মোস্তফা কামাল
প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৩ মে ২০২৫, ০৭:৪৪ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

হজেও কেন মনোপলি ব্যবসা

হজেও কেন মনোপলি ব্যবসা

যন্ত্রণা-জটিলতা যেন হজের অংশ হয়েই থাকছে। এবার সরকারের শতচেষ্টা, হজ এজেন্সিসহ সংশ্লিষ্টদের ওয়াদার পরও ভিসা জটিলতা এবং বেশ কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতির মধ্যেই চলছে হজযাত্রা। তবে আগের চেয়ে কমে ১৬ হাজারে নেমেছে ভিসা না পাওয়ার সংখ্যা। শিগগির ভিসা জটিলতাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন হজ পরিচালক। বাকিটা থাকছে বাকির খাতাতেই। পবিত্র মক্কায় আল্লাহর ঘরে পৌঁছে হজের আনুষ্ঠানিকতাসহ দেশে ফেরা পুরোটাই ভবিষ্যৎ এবং অপেক্ষার বিষয়।

ইসলামে পাঁচ ফরজের একটি হজ। বলা হয়ে থাকে, সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলমানের ওপরই হজ ফরজ। অর্থাৎ যাদের অর্থনৈতিক সামর্থ্য রয়েছে, তারা নিজ অর্থব্যয়ে জীবনে একবারের জন্য হলেও হজ পালন করবেন। এ নিয়ে একতরফা বাণিজ্য ও হেলাফেলা করা লোকজনদের কাছে এটি কোনো বিষয়ই নয়। শুধুই একটি মৌসুমি ব্যবসা। ভিসা বিড়ম্বনা ছাড়াও হজযাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, বয়স্ক নারী ও পুরুষকে ক্যাম্প থেকে বৃষ্টির মধ্যে হাঁটিয়ে এয়ারপোর্টে যেতে বাধ্য করা, মোয়াল্লেমের জামানত প্রদানে গড়িমসি, রিপ্লেসমেন্ট ও বারকোডে টাকা খসানো, এমনকি আদম কারবার পর্যন্ত কিছুই বাদ পড়ে না। হজ অফিস ও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের চোখের সামনেই চলে হজ এজেন্সিগুলো ও তাদের সংগঠন হাবের এসব অনিয়ম ও অরাজকতা।

এসবের একটা এনওসি সনদ যেন তারা নিয়েই রাখে। লিড এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সাব-এজেন্সিসহ আরও নানা মহল এতে জড়িত। নৈতিকতা বা ধর্মের ন্যূনতম ভয়ও তাদের স্পর্শ করে না। একক বৈশ্বিক মহাসমাবেশ হিসেবে হজের অবস্থান সবার শীর্ষে। পৃথিবীর ইতিহাসে হজের মতো এত বড় জনসমাগমের নজির নেই কোথাও। লাখ-লাখ মানুষের ‘লাব্বাইকের’ এ মিছিলে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণও কম নয়। বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাওয়ার পর এজেন্সিগুলোর ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজে মক্কা-মদিনায় থাকা-খাওয়াসহ সার্বিক সেবার পরতে পরতে কামাই-রোজগার। নিজেদের মধ্যে সাংগঠনিক-রাজনৈতিক বিরোধ থাকলেও সিন্ডিকেটে একাট্টা সবাই। হজটা তাদের কাছে মনোপলি ব্যবসার মওকা। ২০২৪ সালের শেষদিকে একটি এজেন্সির কোটা ২৫০ থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৫০০ জন। আর জানুয়ারিতে তা দ্বিগুণ করে সৌদি সরকার। তারাও ভালোমতো চিনেছে বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশের মন্ত্রণালয় এজেন্সিগুলোকে এ, বি, সি, ডি’তে ক্যাটাগরি করেও কিনারা করতে পারে না। যে কারণে একাধিকবার সময় বাড়িয়েও ২০২৫ সালে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজ নিবন্ধনের কোটা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। এ বছরের জন্য গত ৩০ অক্টোবর সরকারিভাবে দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ঘোষিত সাশ্রয়ী সাধারণ প্যাকেজ-১ অনুযায়ী, খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা। অন্য প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। এ হিসাব খাবার ও কোরবানির খরচ ছাড়া। বেসরকারি মাধ্যমে সাধারণ হজ প্যাকেজ মূল্য ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সাধারণ হজ প্যাকেজ গ্রহণ করে এজেন্সি একটি অতিরিক্ত বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলেও ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। পরে ৬ নভেম্বর হাবের বাতিল হওয়ার কমিটি ‘সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকবৃন্দ’ ব্যানারে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে।

