কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সম্পাদকীয়

সংশয়

সংশয়

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় স্থাপনের জন্য সংস্থাটির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। শুক্রবার নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ইউএনএইচআরসি)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ও বাংলাদেশ সরকার চলতি সপ্তাহে তিন বছরের জন্য সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি মিশন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ মিশনের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশে মানবাধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়নে সহায়তা দেওয়া। এই সমঝোতার মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন সেই ১৬টি দেশের তালিকায় যুক্ত হলো, যেখানে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল পূর্ণাঙ্গ ম্যান্ডেট নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, শাদ, কলম্বিয়া, গুয়েতেমালা, গিনি, হন্ডুরাস, লাইবেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মেক্সিকো, নাইজার, ফিলিস্তিন ও সিরিয়ার মতো দেশে এ ধরনের অফিস চালু রয়েছে।

খবরে প্রকাশ, জাতিসংঘে বাংলাদেশের পক্ষে মানবাধিকার ইস্যুতে কাজ করেছেন এমন কয়েকজন কূটনীতিক এ মিশন চালুর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, এখন যে দেশগুলোয় জাতিসংঘের এ ধরনের মিশন আছে, বাংলাদেশ নিশ্চয়ই ওই তালিকায় যুক্ত হওয়ার মতো নয়। সবচেয়ে বড় কথা, শেষ পর্যন্ত মিশনের কাজের পরিধি আর প্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। বিশেষ করে শুরুতে এক বছর মেয়াদি কারিগরি মিশনের প্রস্তাব দেয়। পরে তারা দরকষাকষি করে তা তিন বছরে নিয়েছে। ফলে এ মিশনের কাজের ধারা অবারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।

ওএইচসিএইচআর হলো জাতিসংঘ সচিবালয়ের অধীন একটি সংস্থা, যা আন্তর্জাতিক আইন ও ১৯৪৮ সালে ঘোষিত মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে প্রতিশ্রুত মানবাধিকারের উন্নয়ন ও রক্ষণের উদ্দেশ্যে গঠিত হয়। ১৯৯৩ সালে বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ কার্যালয় সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত মানবাধিকার পরিষদের সচিবালয় হিসেবে কাজ করে।

ওএইচসিএইচআরের উদ্দেশ্য হলো, বিশ্ব সম্প্রদায়ের ইচ্ছা ও সংকল্পে বাস্তব রূপদানের মাধ্যমে জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত সব মানবাধিকারের সর্বজনীন সুবিধাভোগের প্রসার। মানবাধিকার ইস্যুতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকার চর্চার বিষয়ে গুরুত্বারোপ। মানবাধিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রসার। জাতিসংঘ পদ্ধতিতে মানবাধিকারের অনুপ্রাণন এবং সমন্বয়সাধন। সর্বজনীন অনুমোদনের প্রচার এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের বাস্তবায়ন। নতুন রীতিনীতির স্বাভাবিকায়নে সহযোগিতা। মানবাধিকার সংগঠন ও সন্ধি পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর সমর্থন। মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনে প্রতিক্রিয়া জানানো। মানবাধিকার লঙ্ঘনে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। মাঠপর্যায়ে মানবাধিকার কার্যক্রম ও কর্মসূচি গ্রহণ। মানবাধিকারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শিক্ষা, তথ্য উপদেশমূলক সেবা ও কারিগরি শিক্ষা প্রদান।

বাংলাদেশে মিশন খোলা প্রসঙ্গে হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, এটি তাদের সুপারিশ বাস্তবায়নে সহায়ক হবে এবং সরকার, নাগরিক সমাজ ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করবে।

আমরা মনে করি, মানবাধিকারের নানা ক্ষেত্রে আমাদের সমস্যা অতীতে ছিল, এখনো আছে। সরকার কীভাবে এ মিশনকে কাজে লাগাবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে ১৩৩ ভূমিকম্প

‘সুখবর’ পেলেন যুবদল নেতা

৭০ বছর বয়সে কোরআনের হাফেজ হলেন বৃদ্ধা

ফেনীতে খালেদা জিয়ার পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ

৩ মাসের নাতিকে পুকুরে ছুড়ে ফেললেন দাদি!

কবর থেকে মায়ের মরদেহ তুলে ঘরে রাখলেন ছেলে

শীতের পিঠার ভ্রাম্যমাণ দোকানে রমরমা ব্যবসা

রাতে বাড়ি থেকে বের হন জাকির, সকালে মিলল মরদেহ

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ল

মীর মুগ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে ‘কালি’

১০

দুর্নীতির দায়ে ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর বরখাস্ত

১১

ইসরায়েলকে ছেড়ে সৌদিতে মজেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

১২

প্রতিদিনের যেসব অভ্যাস অজান্তেই আপনার লিভারের ক্ষতি করছে

১৩

নারীর অধিকার সুরক্ষায় নিবন্ধন আইন শক্তিশালীকরণ জরুরি

১৪

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলো, কারণ কী

১৫

প্লট দুর্নীতি / হাসিনা, রেহানা ও টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলার রায় ১ ডিসেম্বর

১৬

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি চুক্তি নিয়ে রায় ৪ ডিসেম্বর

১৭

কঠোর গোপনীয়তায় কারাগার থেকে সরানো হলো স্ত্রীসহ সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে

১৮

যমুনা অভিমুখে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীরা, পুলিশের বাধা

১৯

ছেলে-মেয়েকে গলা কেটে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা

২০
X