকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের যে পারস্পরিক সম্পর্ক সেটা কিন্তু প্রতিটি ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভরশীল। ফলে এটা চাপ সৃষ্টির কোনো বিষয় নয়, পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়। সেই পারস্পরিক স্বার্থের সঙ্গে এখানে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা যোগ হয়েছে, সেটি হলো নৈতিকতা। সেখানেই মানবাধিকার, মানুষের বেঁচে থাকা এবং ভোটের অধিকারের প্রশ্নগুলো আসে। সেসব কারণ মিলেই পশ্চিমা উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক বিশ্ব চেয়েছে যে, অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাংলাদেশ সঠিক পথে ফিরে আসুক, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক। তারা এখনো সেটাই চাচ্ছে। এখানে চাপের কোনো বিষয় নেই।

কালবেলা : আওয়ামী লীগ বরাবরই বলে, বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় আসতে চায় বিএনপি। পশ্চিমা বিশ্ব যারা নির্বাচন ইস্যুতে সরকারকে চাপে রেখেছিল; ভোটের পর তারাই যদি সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে ফেলে, তাহলে বিএনপির আশার জায়গা কোথায়?

মঈন খান : বিএনপি বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় আসতে চায়—এর চেয়ে অসত্য কথা আর কিছু হতে পারে না। কিন্তু তারপরও সরকার এটা বলছে। বিএনপি যদি সত্যিই বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় আসতে চাইত, তাহলে তারা কেন নিজেদের জীবনবাজি রেখে বিগত প্রায় দেড় বছর ধরে কোটি কোটি মানুষকে সম্পৃক্ত করে রাজপথের আন্দোলন করে গেল?

বিভিন্ন দেশের দূতাবাস বাংলাদেশে তাদের কাজগুলো করছে। দূতাবাসের কাজ কী? সরকারের সঙ্গে তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখা। এখানে বাস্তবতা হচ্ছে, যেনতেন প্রকারে একটা ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে এ সরকার ক্ষমতায় আছে। একটা কার্যকর সম্পর্ক রাখতে হলে এই সরকারের সঙ্গে তাদের যে দৈনন্দিন কার্যক্রম সেটা তো বজায় রাখতেই হবে। কাজেই এটাকে তাদের নৈতিক অবস্থানের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে ভুল করলে হবে না। মাত্র কয়েক দিন আগে বিশ্বের বড় পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, তারা কিন্তু এ বিষয়ে তাদের অবস্থান প্রকাশ্যে পুনর্ব্যক্ত করেছে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মানুষের কথা বলার অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানুষের ভোটের অধিকার প্রশ্নে তাদের যে প্রতিশ্রুতি সেটা তারা পুনরায় বলেছে। কাজেই বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের বিষয়ে তাদের যে নৈতিক অবস্থান সেখান থেকে কথায় বা কাজে কোথাও তারা একচুলও বিচ্যুত হয়নি। কিন্তু তাদের তো দৈনন্দিন কাজ করে যেতে হবে। সেটা যদি তারা না করে, ডিপ্লোম্যাটিক নর্মস বজায় না রাখে, সে ক্ষেত্রে তাদের ডিপ্লোম্যাটিক এস্টাবলিশমেন্টগুলো, তাদের এমবাসিগুলো কি তারা বন্ধ করে দেবে? কূটনীতিকদের যার যার নিজের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে? এটা কোনো বাস্তবসম্মত কথা নয়।

বিএনপির আশার জায়গা হচ্ছে জনগণ। আমরা জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করি। এই রাষ্ট্রের সত্যিকার মালিক হচ্ছে দেশের ১৮ কোটি মানুষ। এখানে মানুষের যে অধিকার সেই অধিকার তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। এই ১৮ কোটি মানুষ প্রত্যেকে মিলে এই দেশকে পরিচালিত করবে। কিন্তু প্রত্যেকে ইনডিভিজুয়ালি দেশ পরিচালনা করবে—এটা বাস্তবে হতে পারে না। সে কারণে আজকে রাষ্ট্র পরিচালনা ব্যবস্থায় যে বিভিন্ন কনসেপ্ট এসেছে, তার মধ্যে অন্যতম গণতন্ত্র। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে তিনশ মানুষকে নির্বাচিত করে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে পাঠায় এবং তাদের একটা নির্দিষ্ট সময়ও দিয়ে দেয়। জনগণ যে দেশের মালিক, এই অধিকার পাঁচ বছর পরপর তাদের কাছে আবার ফিরে ফিরে আসে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এবার ভোট বর্জনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ এটাই প্রমাণ করে দিয়েছে যে, তারা প্রতিনিধিত্বের অধিকার আওয়ামী সরকারকে না দিয়ে তারা বরং এ সরকারকে বর্জন করেছে। সুতরাং সরকার জনগণের কাছে গণতন্ত্রের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি।

কালবেলা : বিএনপির আন্দোলনে জনগণের এক ধরনের পরোক্ষ সমর্থন ছিল। কিন্তু আন্দোলনে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা সেভাবে দেখা যায়নি। ফলে আগামীর আন্দোলনেও যে জনগণ বিএনপির সঙ্গে থাকবে, সেটা কীভাবে বোঝা যাবে?