খাবার খরচ যুক্ত করে সাধারণ হজ প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার এবং বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। পরদিন ৭ নভেম্বর ‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিকরা’ তিনটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে। প্রথম প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১৮ হাজার, দ্বিতীয় প্যাকেজের মূল্য ৫ লাখ ৮৫ হাজার এবং বিশেষ হজ প্যাকেজ ধরা হয় ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এজেন্সিগুলোর ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজে থাকা-খাওয়াসহ সার্বিক সেবা সমন্বয়ের বড় চ্যালেঞ্জ নিয়েই আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় ছুটেছেন মুসল্লিরা। তাদের সঙ্গে এক এজেন্সির একভাবে অঙ্গীকার করা। আরেক এজেন্সির আরেকভাবে অঙ্গীকার। পরে সবাই একসঙ্গে হয়ে যাওয়ায় অঙ্গীকারের ফের নিয়ে ঘটে বিপত্তি। মানুষ তিনটি ক্ষেত্রে অর্থব্যয় নিয়ে চিন্তা করে না। বিয়ে, চিকিৎসা এবং বিদেশগমন। ধারদেনা করেও টাকাপয়সা জোগাড় করে। আর হজ নিছক বিদেশগমন নয়। এর সঙ্গে ধর্মীয় আবেগ ও বাধ্যবাধকতার ব্যাপক সংযোগ।

হজে যাওয়ার নিয়তে অনেকে বছরের পর বছর টাকা জমান। মধ্যবিত্ত চাকরিজীবী অনেককেও দেখা যায়, অবসরে যাওয়ার পর পেনশনের টাকা হাতে পেলে স্বামী-স্ত্রী মিলে হজে যাওয়ার নিয়ত করেন। পুরো পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে এ নিয়ে একটি উৎসাহ-উৎসব ভাব চলে। সেই আনন্দ উৎকণ্ঠায় রূপ নিতে সময় লাগে না। বেশি লোক হজে যায় বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। ফেরটা এখানেই। হজ এজেন্সিগুলো ওতপেতে মৌসুমের অপেক্ষা করে। আদম ধরার মতো তারা দালালের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ শিকার করে। প্রতি বছরই এসব নিয়ে হৈচৈ হয়, সব প্রস্তুতি সত্ত্বেও শেষমুহূর্তে অনেকের হজযাত্রা বাতিল হয়ে যায়। ভিসা জটিলতা, টিকিটসহ আরও নানা বিপত্তি ভর করে। অনিয়ম করার অপরাধে সরকার মাঝেমধ্যে কিছু কিছু এজেন্সিকে কালো তালিকাভুক্ত করে। এতে কালোরা ভয় পায় না। কারণ তারা জানে, শেষতক কিছুই হবে না। দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তিও পেতে হয় না। প্রয়োজনে আগেরটা বাদ দিয়ে আরেক নামে নতুন লাইসেন্স নেয়। সরকারকেও এ নিয়ে জবাবদিহি করতে হয় না। আসলে কিছু অনিয়মের পথ সরকারই করে দেয়।