মঈন খান : আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা সারা দেশে বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করেছি। অবাক করার কথা, সরকার তখন নিজেই এ দেশে হরতাল করে দিয়েছে। গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে, ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছে, রাস্তায় রিকশা বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি মজার কাণ্ড, বিরোধী দলের সমাবেশ ভণ্ডুল করতে গিয়ে নিজেদের দলীয় প্রতীক যে নৌকা সে নৌকাও তারা বন্ধ করে দিয়েছে। এত কিছুর পরও মানুষ হেঁটেসহ যে যেভাবে পেরেছে সমাবেশে এসেছে। অনেকে তিন দিন আগে এসে সমাবেশ মাঠে থেকেছে, ঘুমিয়েছে। তারা এর মধ্য দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে। ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সরকার সংঘাত সৃষ্টি করেছিল। সেখানে সরকার টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে, গুলি করেছে, গ্রেনেড ছুড়েছে, একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তারা সৃষ্টি করেছিল। জনগণ তো সেখানে যুদ্ধ করতে আসেনি। শান্তিপূর্ণ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাদের অধিকার ফিরিয়ে নিতে এসেছিল। সুতরাং এ ধারণাটি সঠিক নয় যে, জনগণ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়নি। বরং তারা আন্দোলনে সম্পূর্ণভাবে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছে। এটা আমাদের স্বীকার করে নিতে হবে যে, বিএনপির আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জন করেছে, তারা নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারের নৈতিক পরাজয় এবং আমাদের নৈতিক বিজয় হয়েছে।

কালবেলা : বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী কারাগারে। পরিস্থিতির কারণে অনেকে এখনো আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। সেই জায়গা থেকে সংগঠন এবং আন্দোলনকে সংগঠিত করতে আপনারা কী ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন?

মঈন খান : নির্বাচনের দুই থেকে আড়াই মাস আগে গায়েবি, মিথ্যা মামলায় আমাদের ২৬ হাজারের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা এই মুহূর্তে তারাসহ কারারুদ্ধ নেতাকর্মীদের আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত করে আনার চেষ্টা করছি। কারণ, বিএনপি একটি নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। দলটি আইনের শাসনে বিশ্বাসী। নেতাকর্মীদের জামিনের জন্য আমরা প্রতিদিন ডজন ডজন শুনানি চেয়েছি। আইনি প্রক্রিয়ায় আমরা নিয়মের ভেতরে রাজনীতি করি। এ উদ্যোগের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় আমাদের আন্দোলনও চলছে। আমরা কালো পতাকা মিছিল করছি, লিফলেট বিলি করছি। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করা, তাদের মোটিভেট করা এবং জনগণকে বোঝানো যে, আসুন শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের অন্যায় যে সমাজ ব্যবস্থা, রাষ্ট্র ব্যবস্থা—সেটার পরিবর্তন করি।

কালবেলা : বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে নতুন কাউন্সিলের বিষয়ে আপনাদের ভাবনা কী?

মঈন খান : এই সরকার একটা সর্বগ্রাসী সরকার। তারা দেশের বিচার বিভাগ, সিভিল প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনকে কুক্ষিগত করেছে, এমনকি বিরোধী দলগুলোকেও তারা গ্রাস করে ফেলতে চাচ্ছে। দেশের যে কোনো মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন—আজকে আওয়ামী লীগ কী চায়? তারা বলবে, সরকার বাংলাদেশে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়। আমরা যখনই দল পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় কোনো কর্মকাণ্ড করতে গিয়েছি, সারা দেশে আমরা যখন জেলা কাউন্সিলগুলো করতে গিয়েছি, আওয়ামী লীগ এবং পুলিশ যোগসাজশে সেখানে গিয়ে বাধা সৃষ্টি করেছে, মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে। আর যখন আমরা আমাদের সর্বশেষ কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করতে গিয়েছি, কাউন্সিলের আগের রাত ১২টা পর্যন্ত কাউন্সিলস্থল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন তারা দখল করে রেখেছিল। অর্থাৎ সরকার আসলে নিজেরাই চায় না যে, এখানে কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া গড়ে উঠুক। সেই উদ্দেশ্যে তারা বিরোধী দলকে, বিরোধী দলের সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য সাংগঠনিক প্রক্রিয়াগুলোকে সম্পূর্ণ বাধাগ্রস্ত করেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই আমরা নিজেরা যতদূর সম্ভব আমাদের দলকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছি। কাউন্সিল পুনর্গঠন প্রক্রিয়ারই একটি অংশ। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া, এটা চলতেই থাকবে।

কালবেলা : বিএনপি এক বছরের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করলেও চূড়ান্ত সফলতা আসেনি। কেননা রাজপথের আন্দোলনে সরকারের পতন ঘটেনি। এ ক্ষেত্রে আন্দোলনে নেতৃত্বের কোনো সংকট ছিল কি না?