অন্যদিকে, সৌদি সরকার এবার হাজিদের যাতায়াত, বাসস্থান, ধর্মীয় পবিত্র স্থানগুলোতে গমন এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বেশ কঠোর। কদিন আগে, বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ওপর অস্থায়ী ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সৌদি আরব। বাংলাদেশ ছাড়াও তালিকায় থাকা অন্যান্য দেশগুলো হলো— পাকিস্তান, মিশর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, নাইজেরিয়া, জর্ডান, আলজেরিয়া, সুদান, ইথিওপিয়া, তিউনিশিয়া ও ইয়েমেন। নিষেধাজ্ঞাটি জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত বহাল থাকতে পারে। স্থগিতাদেশটি ওমরাহ, ব্যবসায়িক এবং পারিবারিক ভিসাসহ বিভিন্ন ভিসা অন্তর্ভুক্ত। এর পেছনে হজ মৌসুম ছাড়া অন্য কূটনৈতিক কারণও থাকতে পারে। কূটনৈতিক হিসাব-নিকাশ বাদ দিলে মূলত দুটি বড় কারণ সামনে আসে। আগের বছরগুলোতে বহু মানুষ প্রবেশযোগ্য ভিসা নিয়ে হজ মৌসুমে সৌদি গিয়ে অবৈধভাবে হজে অংশ নেন। এতে অতিরিক্ত ভিড় এবং নিরাপত্তাজনিত সমস্যা দেখা দেয়। আয়োজক দেশ হিসেবে সৌদি আরবের এ ধরনের ঝামেলা এড়ানোর চেষ্টা করাই স্বাভাবিক। গেল বছর তো সৌদি সরকার ভিজিট ভিসাধারী ও পর্যটকদের হজ পালন এবং মক্কায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করে। হজ মৌসুমে বিদেশি নাগরিক নিয়ন্ত্রণের আরেকটি কারণ ব্যবসা ও পারিবারিক ভিসা ব্যবহার করে অনেকেই সৌদিতে অননুমোদিতভাবে কাজ করতে থাকেন, যা দেশটির শ্রমবাজারে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।

সৌদি কেন, দুনিয়ার যে কোনো দেশই এ বিশৃঙ্খলা রুখতে যা দরকার, তা-ই করবে। এর বিপরীতে হজ মৌসুমে এক্সট্রা অ্যাকটিভিটিসে বাংলাদেশের মহলবিশেষের ক্রিয়াকর্ম বেশি। হজকে কেন্দ্র করে একটি শ্রেণি থাকে আল্লাহর এই মেহমানদের খেদমত করে পুণ্য অর্জন করার আশায়। আরেকটি সিন্ডিকেট থাকে এই পুণ্যযাত্রীদের সরলতা কাজে লাগিয়ে অল্প সময়েই বিপুল অর্থ উপার্জনের নেশায়। এমন সংবাদও বেরিয়েছে, কেউ কেউ ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ছুটে যায় মক্কা-মদিনায়। পবিত্র এই দুই নগরীতে চালায় ভিক্ষাবাণিজ্য। আবার কেউ কেউ মানব পাচারের মচ্ছবে মেতে ওঠে। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ‘হাব’কেন্দ্রিকও গড়ে ওঠে প্রতারকদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। কোটি টাকা কামিয়ে ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’ হওয়ার রঙিন স্বপ্নে বিভোর থাকে এরা। একটি সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন হজযাত্রীরা। ভিসা প্রক্রিয়া, বিমানের টিকিট, হাজিদের থাকার ব্যবস্থা (বারকোড) সবই এ সিন্ডিকেটের হাতে। তাদের মনোপলিতে প্রায় প্রতি বছরই গণমাধ্যমে ভেসে আসে হজযাত্রীদের কান্নার আওয়াজ। মুসলিমপ্রধান দেশ মালয়েশিয়ার হজ ব্যবস্থাপনা খুবই চমৎকার। হজের ব্যয় ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রমও খুব সহজ, স্বচ্ছ। সেখানে এত হজ এজেন্সি নেই। হিন্দুপ্রধান দেশ ভারত সরকার হজে প্রচুর ভর্তুকি দেয়। ভর্তুকি না হোক, হজ নিয়ে ইতিবাচক কিছু করার রয়েছে সরকারের। তাই বলে ব্যবসাকে মুখ্য করা কাম্য নয়। ব্যবসা করার অনেক রাস্তা আছে, সবকিছুতে ব্যবসা চলে না।