মঈন খান : আমি বলব—সংকটই যদি থাকত, তাহলে কেন কোটি কোটি মানুষ বিগত এক-দেড় বছর ধরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নেমে এসেছিল। এতেই তো প্রমাণিত হয়, আন্দোলনে নেতৃত্বের কোনো সংকট ছিল না। কেউ বিগত দেড় বছরে বিএনপির কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে তিনি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন না যে, সাংগঠনিক বিষয়ে বিএনপির কোনো বাস্তব দুর্বলতা ছিল। আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে এখন শারীরিকভাবে কে কোন জায়গায় অবস্থান করছেন, সেটা আজকে আর এত গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমরা আমাদের ব্যবস্থাকে কীভাবে সংগঠিত, পুনর্গঠিত ও পরিচালিত করতে পারি—মূলত তার ওপরই সংগঠন এবং সংগঠনের কর্মকাণ্ড নির্ভর করে। আমাদের কাজের মাধ্যমে আজকে এটা স্পষ্ট যে, আন্দোলন ও সংগঠন পরিচালনায় সেই ধরনের কোনো বিপত্তি, প্রতিবন্ধকতা আমরা লক্ষ করিনি। আমাদের কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে চলছে, আমরা জনগণকে নিয়ে এই সরকারের অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করে চলেছি। আমরা প্রতিবাদ করবই যতক্ষণ পর্যন্ত না দেশে মানুষের অধিকার মানুষের হাতে ফিরিয়ে দিতে পারি।

কালবেলা : বিএনপির সঙ্গে আরও কয়েকটি দলও এবাবের নির্বাচন বর্জন করেছে। কিন্তু তারা যুগপতে নেই, নিজ নিজ প্ল্যাটফর্ম থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলন করছে। আগামীতে আন্দোলন বেগবান করতে এসব দলকে যুগপতে কিংবা এক প্ল্যাটফর্মে আনার ব্যাপারে বিএনপি কিছু ভাবছে কি না?

মঈন খান : বাংলাদেশে আজকে যে দ্বন্দ্ব, সেটি একদিকে একনায়কত্ব কিংবা সর্বগ্রাসী একটা ক্ষমতার অবস্থান; আরেক দিকে জনগণের অধিকার ও গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। ন্যায় ও অন্যায় এ দুয়ের মধ্যে আজকের এই সংগ্রাম। এই সংগ্রামে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামে যারাই থাকবে, আমরা তাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বর্তমান গণতন্ত্রবিরোধী একনায়কত্বের সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাব। এটা একই প্ল্যাটফর্ম, যা সমান্তরাল প্ল্যাটফর্ম, একমঞ্চ, ভিন্ন মঞ্চ, যুগপৎ মঞ্চ কিংবা একক কোনো কর্মসূচি হতে পারে—সেটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমরা মনে করি না।

কালবেলা : আপনাকে ধন্যবাদ।

মঈন খান : আপনাকে ও কালবেলার পাঠককেও অসংখ্য ধন্যবাদ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত

নতুন মাইলফলক / এমআইই পাথওয়েজের প্রথম এনসিইউকে গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি উদযাপন

বলিউড ছেড়ে দক্ষিণে দিব্যা দত্ত

প্রোটিয়া টি-টোয়েন্টি দলে ফিরলেন মহারাজ-মিলার

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা, জামিন দেওয়ায় বাদীর ক্ষোভ

রাশিয়ার পারমাণবিক প্লান্টে আগুন

এশিয়া কাপের জন্য শক্তিশালী দল ঘোষণা করল বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ

মেডিকেলে ‘আনফিট’ রিপোর্টে ভেঙে গেলে নবদম্পতির সংসার

যুদ্ধ সক্ষমতা ও বিশেষ প্রযুক্তি দেখাল উত্তর কোরিয়া

১০

জঙ্গলে রহস্যময় জ্বলন্ত গাড়িতে পাওয়া গেল ২ পুরুষের মরদেহ

১১

ডাকাতি করে পালানোর সময় ২ জনকে গণপিটুনি

১২

দুঃসময় যেন পিছুই ছাড়ছে না পাক তারকা ক্রিকেটারের, এবার যেন হারাবেন পদটাই

১৩

হাই ব্লাড প্রেশার নিয়ে যা জানা জরুরি

১৪

বিপাকে স্বরা ভাস্কর

১৫

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

১৬

মাঝ আকাশে নগ্ন অবস্থায় ধরা বিমানবালা

১৭

মরদেহ দাফনের পর জীবিত ফিরে এলো রবিউল!

১৮

সারাক্ষণ চার্জার প্লাগে রাখেন? জেনে নিন কী হতে পারে

১৯

এশিয়া কাপে ভারতের একাদশ কেমন হবে, জানালেন তারকা ক্রিকেটার

২০
X