ক্ষমতায় এখন রাজনৈতিক সরকার নয়। এ সরকারের পক্ষে যা করা সম্ভব রাজনৈতিক সরকারগুলোর পক্ষে তা সম্ভব নয়। বিগত আমলে মন্ত্রিপর্যায়ে পর্যন্ত হজ নিয়ে অতি কারবারের কমিশনের টাকার ভাগ যেত বলে অভিযোগ আছে। শুধু হজ নয়, ওমরাহ হজের টিকিট নিয়ে পেঁয়াজ, রসুনের মতো সিন্ডিকেটভিত্তিক ব্যবসার কথাও শোনা গেছে। এ সরকারের আমলে শোনা কথায় কান না পড়ুক। কানেও এ ধরনের কথা না আসুক। ৩১ মে পর্যন্ত চলবে হজ ফ্লাইট। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৫ অথবা ৬ জুনে হবে পবিত্র হজ। আল্লাহর ঘরের মেহমান হওয়ার অপেক্ষায় লাব্বাইক ধ্বনিতে আশকোনা হজ ক্যাম্পে নিজেদের ঝালাই করে নিচ্ছেন মুসল্লিরা। দেশ থেকে যাত্রার সময়েই সেলাইবিহীন সাদা কাপড়ের ইহরাম বেঁধেছেন অনেকে। ইহরাম বাঁধার নির্দিষ্ট স্থান সৌদি আরবের ইয়া লাম লাম কিংবা জুলহুলাইফা হলেও এ শুভ্রতার মিছিলে নিজেকে আবৃত করেছেন সৃষ্টিকর্তার মহব্বতে। এমন একটা সময়ে হজযাত্রীদের ভিসা জটিলতা বা অনিশ্চয়তায় ভোগা কাম্য নয়।

লেখক: সাংবাদিক-কলামিস্ট;

ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মঙ্গলবার কখন দেশে পৌঁছাবেন খালেদা জিয়া

এসিল্যান্ড না থাকায় ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ

প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ভেষজ শাক কাঁটানটে

‘প্যালেস্টাইন-২’ দিয়েই ইসরায়েলে হামলা চালাল ইয়েমেন

দুপুরের মধ্যে ঢাকায় বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস 

এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ বিকেলে

মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিন : বাবুল

পরমাণু আলোচনা নিয়ে খামেনির উপদেষ্টার কড়া বার্তা

গাজায় ক্ষুধায় কাঁদছে মানুষ, মৃত্যু ৫৭

০৪ মে : টিভিতে আজকের খেলা

১০

০৪ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১১

দক্ষিণ লেবাননে একাধিক ইসরায়েলি ড্রোন হামলা

১২

বখাটেদের ভয়ে দুই ছাত্রীর মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ

১৩

পঞ্চগড়ে মাদকসহ মা-ছেলে গ্রেপ্তার

১৪

ঢাকার যেসব এলাকায় আজ মার্কেট বন্ধ

১৫

০৪ মে : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৬

পেকুয়ায় ধারের টাকা ফেরত চাওয়ায় ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত

১৭

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতা বহিষ্কার

১৮

রাজনৈতিক তৎপরতা ছাড়া শ্রমিকের ভাগ্যোন্নয়ন সম্ভব নয় : ফজলুল হক

১৯

জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া রাখাইনে করিডোর নয়: বিএসপি

২০
X